Advertisement
  • স | হ | জ | পা | ঠ
  • জানুয়ারি ১৫, ২০২২

সংরক্ষণের ব্যবস্থা কোথায়? ঢাকায় বিলুপ্তির পথে ২০৯ প্রজাতির প্রাণী ।

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
সংরক্ষণের ব্যবস্থা কোথায়? ঢাকায় বিলুপ্তির পথে ২০৯ প্রজাতির প্রাণী ।

সাম্প্রতি গবেষণায় উঠে এসেছে, ইট কাঠের কংক্রিট নগরীতে এই ধরনের যেসব প্রাণীর অস্বিস্ত টিকে আছে, তাদের অনেকেই বিলুপ্তির পথে । শহরের অলিগলি গাছ-গাছালি, ঝোপঝাড়, নদী-নালা, খাল এবং উন্মুক্ত জমি কমছে। বাড়ছে আকাশচুম্বী ভবন আর কংক্রিটের ইমারত । এরকম পরিবেশে মাঝেমাঝে বেজে ওঠে অচেনা ভীমরাজ পাখির কণ্ঠস্বর । বুড়িগঙ্গা বা তুরাগ নদীতে হঠাৎ দেখা মেলে দেশি শুশুক । শহরের ভেতরের জলাশয়
থেকে ডাঙায় লাফিয়ে পরে ঝিঁঝিঁ ব্যাঙয়ের মতো অদ্ভুত সব প্রাণী।

লালবুক টিয়া

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ফিরোজ জামান এধরণের চেনা-অচেনা বিলুপ্ত প্রায় জীবজন্তুকে নিয়ে গবেষণায় করেছেন । বিবিসিকে তিনি বলেছেন, যেসব প্রাণী এখনও টিকে আছে, তাদের সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করলে তারা অচিরেই হারিয়ে যাবে । তাঁর নেতৃত্বে ২০১৫ সাল থেকে গবেষণা শুরু হয়েছে, চলবে ২০৩০ পর্যন্ত । তাঁর গবেষণাপত্রটি ইতালির বায়োডাইভার্সিটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত তিন বছরের গবেষণায় তিনি দেখিয়েছেন, ঢাকায় এখনও ২০৯ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর বাস করে । সংখ্যায় অল্প। তাঁদের ইতিহাস দীর্ঘ। ঢাকার রমনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান, দিয়াবাড়ী, উত্তরা, খিলক্ষেত, রামপুরার আফতাবনগর, বুড়িগঙ্গা এবং তুরাগ নদীসহ মোট ২২টি এলাকা এবং এর আশপাশের জলাশয়, বনভূমিতে এ বিষয়ে গবেষণা চালিয়েছেন অধ্যাপক জামান।

ধূমকল ঘুঘু বা সবুজ ঘুঘু

প্রসঙ্গত উল্লেখ, ২০৯ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর পাশাপাশি বসন্ত বাউরি, ফিঙে ও ছোট ভীমরাজ পাখিসহ মোট ১৬২ প্রজাতির পাখি রয়েছে ঢাকা শহরে। সবুজ, গেছো ব্যাঙ, কটকটি ব্যাঙ, ঝিঁঝিঁ ব্যাঙ ও ঘড়িয়ালসহ উভচর প্রাণী রয়েছে ১২ প্রজাতির।

তক্ষক, গুইসাপ, খৈয়া গোখরা, পদ্মগোখরার মত সরীসৃপ আছে ১৯ প্রজাতির। বানর, শিয়াল, বনবিড়াল, শুশুক বা ডলফিনসহ ১৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণীও রয়েছে । সুন্ধি কাছিম, তরাকরি কাইট্টা প্রজাতির কচ্ছপসহ কয়েক প্রজাতির কচ্ছপ আছে।

ঢাকায় পাওয়া সুতা সাপ বা বাদামী গেছো সাপ

লালবুক টিয়া, চন্দনা ও হীরামনসহ মোট টিয়া পাখি আছে চার প্রজাতির।কিন্তু প্রজনন ও সংরক্ষণের অভাবে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা কমছে । কিন্তু টিয়া পাখির জন্য যে ধরণের উঁচু গাছের প্রয়োজন হয়, তা আছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং রমনা পার্কের মত ঢাকার পুরনো কয়েকটি পার্ক ও উদ্যানেই রয়েছে শুধু ।

আবার বিরল প্রজাতির ভুবনচিল দেখা যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর ও এর আশেপাশের এলাকায় উঁচু শিরীষ গাছে দেখা মেলে । অধ্যাপক জামান বলেছেন, গবেষণায় দেখা গেছে পাখির মধ্যে এখনো বিপন্ন প্রজাতি তেমন নেই। কিন্তু স্তন্যপায়ী প্রাণীর ক্ষেত্রে বিপন্ন প্রজাতি কয়েকটি আছে । এর মধ্যে তুরাগ ও বুড়িগঙ্গার দেশি জাতের শুশুক বা ডলফিন এবং বানর রয়েছে সবচেয়ে ঝুঁকিতে।

অধ্যাপক জামান বলেছেন, ‘প্রতিকূল পরিবেশে ঢাকায় বাস করা এসব প্রাণীর বড় অংশটি এখন অস্তিত্বের সংকটে রয়েছে। কিন্তু ঢাকার পরিবেশ থেকে সবুজ যেভাবে কমছে তাতে সেদিন খুব দূরে নয় যখন এসব প্রাণী হারিয়ে যাবে।’


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!