- এই মুহূর্তে দে । শ
- এপ্রিল ১৯, ২০২৩
অমিত, ফিরহাদের পরপর সফরেও ফিরলো না আস্থা। লাভপুরে তৃণমূল, বিজেপি থেকে সিপিএম-এ ৫০০ জনের যোগদান
বীরভূমে দলবদলের উলটপুরাণ। সাম্প্রতিক কালে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দল নেতা কর্মীদের যোগদানের যে ধারা তৈরি করেছিলেন, তার বিপরীত পথে হাঁটল লাভপুর। হাতিয়া গ্রামে ৫০০ জন তৃণ ও বিজেপি কর্মী সিপিএমে যোগ দিলেন । বিধানসভায় দলীয় প্রার্থীহীন একটি পার্টিতে এত মানুষের একসঙ্গে যোগদান ‘পরিবর্তনের আবার পরিবর্তন’-কিনা তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।
বুধবার লাভপুর গ্রামে ১৩০ পরিবারের প্রায় পাঁচশ জন মানুষ লাল ঝাণ্ডাকে আপন করে নেন। তাঁদের হাতে পতাকা তুলে দেন বীরভূম জেলা সম্পাদক দীপঙ্কর চক্রবর্তী। যোগদানকারীদর মধ্যে অনেকেই দীর্ঘদিন তৃণমূল ও বিজেপিতে ছিলেন। সিপিএমে আসা নিয়ে তাঁদের বক্তব্য, এখনকার রাজ্য সরকারের সময়ে অফিস, আদালতে কোনও কথা বলা যায় না। সমস্ত জায়গায় টাকা পয়সা নেওয়া হয়। বাম আমলের সঙ্গে তুলনা টেনে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গেও কথা বলা যায় না। তাঁরা মারধরেরও হুমকি দেয়। বাম আমলের সঙ্গে তৃণমূল জমানার তুলনা টেনে আগের শাসকদের তাঁরা এগিয়ে রেখেছেন।
দলীয় সভায় যোগদান প্রসঙ্গে জেলা সম্পাদক বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেস ভীষণ ভাবে দুর্নীতি করছে। ঘুষ খাচ্ছে। গরু, বালি, কয়লা, পাথর কোনও কিছুই বাদ দিচ্ছে না। আর মানুষের উপর অত্যাচার করছে। এদের উপর মানুষ ক্ষুব্ধ, বীতশ্রদ্ধ। তাই তাঁরা বামপন্থীদের বেছে নিচ্ছেন। তৃণমূল নেতারা যেহেতু অনেকেই বিভিন্ন সময়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তাই গেরুয়া শিবিরের প্রতি কেউ ভরসা করতে চাইছেন না। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাম নেতারা মণিরুল ইসলামের কথা উল্লেখ করছেন। যিনি রাজ্যের শাসক দলের ছত্রছায়ায় বীরভূমে বালির পাচারের কারবার চালিয়েছেন ।সমগ্র জেলায় সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করেছিলেন। পরে তিনি বিজেপিতে চলে যান। তাই এলাকার সিপিএম নেতাদের দাবি, বিজেপিকে তৃণমুলের যোগ্য বিকল্প বলে মানতে পারছেন না অনেকেই ।
তৃণমূল নেতৃত্ব বিষয়টিকে আমল দিতে চান না। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে নীচু স্তরে দল ছাড়ার হিড়িক চোখে পড়ার মতো। লক্ষ্যণীয় বিষয় এদের কেউই আর বিজেপিতে যাচ্ছেন না। কয়েক দিন আগে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলের দুই নেতা অমিত শাহ ও ফিরহাদ হাকিম বীরভূমে পরপর সভা করেছেন। জেলার বাসিন্দাদের দিয়েছেন বড়ো বড়ো প্রতিশ্রুতি। তারপরও রোখা যাচ্ছে না শাসক দলের সঙ্গ ত্যাগ করবার প্রবণতা। সম্প্রতি, নদিয়ার তেহট্ট এলাকায় একটি গ্রামের অন্তত ৬০টি পরিবার ঘাস ফুল ছেড়ে লাল ঝাণ্ডা হাতে তুলে নেন। এ মাসের শুরুতে রামপুরহাট ২ নম্বর ব্লকে ১০০ পরিবার যোগ দেয় কাস্তে হাতুড়ি শিবিরে। যা তৃণমূল-বিজেপির বাইনারির রাজনীতির পরিবর্তনের ইঙ্গিত। সম্প্রতি সাগরদীঘি উপনির্বাচনে ঘাসফুলের ভরাডুবি বাম-কং জোটের পালে খানিকটা হাওয়া তুলেছে। দুর্নীতি ইস্যুতে জেরবার তৃণমূল ভোট বৈতরণী পেরোতে মরণ কামড় দিতে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। আর্থিক কেলেঙ্কারির দায় পূর্বতন সরকার ও কেন্দ্রের শাসক দলের ওপর চাপানোর ঘটনায় তা স্পষ্ট। এমতাবস্থায় দলের নীচুতলায় ভাঙন কোনো বড়ো নির্বাচনী বিপর্যয়ের অশনি সংকেত নয় তো?
❤ Support Us