শিবভোলার দেশ শিবখোলা
শিবখোলা পৌঁছলে শিলিগুড়ির অত কাছের কোন জায়গা বলে মনে হয় না।যেন অন্তবিহীন দূরত্ব পেরিয়ে একান্ত রেহাই পাবার পরিসর মিলে গেছে।
আমার এবং আমাদের পরিবারের কাঁধে যাতে শনি ভর করতে না পারে, সেজন্য পাঠা বলি দিয়ে শনি পূজা করার মানতও করা হয়েছিল।
হিন্দুদের দেব-দেবীর সংখ্যা সম্ভবত হিন্দুর মোট সংখ্যার চাইতেও বেশি। বাড়িতে বারো মাসে তের-পার্বণ লেগেই থাকতো। আমার মা কম খরচে যথাসম্ভব বেশি পূজার পক্ষপাতি ছিলেন। ঐসব পুজোর প্রতি বাবার উৎসাহ ছিল না, তিনি মাকে মাঝে মাঝে তাঁর পূজা প্রীতির জন্য ব্যঙ্গ-বিদ্রুপও করতেন, কিন্তু খুব বেশি খেপাতে সাহস পেতেন না। মায়ের ধারণা ছিল আমাদের পরিবারের উপর অপদেবতার কুদৃষ্টি পড়েছে। তার থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্যই তিনি নানা দেব-দেবীর পূজা করতেন। একবার তিনি একটি অদ্ভুত ধরনের পূজার আয়োজন করেছিলেন, পূজাটির নাম বাস্তুপূজা। বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ হওয়া এবং জমির ফসল নষ্ট হওয়ার ভয়েই এই পূজার আয়োজন করা হয়। আমাদের নদীতীরবর্তী ঘুনার একটি উঁচু জমিতে খোলা আকাশের নিচে ঐ পূজার আয়োজন করা হয়েছিল। আমরা বাড়ি থেকে পূজার সরঞ্জামাদি বহন করে পূজাস্থলে নিয়ে গিয়েছিলাম। পূজার প্রসাদ ছাড়াও ওখানে বনভোজনের মতো দুপুরের রান্না হয়েছিল। কলার পাত বিছিয়ে আমরা ভাইবোনেরা ধান ক্ষেতের আলের উপর বসে দুপুরের আহার করেছিলাম। ঐ পূজা দেখার জন্য আমাদের গ্রামের লোকেরা দল বেঁধে এসেছিল। ঐ রকম পুজা আমি আমাদের গ্রামে আর কাউকে কখনো করতে দেখিনি।
পুজোর ব্যাপারে আমিই ছিলাম মায়ের প্রধান ভরসা। পুজার প্রয়োজনীয় উপচার সংগ্রহের ক্ষেত্রে আমার বিশেষ পারদর্শিতা ছিল। আমি বারুই-পাড়ার পানের বরোজ থেকে পান, নদীর পাড়ের জঙ্গল থেকে খুঁজে খুঁজে কেয়া ফুল, গণেশের বাড়ির বেল গাছ থেকে বেলপাতার ডাল, আম গাছ থেকে পোকার কাটেনি এমন পঞ্চপত্র বিশিষ্ট আমের ডোগ সংগ্রহ করে আনতাম। আমার মা হুতোমের পূজা পর্যন্ত করতেন। বাবা হাসতেন। আমারও হাসি পেতো, ভাবতাম তাহলে বিড়াল কুকুরই বা বাদ যাচ্ছে কেন? কিন্তু মুখ ফুটে বলতাম না। ঐ সব পুজার আনন্দদায়ক দিকটা আমার বেশ ভালই লাগতো।
এত পূজা-অর্চনা করার পরও আমার মন মাঝে মাঝে বিদ্রোহী হয়ে উঠতো। দেব-দেবীদের ক্ষমতা সম্পর্কে মা যেমনটি বলতেন, ব্রতকথায় বর্ণিত সেই সব কাহিনীগুলো নিছক গল্প-গাথা বলেই আমার মনে হতো। মনসা দেবীর চাইতে চাঁদ সওদাগরের ক্ষমতাকেই মনে হতো অধিকতর বাস্তব সম্মত। অধীনতা স্বীকার করে দেবীর কৃপা লাভের যে শিক্ষাটা প্রচার করেছিলেন আমার মন তা মেনে নিতে পারছিল না। মা-কালীর রুদ্র ভিষনামূর্তিটিই শুধু আমার মনে কিছুটা ভীতির সঞ্চার করতে পেরেছিল। স্কুলে যাওয়া আসার পথে বারঘর এবং গড়মা গ্রামে পথের পাশেই দুটো কালিবাড়ি