- এই মুহূর্তে
- এপ্রিল ২৫, ২০২২
রুশ গোলার পরোয়া না করেই, কিয়েভে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক মার্কিন বিদেশ ও প্রতিরক্ষা সচিবের
রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামার নামই নিচ্ছে না। যত দিন যাচ্ছে ততই ভয়হ্কর আকার ধারণ করছে। ইউক্রেনের একাধিক শহরে রুশ বাহিনী গোলবর্ষণ করছে। অআহত হচ্ছেন কত শত মানুষ, ঘরবাড়ি ছেড়ে প্রাণে বাঁচতে তাঁরা পাড়ি দিচ্ছেন ইউরোপের অন্যান্য দেশে। বাড়ছে উদ্বাস্তুর সংখ্যা । গতকাল রবিবার অর্থাৎ ইস্টারেও রক্তাক্ত হল মারিওপোল । শহরটিতে আছড়ে পড়ে একের পর এক রুশ গোলা। মারিওপোলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর শেষ ঘাঁটি আজভস্টাল কারখানায় আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। সেখানেই হামলা চালায় রাশিয়ার সেনাবাহিনী ।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিকাইলো পোডোলিয়াক বলেছেন, ‘রাশিয়া যাই বলুক, ওরা আজভস্টল ইস্পাত কারখানাটিকে সম্পূর্ণ ভাবে ঘিরে রেখে টানা গোলাগুলি চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার বোমার হাত থেকে বাঁচতে কারখানার নীচে বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলেন সেনাবাহিনী ও সাধারণ মানুষ। তাঁরা এখনও আটকে রয়েছেন। রুশ বাহিনী তাঁদের উপরে হামলা চালিয়েই যাচ্ছে। কে যেন নির্দেশ দিয়েছিল, হামলা না চালাতে…! ‘
উল্লেখ্য, সদ্য ইউক্রেনকে স্বাধীন বলে ঘোষণা করেছেণ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারপরও আজভস্টাল কারখানায় হামলা না চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই নির্দেশ যে ফাঁকা বুলি মাত্র তা স্পষ্ট। বলে রাখা ভাল, ভৌগোলিক ও কৌশলগত দিক থেকে রাশিয়ার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিওপোল। কারণ, রাশিয়া অধিকৃত ক্রাইমিয়ার সঙ্গে রুশপন্থীদের কব্জায় থাকা ডোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক এলাকাকে (দোনবাস অঞ্চল) যুক্ত করতে চায় মস্কো। এই যোগসাধনের জন্য প্রয়োজন বন্দর শহর মারিওপোলে দখল কায়েম করা। সেই কারণেই শহরটি রাশিয়ার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ।
এরকম অবস্থায় ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াল আমেরিকা । মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড জে অস্টিন গতকালই ইউক্রনে পৌঁছেছেন । গোলাবর্ষণের আশঙ্কার মাঝেও রাজধানী কিয়েভে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনায় বসেন তাঁরা।
জেলেনস্কির উপদেষ্টা আলেক্সি আরেস্তোভিচ এক সাক্ষাৎকারে জানান, স্থানীয় সময় মতে গতকাল অর্থাৎ রবিবার ব্লিঙ্কেন ও অস্টিনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন জেলেনস্কি। অবশ্য এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য করেনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সোশ্যাল মিডিয়ায় আরেস্তোভিচের দেওয়া বয়ান তুলে ধরে বিবিসি জানিয়েছে, মার্কিন বিদেশ সচিব কিয়েভে পৌঁছেছেন এবং জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত হলে যুদ্ধ শুরুর ঠিক দুই মাসের মাথায় প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সফর করলেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই শীর্ষস্থানীয় আমলা। দুই মার্কিন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকের আলোচ্যসূচি নিয়ে এর আগে জেলেনস্কি বলেছিলেন, ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র সহায়তা প্রদান ও অস্ত্র সরবরাহের সময়সীমার বিষয়টি বৈঠকে তুলে ধরবেন তিনি।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কিয়েভে গিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এছাড়া, ইউরোপের অন্য নেতারাও কিয়েভ সফর করেছেন। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু ইউক্রেনে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র ও আর্থিক সহযোগিতা পাঠানো আমেরিকা এত দিন কিয়েভে কোনও শীর্ষ প্রতিনিধি পাঠায়নি। বলে রাখা ভাল, সম্প্রতি ইউক্রেনে ৮০ কোটি ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছেণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ নিয়ে রাশিয়ার হামলার পর কিয়েভকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সহায়তা ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে।
❤ Support Us