Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • ডিসেম্বর ৯, ২০২৩

ধর্ণামঞ্চে হঠাৎ কুণাল । প্রতিশ্রুতি, সোমবার চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠক।বিমান বসু বললেন, মঞ্চে যখন বিজেপি, তখন আমরা যাইনি

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
ধর্ণামঞ্চে হঠাৎ কুণাল । প্রতিশ্রুতি, সোমবার চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠক।বিমান বসু বললেন, মঞ্চে যখন বিজেপি, তখন আমরা যাইনি

ধর্মতলায় গান্ধি মূর্তির সামনে এসএলএসটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ১০০০ দিনের ধর্ণামঞ্চ এক প্রকার দখল নিল বঙ্গ রাজনীতির নেতারা। তবে এরই মধ্যে আশার খবর কুণাল ঘোষ চাকরি প্রার্থীদের ৭ প্রতিনিধিদের সঙ্গে সোমবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠকের ব্যবস্থা করলেন। কেন বামেরা মঞ্চে থাকাকালীন কুণাল মঞ্চে এলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে কুণাল ঘোষ বলেন, “চাকরি প্রার্থীরা যদি ওদের কথা না শোনেন, আমার কি করার আছে?”

তবে শনিবার ১০০০ দিনে পড়ল চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন, সেই দিনই একজন মহিলা ও একজন পুরুষ চাকরি প্রার্থী প্রতিবাদে মস্তকমুণ্ডন করেন। তাঁদের দাবি ছিল, ১০০০ দিন ধরে তারা রাস্তায় বসে আন্দোলন করছেন, তাঁরা লিখিত পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউ পর্বে উত্তীর্ণ হয়েও চাকরি কেন পাচ্ছেন না? মুখ্যমন্ত্রীর এই বিষয়ে হস্তক্ষেপের দাবি করতে থাকেন চাকরি প্রার্থীরা। ইতিমধ্যে এই ধর্ণামঞ্চে এসে উপস্থিত হয় কংগ্রেস নেতা কৌস্তুভ বাগচী ও বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ, বিজেপি বিধায়ক হীরণ চট্টোপাধ্যায় ও বিজেপি যুব মোর্চা।

শনিবার বামেদের ধর্মতলার লেনিন মূর্তির পাদদেশ থেকে গান্ধি মূর্তির পাদদেশে চাকরি প্রার্থীদের ধর্ণামঞ্চে আসার পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছিল। বিমান বসু সহ বামফ্রন্ট নেতারা মিছিল নিয়ে বাম নেতৃত্ব চাকরি প্রার্থীদের ধর্ণামঞ্চে পৌঁছবার আগেই চাকরি প্রার্থীদের ধর্ণামঞ্চে হাজির হন কংগ্রেস নেতা কৌস্তুভ বাগচী ও বিজেপি বিধায়ক হীরণ চট্টোপাধ্যায়, রুদ্রনীণ ঘোষ সহ বিজেপি নেতৃত্ব। রুদ্রনীল ঘোষ চাকরি প্রার্থীদের ১০০০ দিনের এই আন্দোলনকে নিয়ে কবিতাও লিখে ফেলেন।

বিমান বসুরা বিজেপির চাকরি প্রার্থীদের ধর্ণামঞ্চ না ছাড়া পর্যন্ত বাইরে অপেক্ষা করেন। বিজেপি মঞ্চ ছাড়ার পড় বিমান বসু যখন চকরি প্রার্থীদের পক্ষে ভাষণ দিচ্ছেন তখন আচমকাই তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ চাকরি প্রার্থীদের ১০০০ দিনের ধর্ণামঞ্চে এসে হাজির হন। কুণাল আসতেই পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। বিজেপি যুব মোর্চার কর্মীরা কুণাল ঘোষকে দেখেই চোর, চোর স্লোগান তুলতে শুরু করেন, তাদের হাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ও তার নিচে চোর লেখা ছিল। কুণাল ঘোষকে ঘিরে পরিস্থিতি আচমকাই উত্তেজক হয়ে ওঠে। কুণাল ঘোষ বলেন, “আমি ১০০০ দিনে চাকরি প্রার্থীদের ধণামঞ্চে এসেছি কারণ, আমি দেখলাম একটি মেয়ে ও একটি ছেলে চাকরির দাবিতে তাঁদের মস্তকমুণ্ডন করে ফোলেছেন।” প্রসঙ্গত কুণাল ঘোষের সঙ্গে আগে যখন আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীদের কথা হয় তখন এই দুজন ছিলেন, যাঁরা শনিবার মস্তকমুণ্ডম করেন। কুণাল ঘোষ এই ধর্ণামঞ্চ থেকে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে ফোন করেন। ঠিক হয় এখান থেকে ৭জন প্রতিনিধিকে নিয়ে কুণাল ঘোষ ১১ ডিসেম্বর ব্রাত্য বসুর সঙ্গে দেখা করিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন। তবে কুণাল ঘোষের এই প্রস্তাব নিয়ে আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীরা কি সিধান্ত নেবেন সেই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চাকরি প্রার্থীদের এক প্রতিনিধি বলেন, “আমরা চাইছিলাম সরকারের কোনও প্রতিনিধি এসে আমাদের জানুয়ারি মাস থেকে চাকরিতে নিয়োগের ব্যবস্থা করে দিন। আমরা কুণাল ঘোষকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম, কুণাল ঘোষ কথা রেখেছেন। বৈঠক নিয়ে আমরা আশাবাদী।”