পড়তো- আমি অভ্যাসবশত দুই কালীকেই প্রণাম করতাম। পাশাপাশি আমার মনের ভিতর একটা বিদ্রোহও দানা বাঁধছিল। একদিন তার কিঞ্চিৎ প্রকাশ ঘটলো। আমরা দলবেঁধে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছি- ফেরার পথে গড়মা এবং বারঘর গ্রামের মধ্যবর্তী পুলের কাছে এসে শুনলাম পুলের সংলগ্ন বড়ই গাছের তলায় কে বা কারা শনি পুজার শেষে শনি ঠাকুর কে বসিয়ে রেখে গেছে। সুতরাং শনি ঠাকুরের কোপদৃষ্টি এড়িয়ে, পথচারীরা সবাই একটু ঘুর পথে যাচ্ছে আসছে। ওটাই নিয়ম। শনি ঠাকুরের চরিত্র হলো, যে তাকে প্রথম দর্শন করবে তার কাঁধেই তিনি সাওয়ার হবেন। পুজো ছাড়া নামবেন না। এই ক্রুদ্ধ দেবতাকে নিজের কাঁধ থেকে অপরের কাঁধে পাচার করার জন্য তখন পুজোর বন্দোবস্ত করতে হতো। পুলের কাছে এসে সবাই থমকে দাঁড়ালো এবং পুলের নিচ দিয়ে একটু ঘুরপথে, শনির দৃষ্টি এড়িয়ে চলতে শুরু করলো। আমি বললাম: ‘না, আমি এ পথেই যাবো।’
সবাই চিৎকার করে আমাকে বাধা দিল। আমি বললাম: ‘দেখাই যাক না কি হয়।’ আমি এগিয়ে গেলাম বড়ই গাছের তলায় বসে থাকা শনি ঠাকুরের দিকে। সঙ্গীরা সবাই ভয়ে দৌড়াচ্ছে। চারপাশে তাকিয়ে দেখি কেউ নেই, আমি একা। আমার সামনে মাটির পুতুলের মতো শনির বিগ্রহ; কপালে লাল সিঁদুরের টিপ, পায়ের উপর ছিটানো গাঁদা ফুলের কয়েকটি হলুদ পাপড়ি। বেচারা শনি ঠাকুরের জন্য আমার বেশ মায়া হলো। মনে হলো দেবকুলে ইনিই হচ্ছেন সবচেয়ে নিঃসঙ্গ ঠাকুর। তাঁকে পথের পাশে একা ফেলে যেতে আমার মন চাইলো না। আমি তাঁকে পকেটে পুরে নিলাম।
মজার কান্ডটা শুরু হল তারপর থেকে। আমি বাড়ির দিকে এগুচ্ছি, নিরাপদ দূরত্ব রেখে আমার সঙ্গীরা সবাই আগে আগে দৌড়াচ্ছে। আমি বাড়িতে পৌঁছাবার আগেই ওরা পৌঁছে গেল এবং ওদের মুখে খবর পেয়ে আমার মা, কাকিমা এবং বোনরা বাড়ি ছেড়ে ছুটে এসে স্কুলের সামনে মাঠটিতে জড় হয়েছে। তাদের এই অগ্রবর্তী অবস্থান গ্রহণের উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাকে বাধা দেয়া, যাতে শনি ঠাকুরকে নিয়ে আমি বাড়ির সীমানার ভিতরে ঢুকে পড়তে না পারি। আমি একটু মজা করার জন্যই কাজটা করেছিলাম, কিন্তু তার ফলটা যে এমন ভয়াবহ হয়ে উঠবে, তা আমার ধারণার মধ্যে একেবারেই আসেনি। শনি ঠাকুর কে বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যাবার ইচ্ছেও আমার ছিল না। আমি ওনাকে বাড়ির সামনের পুকুরে বিসর্জন দেবার কথাই ভেবেছিলাম। ঐ পুকুরে কলাগাছের ভেলায় চড়িয়ে আমরা মনসাদেবী কে বিসর্জন দিতাম। ভেবেছিলাম এবার মনসাদেবীর সঙ্গে শনি ঠাকুরের দেখা করিয়ে দেবো, কিন্তু হলো না। স্কুলের কাছাকাছি পৌছতেই আমি বাধাপ্রাপ্ত হলাম– মা মিনতি করে বললেন:
‘যা বাবা, ওটাকে যেখান থেকে এনেছিস ওখানেই রেখে আয়, আমাদের বিপদে ফেলিস না।’
শনি ঠাকুর তখন আমার পকেটে। একটু ভয় দেখানোর জন্যেই বললাম: ‘তোমরা দেখবে না?’
