- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- অক্টোবর ৩, ২০২৩
“৫০ জন বিধায়ক, সাংসদকে আটকাতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছে কেন্দ্র, মনে হচ্ছে ভারত-চিন যুদ্ধ হচ্ছে”, যন্তরমন্তর থেকে বললেন অভিষেক

“৫০ জন বিধায়ক, সাংসদকে আটকাতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছে কেন্দ্র। মনে হচ্ছে ভারত-চিন যুদ্ধ হচ্ছে। ৩৮ ঘণ্টার রাস্তা বাসে করে গরিব মানুষগুলো নায্যদাবী আদায়ের জন্য দিল্লিতে এসেছে। ভেবেছিল ট্রেন না দিলে আমাদের কর্মসূচি হবে না। তৃণমূলকে এভাবে দমিয়ে রাখা যাবে না। তৃণমূল মাথা নিচু করে না। মণিপুর জ্বলছে আর এখানে তৃণমূলকে আটকাতে মরিয়া দিল্লির অমিত শাহের পুলিশ। তৃণমূলকে যত কাটবে ততো বাড়বে। তৃণমূল মানে ঘাস ফুল”, এ ভাবেই মঙ্গলবার দিল্লির যন্তরমন্তরে রাজ্যের দাবি আদায়ের কর্মসূচিতে বক্তব্য শুরু করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই ছিলেন এদিনের ২৭ জন বক্তার মধ্যে শেষ বক্তা।
Unitedly, we shall fight and secure our rightful dues!
Today at Jantar Mantar, National GS Shri @abhishekaitc reiterated our mission to fight with blood, sweat, and tears against the apathetic BJP-led Central Govt and serve justice to the people of Bengal.
Dedicated and… pic.twitter.com/ICgvnOuAfN
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) October 3, 2023
অভিষেক এদিন বলেন, “এই টাকা কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়, মানুষের হকের টাকা। এখন কেন্দ্রের মন্ত্রীদের বলতে হচ্ছে বাংলাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে। নরেন্দ্র মোদি যদি বোতাম টিপে আপনাদের হকের টাকা বন্ধ করতে পারে তাহলে সাধারণ মানুষ বোতাম টিপে আপনাদের ক্ষমতাচ্যুত করবে। ২৪ মাস টাকা বন্ধ। কেন দুর্নীতি হলে বিজেপি এফআইআর করছে না? আমার প্রশ্ন যদি টাকা দিয়ে থাকেন তাহলে বলুন ২০২২-‘২৩ সালে কত টাকা বাংলাকে দিয়েছেন? এদিকে বিহার থেকে গিরিরাজ সিং ওড়িশা থেকে অনুরাগ ঠাকুরকে বলতে হচ্ছে কত টাকা ওরা বাংলাকে দিয়েছে। কেন বাংলায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নিয়ে দুর্নীতি হলে মুখ্যমন্ত্রীকে কেন্দ্রের মন্ত্রীরা চিঠি দেননি?”
আমাদের কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী আজ সকাল সাড়ে ১২ টার সময় দেখা করার জন্য সময় দিয়েছিলেন। তার পর গতকাল তিনি জানান আজ সন্ধ্যায় দেখা করবেন, বিমানে আজ বিকেল পাঁচটায় দিল্লিতে তিনি নামবেন। তার পর আগে তিনি শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করবেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী।”
অভিষেক এদিন বলেন, “বাংলা থেকে যে আড়াই-তিন হাজার মানুষ এসেছেন তাদের আড়াই হাজার জব কার্ড আমার হাতে রয়েছে। আমি প্রথমেই বলি আজকের সভা সার্থক হলে সেটা এই আড়াই হাজার ভাই-মা-বোনের জন্য হয়েছে। এদের কারও ৮, ১০, ১২,১৫ হাজার টাকা বাকি। আপনারা যে সাহস দেখিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস দোল তার জন্য আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে। এই আড়াই হাজার মানুষের পারিশ্রমিক আটকে রাখা হয়েছে। আমরা রাজ্যে ফিরে রাজ্যকে চিঠি দিয়ে লিখবো, আড়াই হাজার মানুষের যে টাকা আটকে রয়েছে সেটা যেন রাজ্য মিটিয়ে দেয়। রাজ্য সরকারের যদি এই টাকা দেওয়া সমস্যার হয়, তাহলে আমরা আমাদের বেতন দিয়ে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এনাদের টাকা পৌঁছে দেব আপনাদের ব্যাঙ্কে।”
অভিষেক এদিন বলেন, ‘আমরা ৪০ জন কৃষি ভবন যাবো। আপনারা যাবেন না। আমাদের ওপর অত্যাচার করে করুক। আপনাদের ওপর আমরা কোনও আক্রমণ হতে দেব না। আপনাদের আমাদের নেতারা বাসে তুলে দেবে। আমরা ৪০ জনের প্রতিনিধি দল মন্ত্রী জ্যোতিজির কাছে গিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসবো। এই ৫০ লক্ষ চিঠি মন্ত্রীর টেবিলে পৌছেবে। আমরা মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে যদি সদুত্তর না পাই, যদি কোনও কর্মীর গায়ে আঁচড় পরে , বিজেপির অনেক মন্ত্রীকে বাংলায় থাকতে হয়, আপনি যে ভাষায় বোঝেন সে ভাষায় উত্তর দিতে তৃণমূল জানে। যদি মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সদুত্তর না পাই তাহলে আবার আম্বেদকর ভবনে যাবো। আপনারা সোজা আম্বেদকর ভবনে যান। কেউ রাস্তায় ধমকালে,চমকালে আমাদের জানাবেন।”
অভিষেক বলেন বিজেপিকে বলতে চাই, “আগামী দু’মাসের মধ্যে আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে ১ লক্ষ লোকের মিছিল করব দিল্লির রাজপথে। বাংলার মানুষ যতদিন না দাবি আদায় করতে পারবে ততদিন এই লড়াই চলবে। ২০ লক্ষ মানুষের টাকা আমরা আদায় করে ছাড়ব। আর এখানে যে আড়াই হাজার মানুষ আছেন, যারা কাজ করে টাকা পাননি, তাদের টাকা তৃণমূল সরকার বা তৃণমূল দল দেবে। আগামী ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পরাস্ত করতে হবে। নরেন্দ্র মোদি যে বিমানে যাতায়াত করেন তার দাম সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা। আমাদের ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা আটকে রেঝেছে। দু’বছরে কত টাকা দিয়েছে সেটা বিজেপির কোনও নেতা হিসেবে দিতে পারলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।”
অভিষেক এদিন বলেন, “যদি প্রকল্পের টাকা নিয়ে দুর্নীতি হয়ে থাকে তাহলে কেন এফআইআর করেননি? কে নিষেধ করেছিল? আজ আমরা ৪০ জন মন্ত্রীর কাছে গিয়ে এই ৫০ লক্ষ চিঠি মন্ত্রীর টেবিলে দিয়ে আসবো। দেখি মন্ত্রী কি করে।” এর পর ১০০ দিনের টাকা না পাওয়া কর্মীদের প্রতি অভিক্ষে বলেন, “লোকসভা নির্বাচন দেখে গ্যাসের দাম কমিয়েছে। যদি আবার ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসে তাহলে গ্যাসের দাম আবার ১২০০ টাকা করে দেবে। আর যদি মানুষের সরকার দিল্লির ক্ষমতায় আসে তাহলে ১২০০ টাকার গ্যাসের দাম ৫০০ টাকা হবে। আপনারা কোনটা চান? আপনারাই ঠিক করুন।”
এদিকে অভিষেক যখন যন্তরমন্তরে বক্তব্য রাখছেন তখন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আমি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বলে এসেছি তৃণমূল ১০০ দিনের কাজের ৫ হাজার কোটি টাকা লুঠ করেছে। এদের শাস্তি দিতে হবে। আমি সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে এসেছি। মানুষের করের টাকায় কেন্দ্রের প্রকল্প চলে। সেই টাকা থেকে ৫৪ হাজার কোটি টাকার বেশি টাকা কেন্দ্রীয় সরকার তৃণমূল সরকারকে দিয়েছে। বিডিও, পঞ্চায়েত প্রধানদের সাহায্যে এই টাকার থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা তছরুপ করেছে তৃণমূল। আমি মন্ত্রীকে বলে এসেছি, দুধ ও জল আলাদা করতে হবে।”
❤ Support Us