- ক | বি | তা
- জানুয়ারি ১, ২০২২
গুচ্ছ কবিতা

ঈশ্বরী
আশিষ-ভঙ্গী বলতে মনে পড়ে
শঙ্খচিল শাঁখা ঘেরা মণিবন্ধটি
পলার আঙটি পরা অনামিকা
আর করতলে
আমার শৈশব-কৈশোর পালন-পোষণের পটু আলপনা
চোখ ভাবতে দেখতে পাই
স্বচ্ছ টলটলে জলাশয়ে
পুস্পিত
স্নেহময় একজোড়া আঁখিপদ্ম
যা আজও আমার পিঠের মাঝে
নিবদ্ধ হয়ে রয়েছে
কপাল বলতে ভাবি
সিঁথি-কাটা রজত-কজ্জল মেঘের মাঝে
এক ফালি উজ্জ্বল চওড়া আকাশ
যেখানে রক্তিম বৃত্তাকার সূর্যদেব শোভা পান
জঠরধারিণী আমার
সমস্ত পৃথিবী ছেয়ে রয়েছেন।
বসত কোথা?
হেঁটে চলেছি, হেঁটে চলেছি, হেঁটে চলেছি
যেন কতকাল ধরে
পেছনে তাড়া করছে অসুখ, বে-রোজগার, খিদের অসভ্য খোঁচা
যা ক্রমাগত বাড়তে থাকছে।
এতটাই বেড়ে যাচ্ছে
যে ছ’বছরের মেয়েটাকে দুটো থাপ্পড় মেরেও
ঘ্যানঘ্যান থামানো যায়না আর।
তাই কাঁধে তুলে নিয়ে
হেঁটে চলেছি, হেঁটে চলেছি, হেঁটে চলেছি
পাশে পাশে পা চালায় রুক্মিণী
আর ওর পেটে একটা অল্প নড়াচড়া
সে চলে, চলে, হাঁপায়, আবার বিড়বিড় করে বলে
‘ওখানেতে দিঘীভরা জল, গরমে গাছের হাওয়া
আমাদের ভাঙা ঘরে দুটো রুটি হলেই
পেটেরটা বিয়োতে পারব’
কাঁধে ঝিমিয়ে পড়ছে কচি ভার
হাতে নেতিয়ে আসতে চায় নরম হাত
তবু বস্তির টিনের চালা, স্নান-পায়খানার লাইন
আর পুলিশের লাঠি এড়িয়ে
আমরা বেঁচে থাকার স্বপ্ন লক্ষ করে
হেঁটে চলেছি, হেঁটে চলেছি, হেঁটে চলেছি।
♦—♦
❤ Support Us