সঙ্গে সঙ্গে সমবেত সবার চোখই বন্ধ হয়ে গেলো। আমার মা এবং কাকিমা সমস্বরে বলে উঠলেন:
‘না রে বাপু আমাদের খুব অমঙ্গল হবে। তুই আমাদের রক্ষা কর– শনি বড় তেজের ঠাকুর।’
তাদের কথা শুনে মনে হচ্ছিল তারা যেন সাক্ষাৎ শনি ঠাকুরের সঙ্গেই কথা বলছে। কিন্তু আমি কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না, যাকে আমি এতো আদর করে পকেটে পুরে, তিনি আমাদের প্রতি কি কারণে ক্ষুব্ধ হতে পারেন। এসব কথা বুঝিয়ে লাভ নেই– অগত্যা আমি আমার মত পাল্টা বললাম:
‘ঠিক আছে, আমি শনি ঠাকুর কে বারঘরের খালের জলে বিসর্জন দিয়ে আসছি।’
আমার সুমতি হয়েছে দেখে সবাই স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো। আমি বারঘরের পুলের উপর ফিরে গিয়ে, শনি ঠাকুর কে শেষবারের মতো একটু আদর করে খালের জলে ডুবিয়ে দিলাম।
বাড়ি ফেরার পর কলের জলে স্নান করিয়ে আমাকে ঘরে তোলা হয়েছিল। আমার এবং আমাদের পরিবারের কাঁধে যাতে শনি ভর করতে না পারে, সেজন্য পাঠা বলি দিয়ে শনি পূজা করার মানতও করা হয়েছিল। ঐ ঘটনার পর থেকে সবাই আমাকে খুব সমীহ করে চলতো, সবাই আশঙ্কা করত অচিরেই আমার খারাপ কিছু একটা হয়ে যাবে। কিন্তু খারাপ কিছুই হলো না, বরং শনির কৃপায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করে আমি নবম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়ে গেলাম।
আমাদের বাড়িতে দুর্গাপূজা হতো না। অনেক আগে হতো। পরে সেই পুজো বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যাওয়ার পেছনে একটা গল্প আছে। আমাদের পূর্বপুরুষদের একজনকে দুর্গাপুজো চলতে থাকা অবস্থায় নাকি বাঘে খেয়েছিল, ঐ ঘটনার পর সবাই দুর্গার দিকে ক্ষেপে যায়; তার পুজো বন্ধ করে দেয়া হয়। যে দুর্গা তার পূজারীর বিরুদ্ধে বাঘকে লেলিয়ে দেয়, সেই দেবীর পুজো করে লাভ কী? আমাদের আশপাশের গ্রামের যেসব বাড়িতে দুর্গাপূজা হতো, তাদের বক্তব্য অবশ্য ছিল ভিন্ন। তারা ঐ বাঘে-খাওয়ার গল্পটিকে আমল দিতেন না। তারা বলতেন, গুণরা হচ্ছে কিরপিন, হঠাৎ কৃপণ। দুর্গাপূজার প্রচুর খরচ এড়ানোর জন্যই এই গল্পের অবতারণা। আমিও পরেরটাই বিশ্বাস করতাম। আমার বাবা কাকা দূর্গাপূজার ব্যাপারে খুব উৎসাহী ছিলেন না। বাবার কাছে শুনেছি, আমার ঠাকুরদা কেশব সেনের পাল্লায় পড়ে ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। পরে বারঘর এবং আন্দাদিয়ার প্রতাপশালী ব্রাহ্মণদের চাপে পড়ে প্রায়শ্চিত্ত করে পুনরায় হিন্দু হয়েছিলেন। আমার বাবা কাকাদের মধ্যে তার রেশ থেকে গিয়েছিল। তাতে খরচও কমতো, কিন্তু আমরা ছোটরা যে কোনো পুজো নিয়ে মেতে থাকতে পছন্দ করতাম। আমাদের বাড়িতে শুধু একটা পুজোই একটু জাঁকজমকের সঙ্গে হতো; সেটা হচ্ছে সরস্বতী পুজো। আমার নিজের মায়ের নাম ছিল বীণাপাণি। সরস্বতীর এক নাম বীণাপাণি, অর্থাৎ যার হাতে বীণা থাকে। এই পুজোর প্রতি বাবারও আগ্রহ ছিল। যারা মূর্তি গড়ে তাদের বলা হয় আচার্য ব্রাহ্মণ। আমরা তাদের বাড়ি থেকে মূর্তি কিনে নিয়ে আসতাম। কখনো কখনো একটু বেশি পয়সা সংগ্রহ করতে পারলে নেত্রকোণায় ছুটে যেতাম আধুনিকা-দেবীর সন্ধানে।
সরস্বতী পুজোর পূর্বে আমাদের কুল খাওয়া ছিল নিষিদ্ধ। কেউ যদি লোভ সামলাতে না পেরে কুল খেতো তাহলে তার ভবিষ্যৎ ছিল একেবারে ঝরঝরে। পরীক্ষায় নির্ঘাত ফেল। আমরা এটা বিশ্বাস করতাম। এই সরস্বতী দেবীকে আমাদের মুসলমান বন্ধুরাও রীতিমত সমীহ করে চলতো। আমরা খাগের কলম দুধজলমেশানো কালিতে চুবিয়ে নিয়ে বেলপাতায় স্বরস্বতীর নাম লিখতাম– তারপর সেই পাতাগুলি বিভিন্ন পাঠ্যবইয়ের মধ্যে ভরে রাখতাম, যাতে সংশ্লিষ্ট গ্রন্থটি সহজেই আয়ত্তে আসে। অঞ্জলি দেওয়ার সময় দেবীর উদ্দেশ্যে আমাদের একটা মন্ত্র বলতে হতো। সেই মন্ত্রটি ছিল অনুপ্রাসধ্বানিপূর্ণ, অন্তমিল সমৃদ্ধ। আমার বেশ ভালো লাগতো। মন্ত্রটি হচ্ছে:
‘জয় জয় দেবী চরাচর সারে
কুচযুগ শোভিত মুক্তাহারে।
বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে
ভগবতী দেবী ও নমস্তে।’লক্ষ্ণী এবং সরস্বতী–এরা দুর্গার দুই মেয়ে। লক্ষ্ণী ধনের দেবী এবং সরস্বতী হচ্ছে লেখাপড়া, শিল্পসাহিত্য ইত্যাদির। এ-দুয়ের মধ্যে বীণাপাণির প্রতিই ছিল আমার পক্ষপাত। আর আমার মায়ের সঙ্গে নামের মিল থাকার কারণে সরস্বতী পুজোটা আমার জীবনে এক ভিন্ন স্বাদ নিয়ে আসতো।