এদিকে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “বিজেপি মঞ্চে থাকাকালীন আমরা মঞ্চে যাইনি, অপেক্ষা করছিলাম। আমরা যখন বক্তব্য রাখছি তখন ওরা(কুণাল ঘোষ) এলো, এটা হওয়ার কথা ছিল না। চাকরির দাবিতে এক মহিলা মাথামুণ্ডন করেছেন দেখে সরকারের প্রতিনিধি এসেছেন, তাঁর লজ্জা হওয়া উচিত। বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে বলা উচিত চাকরির দাবিতে এক মহিলা মস্তকমুণ্ডন করেছেন। ”

কুণাল ঘোষ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী চান, ওনাদের চাকরি হোক। আজ ওদের আন্দোলনের ১০০০ দিন। আমি দেখলাম চাকরি প্রার্থী রাসমনী নিজের চুল বিসর্জন দিচ্ছে, আমি এটা দেখে মনে করেছি ওদের পাশে এসে ওদের সঙ্গে মানবিকতার খাতিরে দেখা করে যাই, কারণ ওরা আমার কাছে যায়। ওদের বক্তব্য আছে, আমি বলছি জটটা খুলেছে। শিক্ষামন্ত্রী সোমবার বেলা ৩টেয় ওদের সঙ্গে দেখা করবেন। আমরা, মুখ্যমন্ত্রী সবাই চান ওদের চাকরি হোক। আন্দোলন চলবে। আমরা আশাবাদী চাকরি প্রার্থীদের কথা, সরকারের কথা, আদালতের অবস্থান সবটা নিয়ে আমরা ভাবছি। আমরা চাই এটা নিয়ে রাজনীতি না করে ওরা যাতে চাকরি পাক। যদি সরকারের পক্ষ থেকে যে জটিলতা শুরু হয়েছে তার প্রায়শ্চিত্ত সরকার করবে। কেউ যদি ভাবেন স্লোগান দিয়ে চাকরি হয়ে যাবে সেটা নয়। আমায় চাকরি প্রার্থীদের পক্ষ থেকে সদিদুল্লা, রাসমনী এরা যোগাযোগ করেন। আজও আমায় আসতে বলেছিলেন। আমি আজ রাজনীতি করতে আসিনি। ওদের নিয়োগে আকশির মতো যে জট রয়েছে সেটাকে ছাড়াতে এসেছি।মমতাদি, অভিষেক চান জট খুলুক,ওরা চাকরি পাক।”

তবে কুণাল ঘোষ শেষ মুহূর্তে এসে চাকরি প্রার্থীদের ১০০০ দিনের আন্দোলনের পাশে দাঁড়াতে আসা বাম, বিজেপিকে এক কথায় বোল্ড আউট করে দিলেন। কুণাল ঘোষ স্পষ্ট করে জানিয়েও দিলেন, “১০০০ দিনে যে চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন চলছে, আন্দোলনের ১০০০ তম দিনে ওদের ধর্ণামঞ্চে আমায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ওদের সঙ্গে আমার ১২ মাসের সম্পর্ক। পাপ যদি কেই করে থাকে সরকার প্রায়শ্চিত্ত করবে। আমি সরকারি লোক নই, আমি জট ছাড়াতে চাইছি।”


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!