- এই মুহূর্তে দে । শ
- সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪
আজও সিঙ্গি গ্রামে সাড়ম্বরে পূজিত ‘মঠের মা’

প্রায় তিনশ বছর আগে বর্ধমান রাজপণ্ডিতের শুরু করা দুর্গাপুজো আজও কাটোয়ার গ্রামে মহাসমারোহে পালিত হয়। বর্ধমান রাজার দেওয়া চারশ বিঘা জমি নিয়ে শুরু করা কাটোয়ার সিঙ্গি গ্রামের এই পুজোয় মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়ে এখনও রাজপরিবারের কল্যাণ কামনা করা হয়। এখানকার দেবী ‘মঠের মা’ নামে পরিচিত। দেবীর মুখে নিরামিষ রোচে না। আমিষভোগে তৃপ্ত হন মঠের মা।মারাঠা দস্যু ভাস্কর পণ্ডিত আক্রণের মুখে পড়ে ধ্বংস হয়েছে মঠের আদলে তৈরি মন্দির। বর্গি দস্যুরা মন্দির গুঁড়িয়ে দিয়ে গ্রামে অবাধে লুটপাট চালিয়েছিল।মন্দিরের শরীর জুড়ে থাকা টেরাকোটার কাজ আজ শুধু ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পেয়েছে।
পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার সিঙ্গির বাসিন্দা বর্ধমান রাজপরিবারের রাজপণ্ডিত গণেশ বিশারদ ১৭২২ খ্রিষ্টাব্দে রাজার কল্যাণের জন্য দুর্গাপুজো পত্তন করেন। রাজানুগ্রহ নিয়ে যখন দুর্গাপুজো শুরুর সময়ে মঠের আদলে তৈরি মন্দিরে দেবী দুর্গাকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। অনিন্দ্যসুন্দর নান্দনিক টেরাকোটা কাজের মন্দিরের আকৃতিতে এই তল্লাটের মানুষের কাছে দেবী পরিচিত হয় বলে পরিবারের সদস্যদের দাবি। ১৭৪২ খ্রিস্টাব্দে মারাঠা দস্যু ভাস্কর পণ্ডিত এখানে সদলবলে গ্রামে আক্রমণ চালায়। মঠের মায়ের মন্দির ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। পরে পুরনো মঠের আদলকে বাদ দিয়ে নতুনকরে মন্দির নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দেবীদুর্গা এলাকাবাসীর কাছে ‘মঠের মা’ নামেই আজও পরিচিত। পুজোর বিশেষত্ব হল ভট্টাচার্য পরিবারের সদস্যরা এই পুজোর পুরোহিত হবে। প্রাচীন ভূর্জপত্রের পুঁথির মন্ত্রোচ্চারণে পুজো করার বিধি। রাজপণ্ডিতের শতাব্দীপ্রাচীন বাড়ির পলেস্তারা খসে পড়লেও পুজোর আচার-অনুষ্ঠানের বাঁধন আজও অটুট আছে। পুজো পরিচালনার জন্য তৈরি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কেনারাম ভট্টাচার্য, মিঠুন ভট্টাচার্যরা জানালেন, ‘বর্ধমান রাজার কামানের তোপধ্বনিতে মহাষ্টমীর সন্ধিপুজোর রেওয়াজ মঠের মায়ের পুজো সম্পন্ন হত। এখনও বর্ধমান রাজপরিবারের প্রাচীন নিয়মকে স্মরণে রাখতে প্রতীকী আওয়াজের মাধ্যমে সন্ধিপুজো পুজো সম্পন্ন হয়।’
❤ Support Us