“কেন্দ্রীয় সরকার ও আদানিকে প্রশ্ন করায় প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন মহুয়া”, মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে বললেন অভিষেক

সংসদে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন এই অভিযোগে মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ করেছে লোকসভার এথিক্স কমিটি, লোকসভার স্পিকারের কাছে এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান এই সুপারিশ জমা দিয়েছেন। এর ফলে তৃণমূলের কৃষ্ণনগরের সাংসদের সাংসদ পদ খারিজ এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। বৃহস্পতিবার প্রথম মহুয়া বিতর্কে প্রকাশ্যে মুখ খুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মহুয়ার পাশে দাঁড়ালেন দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বিধাননগরের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি দফতরে হাজিরা দিয়ে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অভিষেক বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ও আদানিকে প্রশ্ন করায় প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন মহুয়া।

এথিক্স কমিটির কাজের গতি ও গুরুত্ব নিয়ে মহুয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অভিষেক বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “এথিক্স কমিটিতে অনেকগুলি অভিযোগ পড়ে রয়েছে। আপনারা দেখেছেন, নতুন সংসদ ভবনে বিজেপি সাংসদ রমেশ বিদুরি কুকথা বলে কী করে সংসদের গরিমা নষ্ট করেছেন। বিজেপির এমন বহু সাংসদ রয়েছেন যাদের বিরুদ্ধে স্বাধীকার ভঙ্গের নোটিশের শুনানি বকেয়া রয়েছে। কিন্তু যদি কেউ সরকারের বিরোধিতা করে। সরকারকে প্রশ্ন করতে চায়, আদানির অপকর্ম নিয়ে প্রশ্ন করতে চায় তাহলে কী করে তাঁকে সাংসদ পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।”

অভিষেক এদিন  বলেন, “আমার মনে হয় মহুয়া নিজেই নিজের লড়াই লড়ার জন্য যথেষ্ট। আমাকেও এরা ৪ বছর ধরে ডাকছে। আলাদা আলাদা কেসে নাম জড়াচ্ছে। একটা কেসে কিছু পাওয়া না গেলে আরেকটায় জড়াচ্ছে। এটা প্রতিহিংসার রাজনীতি ছাড়া আর কিছু নয়।”

টাকার বিনিময়ে প্রশ্নকাণ্ডে বুধবার প্রকাশ্যে আসে সংসদের এথিক্স কমিটির খসড়া সুুপারিশপত্র। সেই সুপারিশপত্রে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে মহুয়ার সাংসদপদ প্রত্যাহারের আবেদন করেছে এথিক্স কমিটি। শুধু তাই নয় মহুয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছেন লোকপাল, বুধবার এক্স হ্যান্ডেলে এই কথা লিখেছেন নিশিকান্ত দুবে, যিনি মহুয়ার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগকারী। বিদেশে বসবাসকারী ব্যবসায়ীকে লোকসভার পোর্টালের পাসওয়ার্ড বলে দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় সুরক্ষা নিয়ে ছেলেখেলার অভিযোগ করেছেন বিজেপি সাংসদ  নিশিকান্ত। অভিযোগ মেনে নিলেও মহুয়ার দাবি, আগে আদানির কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্ত হোক।

মহুয়া মৈত্র তৃণমূলের অন্দরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বৃত্তে রয়েছেন। গত মাসে রাজভবনের সামনে তৃণমূলের অবস্থান চলাকালীন দার্জিলিংয়ে রাজ্যপালের কাছে যে প্রতিনিধিদল গিয়েছিল তার অন্যতম সদস্য ছিলেন মহুয়া মৈত্র। “নতুন তৃণমূল”-এর দিল্লিতে অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছেন তিনি। এর আগেও ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় মহুয়ার হয়ে টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্নের ইস্যুতে দাঁড়িয়েছেন। বিরোধীরা বলছিলেন, মহুয়ার বিষয়ে তৃণমূলের অবস্থান স্পষ্ট নয়, এবার মহুয়ার পাশা দাঁড়িয়ে অভিষেক দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন।