Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩

লোকসভায় স্মোক বোম্বকাণ্ড : অধীর-সহ লোকসভার ৩৩ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হল, মোট ৪৭ সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ থাকতে পারবেন না বাকি অধিবেশনের দিনগুলিতে

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
লোকসভায় স্মোক বোম্বকাণ্ড : অধীর-সহ লোকসভার ৩৩ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হল, মোট ৪৭ সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ থাকতে পারবেন না বাকি অধিবেশনের দিনগুলিতে

গত বাদল অধিবেশনেও “অসংসদীয় শব্দ” ব্যবহার করার জন্য সাসপেন্ড হয়েছিলেন লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সোমবার শীতকালীন অধিবেশনেও সাসপেন্ড করা হল অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে। সঙ্গে আরও ৩২ জনের বেশি বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।

সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সংসদে বক্তৃতার মাঝেই নতুন সংসদ ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সরব হন বিরোধী সাংসদেরা। তুমুল চিৎকার শুরু হয় সংসদ কক্ষে। প্রথমে দুপুর ২টো ৪৫ মিনিট, পরে তিনটে পর্যন্ত সভার কাজ মুলতুবি করে দেন স্পিকার। তার পরেও পরিস্থিতি তপ্ত হওয়ায় অধীর-সহ ৩৩ জনের বেশি সাংসদকে সাসপেন্ড করেন স্পিকার ওম বিড়লা। সাম্প্রতিক কালে এক সঙ্গে এত জন সাংসদকে সাসপেন্ড করার ঘটনা নজিরবিহীন। আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে শীতকালীন অধিবেশন। অধিবেশনের বাকি দিনগুলিতে এই সাংসদেরা অধিবেশনে যোগ দিতে পারবেন না। স্মোক বোম্ব কাণ্ডে লোকসভা ও রাজ্যসভা এদিন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

এদিকে বিরোধী সাংসদদের সাসপেন্ড করা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “আমি ভাগ্যবান, আমি এখন সাংসদ নই , যা চলছে তা কাঙ্খিত নয়।” প্রসঙ্গত অধীর রঞ্জন চৌধুরী সহ যে ৩৩ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে তার মধ্যে তৃণমূলের ৯জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এদিকে স্পিকার জানিয়েছেন স্মোক কাণ্ডে উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। বাংলা সহ ৬ রাজ্যে দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল। ৫০টি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।

কেন সাসপেন্ড হলেন অধীর সহ ৩৩ জন সাংসদ? বিরোধীদের কাছে এই প্রশ্নের উত্তর একটাই, “বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা। স্মোক কাণ্ডের বিরোধিতা করে এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের।”

সাসপেন্ড হওয়া সাংসদের মধ্যে রয়েছেন লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী এবং সংসদে দলের উপনেতা গৌরব গগৈ। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জী, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, সৌগত রায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, অসিত মাল এবং শতাব্দী রায় এবং ডিএমকে সদস্য এ রাজা এবং দয়ানিধি মারানও তালিকায় রয়েছেন। সাকুল্যে বিরোধীদের মোট ৪৭ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সোনিয়া গান্ধি সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের সঙ্গে দেখা করে যান।

গৌরব গগৈ বলেন, “সংসদের ভেতরে সরকার বুলডোজার চালাচ্ছে। বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার একটা পরিকল্পিত কাজ এটা।” তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূলকে ভয় পাচ্ছে বিজেপি। আমরা আগামীকাল থেকে গান্ধি মূর্তির নিচে ধর্নায় বসব।” তৃণমূল-এর রাজ্য সভার  সাংসদ সুখেন্দ্র শেখর রায় বলেন, “আমরা সংসদে বলেছি, যে হামলা সংসদে হয়েছে তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে বিবৃতি দিতে হবে। সেটা না করে স্পিকার বিরোধীদের সাসপেন্ড করলেন? প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সংবাদ পত্রে এই নিয়ে সাক্ষাৎকার দিতে পারেন কিন্তু সংসদে বিবৃতি দিতে পারেন না।”

অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “আজ সরকার স্বৈরাচারের চরম পর্যায় পৌঁছে গেছে। গণতন্ত্রের নামে সংসদকে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করা হয়েছে। প্রথম দিন থেকে আমাদের সঙ্গে এই আচরণ চলছে। আমরা দেখছি, টিভিতে বলছেন প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সংসদে সম্পক কাণ্ড নিয়ে। অথচ আমরা চেয়েছি সংসদে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্মোক কাণ্ড নিয়ে বলুন। আমরা এই দাবি করেছি বলেই সাসপেন্ড করা হয়েছে আমাদের।”

তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গোটা ভারতে গণতন্ত্র শেষ করে দেওয়া মোদির গ্যারান্টি। গুজরাটে মোদী যে ভাবে বিরোধীদের শেষ করে দিয়েছে ঠিক সেই ভাবে বিরোধীদের শেষ করে দেওয়া হচ্ছে সংসদে।”  তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “আমরা প্রথমদিন থেকে বলছি, যাঁর পাস নিয়ে দুই ব্যক্তি সংসদে প্রবেশ করে হামলা চালাল সেই বিজেপি সাংসদকে সাসপেন্ড করতে হবে। সেটা না করে বিজেপি বিরোধীদের সাসপেন্ড করছে। আসলে ওরা চাইছে সংসদকে বিরোধী শূন্য করে বিল পাস করিয়ে নিতে। আমাদের আর বিরুদ্ধেই লড়াই।”


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!