- দে । শ
- জানুয়ারি ৩, ২০২৩
কোভিড পর্বের নৈরাশ্য কাটিয়ে চেনা ছন্দে ফিরতে চাইছে কলকাতার অজন্তা সার্কাস

শীতকালে বাঙালির বিনোদনের অন্যতম জায়গা হল সার্কাস। বর্তমানে তার জৌলুস আগের মত না থাকলেও ছোট ছোট ছেলেমেয়ে থেকে সব বয়েসের মানুষের কাছে তার আবেদন এখনও ফিকে হয়ে যায়নি।
কলকাতার বিখ্যাত অজন্তা সার্কাস অর্ধ শতক পার করেছে । পূর্বের সেই জন সমাগম, সেই জৌলুস আজ অনেকটাই ম্রিয়মাণ । সার্কাসের ম্যানেজার সুজিত ঘোষ সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে সরাসরি বন্য জীবজন্তুর ব্যবহারে সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করেছেন । পাশাপাশি তিনি বলেন অতিমারীজনিত পরিস্থিতিতে সার্কাসের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে । ২২ বছর ধরে সার্কাসের সাথে যুক্ত সুজিতবাবু । তার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জানান যে আগে এখানে বহু মানুষ আসত মূলত জীবজন্তুদের খেলা দেখার জন্য । কিন্তু সরকারের বন্যপ্রাণ আইন সেই আসাকে অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। তার সংযোজন, সার্কাসে বহু বিদেশী খেলোয়াড়রা খেলা দেখাতে আসে । কিন্তু কোভিড ১৯ শুরু হওয়ার পর থেকে তাদের আসা বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু করোনার সংক্রমণ বর্তমানে নিম্নমুখী। তাই পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিদেশী খেলোয়াড়দের ভিসা ও পাসপোর্টের ব্যবস্থা করে তাদের আনবার ব্যবস্থা তাঁরা করছেন। তাঁর আশা এবার সার্কাসের সুদিন হয়তো ফিরবে।
বর্তমানে শিশু ও কিশোররা তাদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন ভিডিও গেমকে বেছে নিয়েছে। মোবাইল ও দূরদর্শনের পর্দা তাদের অবসর বিনোদনের খোরাক যোগায়। কিন্তু সার্কাস তাদের এক স্বাস্থ্যকর বিনোদনের সন্ধান দিতে পারে বলে তার বিশ্বাস। এরপর তিনি শিশু ও কিশোরদের আবার সার্কাসের খেলা দেখতে আসার আহ্বান জানান।
সার্কাসের ভবিষ্যত সম্ভাবনা নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন যে তাদের সার্কাসের এক দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে মানুষকে আনন্দ প্রদানের। করোনা পরিস্থিতিতে ও অন্যন্য কারণে সেই পরম্পরা কিছুটা বাধাপ্রাপ্ত হয়তো হয়েছে ঠিক। কিন্তু নিজেদের ঐতিহ্যে গভীর আস্থা পোষণ করে তিনি বলেন যে মানুষ আবার তাঁদের শো দেখতে আসবেন এবং আগের মতই আনন্দ উপভোগ করবেন। সেই সাথে তিনি জোর দিয়েছেন আরও বেশি করে শো আয়োজনের ওপর। যাতে বহু মানুষ সার্কাস নিয়ে আবার আগের মত আগ্রহী হয়ে উঠতে পারেন।
নতুন যুগের সাথে তাল মিলিয়ে তাঁরা টিকিটি বুকিং এর ক্ষেত্রেও অভিনবত্বের স্বাদ এনেছেন। টিকিট বুকিং এর লাইনে ভিড় এড়ানোর জন্য অনলাইন বুকিং এর ব্যবস্থা করেছেন। টিকিটের দাম করা হয়েছে ১০০, ২০০,৩০০ ৪০০ টাকা। দুপুর ১ টা , বিকেল ৪টে ও সন্ধ্যা ৭টায় শো-এর সময় স্থির করা হয়েছে।
সার্কাসে সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মে খুদেদের কাছে মত জানতে চাওয়া হলে তারা সার্কাস নিয়ে বেশ আগ্রহই দেখায়। একজন তো বলেই ওঠে এতদিন দূরদর্শনের পর্দায় যা দেখতে পেত তা এখন সরাসরি নিজের চোখে দেখতে পাবে ভেবে সে রীতিমত উত্তেজিত। আর একজন জানায় সার্কাসের বিভিন্ন খেলার মধ্যে আগুনের বলয় নিয়ে নৃত্য তার বেশি পছন্দের । শিশুদের মনোরঞ্জনের ওপরই সার্কাস শিল্পের হাল ফিরতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
❤ Support Us