এই প্রসঙ্গে একটি বেদনাদায়ক স্মৃতির কথা না বলেই নয়। একবার আমাদের বন্ধুদের মধ্যে এই পুজো নিয়ে প্রতিযোগিতা হয়েছিল। কাদের প্রতিমা কত সুন্দর হয়। আমরা বিভিন্ন বাড়িতে ঘুরে ঘুরে চাঁদা তুললাম। এটাকে বলা হয় পুজোর মাগন। ব্যাপারটা ভিক্ষামাগার মতই। তাতে বেশ চাল পাওয়া গেল। বিক্রি করে অনেক টাকা হল। ঐ টাকা নিয়ে আমরা চলে গেলাম ময়মনসিং শহরে। ওখানে একজন মুসলমান আচার্য ছিলেন, নাম রশিদ। মহারাজা রোডে ছিল তার ওয়ার্কশপ। দুর্গা মূর্তি বানিয়ে তিনি তখন খুব নাম করেছিলেন। হিন্দুরা তার মূর্তি তৈরি নিয়ে প্রশ্ন তুলে নি– মুসলমানরাও কিছু বলে নি। তার সঙ্গে আলাপ করে আমার খুব ভালো লাগলো। তিনি আমাকে একটি চমৎকার সরস্বতী বানিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন, যাতে প্রতিযোগিতায় আমরা জয়ী হতে পারি।
পুজোর আগের দিন রাতের ট্রেনে আমরা যখন রশিদের সরস্বতী নিয়ে বারহাট্টা স্টেশনে নামলাম– হ্যাজাক লাইটের আলোতে বারহাট্টা স্টেশনের পুরো চেহারাটাই গেল পাল্টে। সবাই বললো, এমন চমৎকার সরস্বতী তারা পূর্বে কখনোই দেখেনি। রশিদের নাম এবং দাম দুইই গেল বেড়ে। এই চমৎকার মূর্তিটি একজন মুসলমানের তৈরি জেনে স্থানীয় মুসলমানদের আগ্রহও যুক্ত হলো। হিন্দু-মুসলমান মিলে বহু-লোক দূর থেকে আমাদের ঐ প্রতিমা দর্শন করতে এলো। ফলে উদ্দৃত্ত প্রসাদের চাহিদা মেটাতে আমরা আবারও চালডাল চাঁদা তুলে খিচুড়ি বানাতে বাধ্য হলাম।
হিন্দুদের ছুতমার্গের যেমন শেষ নেই, তাদের গ্রহণ ক্ষমতাও তেমনি অসীম। পুজোমণ্ডপে মুসলমানের পদ্মস্পর্শে যে পুজো নষ্ট হয়, সেই দেবীই যদি হন কোনো মুসলমানের তৈরি, তাতে তাদের বাধে না।
রশিদ ছিলেন জাতপাতের ঊর্ধ্বে একজন সত্তিকারের শিল্পী। ইউরোপে জন্ম হলে তিনি হতেন মাইকেল এঞ্জেলো বারদার মতো। এখানে সেই পরিবেশ ছিল না। অকৃতদার, চির-নিঃসঙ্গ রশিদ ছিলেন এক মূর্তিমান বিদ্রোহ। এই বিদ্রোহের শাস্তিও তিনি পেয়েছিলেন, পুরস্কারের পরিবর্তে। ১৯৭১-এ পাকবাহিনী তাকে মহারাজ রোডের ঐ বাড়িতেই গুলি করে হত্যা করে। তার নির্মিত শিল্পকর্ম সমূহের ভিতরেই তিনি শেষ-নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
শিবখোলা পৌঁছলে শিলিগুড়ির অত কাছের কোন জায়গা বলে মনে হয় না।যেন অন্তবিহীন দূরত্ব পেরিয়ে একান্ত রেহাই পাবার পরিসর মিলে গেছে।
সৌরেনির উঁচু শিখর থেকে এক দিকে কার্শিয়াং আর উত্তরবঙ্গের সমতল দেখা যায়। অন্য প্রান্তে মাথা তুলে থাকে নেপালের শৈলমালা, বিশেষ করে অন্তুদারার পরিচিত চূড়া দেখা যায়।
মিরিক নামটি এসেছে লেপচা ভাষার “মির-ইওক” শব্দ থেকে, যার অর্থ আগুনে পুড়ে যাওয়া জায়গা।
15:34