Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • নভেম্বর ৪, ২০২৩

৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে বিদ্ধস্ত নেপাল। ১৩২ জন নিহত, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে বার্তা মোদির

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে বিদ্ধস্ত নেপাল। ১৩২ জন নিহত, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে বার্তা মোদির

শুক্রবার রাতে নেপালের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রচণ্ড ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১৩২ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে। ৬/৪ মাত্রার ভূমিকম্পের শক্তিশালী কম্পন উৎসস্থল থেকে প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার দূরে নয়াদিল্লি পর্যন্ত অনুভূত হয়েছে। নেপালের ভূমিকম্পে ১৩২ জনের প্রাণহানি ও প্রচুর সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কামাল ভূমিকম্পে সৃষ্ট মানবিক ও শারীরিক ক্ষতির জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বিপর্যস্ত নেপালের পাশে সব রকমের সাহায্য নিয়ে দাঁড়াবার আশ্বাস দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই কম্পন অনুভূত হয়েছে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, বিহার-সহ উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। হিমালয় সংলগ্ন এলাকায় ঘন ঘন ভূমিকম্পের কারণ ব্যাখ্যা করে ভূবিজ্ঞানীরা বলেছেন হিমালয়ের নীচে ভূকম্পন বলয় ক্রমেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে। যার জেরে ভারতীয় পাতের সঙ্গে ইউরেশীয় পাতের সংঘাত তৈরি হতে পারে। ভারতীয় পাতটি ক্রমেই উত্তর দিকে এগোচ্ছে। ইউরেশীয় পাতের সঙ্গে ভারতীয় পাটের সংঘর্ষ এর ফলে হতে পারে। এই ঘটনার জেরেই  হিমালয় সংলগ্ন এলাকায় যে কোনও  বড় রকমের ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে। গত  ২০২২ সালের নভেম্বর মাসেও এই  একই অংশে ভূমিকম্প হয়েছিল, রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৬.৩।

শুক্রবার  রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ এই  ভূমিকম্পে জাজারকোটের বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ভিডিওগুলিতে দেখা যাচ্ছে বহুতল ইটের বাড়ির সামনের অংশ ভেঙে পড়ে রয়েছে, আসবাবপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পড়ে রয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে স্থানীয়রা ধসে পড়া বাড়ি ও ভবনের ধ্বংসাবশেষ থেকে বেঁচে যাওয়া লোকদের বের করতে অন্ধকারে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে।

পুলিশ আধিকারিক সন্তোষ রোক্কা জানিয়েছেন, “ভূমিকম্পের তীব্রতায় বাড়ি ভেঙ্গে পড়েছে। লোকজন তাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় চলে এসেছে। আমি আতঙ্কিত বাসিন্দাদের ভিড়ে বাইরে আছি। ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত ভাবে জানার চেষ্টা করছি।”

জাজারকোট এলাকায় উদ্ধার কাজের তৎপরতা চলাকালীন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাজারকোট এলাকায় ১,৯০,০০০ মানুষের বসবাস, এটি একটি পার্বত্য জেলা, এখানে দুর্গম পাহাড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার ফলে গ্রামগুলির সাথে যোগাযোগ করতে চরম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
কর্নালি প্রদেশের পুলিশের মুখপাত্র গোপাল চন্দ্র ভট্টরাই সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “জেলার দুর্গম অবস্থানের কারণে তথ্য পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। কিছু রাস্তা ক্ষতির কারণে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে, তবে আমরা বিকল্প পথ দিয়ে ওই এলাকায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।” বিপর্যয়স্থলে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে সহায়তার জন্য নেপালও সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে। নেপালের সমস্ত হেলি-অপারেটরদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে আহতদের এয়ারলিফ্ট করার সুবিধার্থে নিয়মিত ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করা হয়েছে।

ভৌগোলিক ভাবেই নেপাল একটি সক্রিয় ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত, যেখানে ভারতীয় এবং ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটগুলির সংঘর্ষ হামেশাই চলছে। ফলে হিমালয় সংলগ্ন অঞ্চলে ঘন ঘন ভূমিকম্প হতেই থাকে। ২০১৫ সালে নেপালে দুটি ভূমিকম্পে প্রায় ৯ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। পুরো শহর, শতাব্দী প্রাচীন মন্দির এবং অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থানগুলি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, এক মিলিয়নেরও বেশি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে, আর্থিক মূল্যে যার পরিমাণ ৬ বিলিয়ন ডলার।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!