- দে । শ
- ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
পদ রক্ষায় চাই টাকা ! অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের অফিসের নাম করে হুমকি ফোন পুরপ্রধানকে। কালনায় গ্রেফতার ৩

টাকা ফেলুন। না হলে সরিয়ে দেওয়া হবে পদ থেকে। কালনার পুরপ্রধান আনন্দ দত্তর কাছে অভিষেক ব্যানার্জির অফিসের নাম করে হোয়াসঅ্যাপ কলে ফোন আসে। টাকার পরিমাণও কম নয়। ৫ লক্ষ টাকা। এমনকী টাকা না দিলে পুলিশি হয়রানির হুমকি, এমনকী গ্রেপ্তার করাও হতে পারে বলে ভয় দেখানো হয়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পূর্ব বর্ধমান জেলার তৃণমূলের সংগঠনের দেখভালের দায়িত্বে থাকা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জির নজরে আনেন আনন্দবাবু। নেতৃত্বের পরামর্শ মেনে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের ব্লুপ্রিন্ট অনুযায়ী শেষমেশ জালে তোলা হল তিন প্রতারককে। ধৃত জুনেইদুল হক চৌধুরি ও শুভদীপ মল্লিক হুগলী এবং তসলিম শেখ কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের বাসিন্দা। তিনজনকে ফাঁদে ফেলে পাকড়াও করেছে কলকাতার শেক্সপিয়ার সরণি থানার পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, তোলাবাজি-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
‘পুরপ্রধানের পদ ধরে রাখতে’ কলকাতার এমএলএ হস্টেলের একটি ঘরের নম্বর দিয়ে সেখানে টাকা নিয়ে পৌঁছতে বলা হয় আনন্দবাবুকে। আনন্দবাবু জানান, ‘ক্যামাক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে।’ কিছুদিন আগে একইরকম ফোন পান তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত কাটোয়ার পুরপ্রধান সমীর কুমার সাহাও। তিনি অবশ্য এই ফোনটিকে ‘উড়ো ফোন’ হিসেবে আমল দেননি। তবে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেল, কখনো আইপ্যাক, কখনো অভিষেক ব্যানার্জির দপ্তরের নাম করে তৃণমূলের বিভিন্ন পদাধিকারীকে এরকম ফোন করা হচ্ছে।
তবে কালনার পুরপ্রধান আনন্দ দত্তকে ফোন করা প্রতারকদের ধরতে পুলিশের ছক ছিল সিনেমার টানটান চিত্রনাট্যের মত। পদ বজায় রাখতে টাকা চেয়ে আনন্দবাবুর কাছে প্রথম ফোনটি আসে ২৪ ডিসেম্বর। পুরসভার কাজ কেমন চলছে, কেউ বাধা দিচ্ছে বা অসহযোগিতা করছে কিনা, এইসব পাঁচ কথার ফাঁকেই ২৫ ডিসেম্বর ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে ক্যামাক স্ট্রিটে দেখা করতে বলে আনন্দবাবুকে। পরে অবশ্য জায়গা বদল করে এমএলএ হস্টেলের একটি ঘরের নম্বর দিয়ে সেখানে দেখা করতে বলা হয়। পুলিশের পরামর্শ অনুযায়ী আনন্দবাবু বৃহস্পতিবার কলকাতা রওনা হন। কলকাতা ঢোকার পর শেক্সপিয়ার সরণি থানার এক পুলিশ আধিকারিক সাদা পোশাকে আনন্দবাবুর গাড়িতে ওঠেন। মাঝে প্রতারকরা আনন্দবাবুকে ফোন করে নিশ্চিত হন, তিনি কলকাতা ঢুকেছেন কিনা! প্রতারকদের বলে দেওয়া জায়গাতে আনন্দবাবু নামতেই প্রতারকের দল এগিয়ে আসে। তখনই আনন্দবাবুর গাড়ি অনুসরণকারী সাদা পোশাকের একদল পুলিশ তিনজনকে পাকড়াও করে।
❤ Support Us