ভোটে ফের অশান্ত হল সন্দেশখালি। জখম তৃণমূল–‌ বিজেপির অন্তত ১৫ জন। এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল

বিজেপির উদ্দেশ্য সিদ্ধ হল। ভোটে শান্ত থাকল না সন্দেশখালি। বিজেপি আশ্রিতরাই উত্তেজনা ছড়াল সন্দেখালির বয়ারমারি, রাজবাড়ি, হাটগাছি, কানমারি গ্রামে। বাসন্তী রোড অবরোধের জেরে উত্তেজনা আরও ব্যাপক আকার নিল। আক্রান্ত পুলিশ। পুলিশকে লক্ষ্য করে গালিগালাজ, ইট পড়ল বিজেপি শিবির থেকে। উন্মত্ত জনতাকে হঠাতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে হয়। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিও চালায় পুলিশ।  যদিও পুলিশ লাঠি চার্জের কথা অস্বীকার করেছে। শনিবার সকালে স্বাভাবিক ভাবেই ভোট শুরু হয়।

সন্দেশখালির মানুষ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহন কেন্দ্রে লাইন দেন। কিন্তু কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনাকে নানা ভাবে উস্কে দিয়ে পরিস্থিতি উতপ্ত করে তোলে বিজেপি। এদিন বেলা যত গড়িয়েছে উত্তাপ বিজেপির তান্ডব তত বেড়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ে বিজেপি সমর্থকরা। বয়ারমারি, বেড়মজুর, রাজবাড়ি, কানমারি এলাকায় বেশি করে উত্তেজনা ছড়ায়। ভোটের দিন সকালে সরবেড়িয়া আগারহাটি পঞ্চায়েতের সুন্দরখালি গ্রামে ৩৩ নম্বর বুথে বিজেপির দুস্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত রক্তাক্ত তৃণমূলের প্রবীন কর্মী ধোনা শেখ। সুন্দরখালি গ্রামে ধোনা শেখের বাড়ি ভাঙচুর করে বিজেপি আশ্রিত দুস্কৃতীরা। ভোট দিতে গিয়ে ধোনা শেখকে ঘিরে মারধোর করে। তাঁর গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষত থেকে রক্ত বেরতে থাকে । তাঁকে পুলিশ ও স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অন্যদিকে সন্দেশখালির খুলনা পঞ্চায়েতের সন্দেশখালির দক্ষিণ খুলনা ১৭৭ নম্বর বুথে পঞ্চায়েত সদস্য মনিকা মন্ডলের স্বামী, যুব তৃণমূলের নেতা রামকৃষ্ণ মন্ডলকে বেধড়ক মারধোর করে বিজেপির লোকজন। বিজেপির মারে মাথা ফাটে রামকৃষ্ণর। অন্যদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেলা ২ টো নাগাদ সন্দেশখালির বয়ারমারি গ্রামে রেবিজেপি তৃণমূল গন্ডগোল বাঁধে। বিজেপির অভিযোগ তৃণমূলের বাইক বাহিনী তাদের বুথ ক্যাম্পে হামলা চালায়। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তৃণমূলের দাবি নিজেরাই গন্ডগোল করে বিজেপির ২ গোষ্ঠী। তাতে এক বিজেপির সমর্থকতে পুলিশ আটক করে। তার প্রতিবাদে বিজেপি  রাজবাড়ির কাছে বাসন্তী রোড অবরোধ করে । পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ে।

উত্তেজনা আরও বাড়ে বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র ঘটনা স্থলে গেলে। রেখার প্ররোচনা মূলক কথায় বিক্ষোভকারীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। পুলিশকে উদ্দেশ্য করে রেখাকে বলতে শোনা যায় বুলেট প্রুফ জ্যাকেট আছে তো?‌ পুলিশের কাপড় খুলে নেওযার কথা বলেন রেখা। তাতে আরও উত্তেজনা বাড়ে। রেখার অভিযোগ , তৃণমূল ভোট বানচাল করতে চেয়েছে। বিজেপির ১০ জন জখম। ৩ মহিলা সহ ৬ বিজেপি সমর্থকে আহত অবস্থায় বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, ‘‌বিজেপি নিজরাই পরিকল্পিত ভাবে উত্তেজনা ছড়িয়ে ভোটের শান্তি পূর্ণ পরিবেশকে নষ্ট করতে চেয়েছে। ইট, লাঠি নিয়ে পুলিশকে আক্রমন করেছে। সন্দেশখালির বিভিন্ন এলকায় আমাদের কর্মীদের মারধোর করেছে।’‌ সুকুমার বলেন, যা ঘটেছে বুথের বাইরে বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের ইন্ধনে।  সংবাদ মাধ্যমের একাংশের ভূমিকা নিয়েও এদিনের ঘটনা প্রশ্ন তুলেছে। আগেরদিন শুক্রবার রাত থেকেই কয়েকটি সংবাদ চ্যানেল সন্দেশখালিতে ঘাঁটি গেড়েছিল। ‌তাদের ভালো ‘‌ফুটেজ’‌ দরকার। এদিন সেই ‘‌ফুটেজ’‌ দিতে পেরেছে  বিজেপি। অন্যদিকেসকাল থেকে কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে ঘটেছে। টাকি পুরসভা এলাকায় ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিনোদ কলোনির একটি বুথের কাছে তৃণমূলের বুথ ক্যাম্প ভেঙে দেয় বিজেপির বাইক বাহিনী এসে। চেয়ার টেবিল উল্টে ফেলে , ভোটার লিস্ট ছিঁড়ে দেয় বলে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ। হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের ভবানীপুর ২ পঞ্চায়েত ৬৫ নম্বর বুথ,  হাড়োয়ার সোনাপুকুর-শংকরপুর পঞ্চায়েতের ৭২, ৭৩ নম্বর  বিজেপি তৃণমূলের মধ্যে গন্ডগোলে কয়েকজন জখম হন ।  বাড়ি থেকে ভোট পরিচালনা করলেন বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম। এদিন সকালে নামাজ পড়ে তিনি বহেরা গ্রামের বাড়িতে নিজের কার্যালয়ে বসেন। সেখানে দলের কর্মীদের সঙ্গেl কথা বলেন। অনেকেই হাজি নুরুলের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। ফোনে বিভিন্ন এলাকার কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। প্রতি ১০ মিনিট অন্তর ভোটের খোজ খবর নেন নুরুল।