- দে । শ
- মার্চ ১৪, ২০২৩
এডিআর এর রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য: দেশের ৭ রাজনৈতিক দলের তহবিলে অজ্ঞাত উৎস থেকে ২ হাজার ১৭২ কোটি।সংগ্রহের শীর্ষে বিজেপি
দেশের জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলে মজুত বিপুল পরিমাণ অর্থ। এই বিপুল অর্থের উৎস সন্ধানে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পেরেছে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস অথবা এডিআর নামে একটি সংস্থা। এডিআর সম্প্রতি এ সংক্রান্ত যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তাতে দেশের সাতটি জাতীয় দলের তহবিলে বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্ধান মিলেছে। এই রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে রয়েছে বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, এনসিপি, সিপিআই, সিপিএম এবং ন্যাশনাল পিপল’স পার্টি।
এডিআর-এর রিপোর্ট অনুসারে, ভারতের এই জাতীয় দলগুলির তহবিল ফুলেফেঁপে উঠেছে ইলেক্টোরাল বন্ডের মারফত অথবা অজ্ঞাত উৎস থেকে বিপুল টাকা তহবিলে জমা পড়ায়। তহবিলে সঞ্চিত অর্থের ৬৬ শতাংশের বেশি এই পদ্ধতিতে জমা পড়েছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এডিআর এ সংক্রান্ত খতিয়ানও বিশদে পেশ করেছে। দেখা যাচ্ছে, ২০২১-২০২২ আর্থিক বছরে ভারতের সাতটি জাতীয় রাজনৈতিক দল অজ্ঞাত উৎস থেকে সংগ্রহ করেছে ২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, দেশের নির্বাচন কমিশনের কাছে আয়কর রিটার্ন এবং অনুদান প্রসঙ্গে যে হিসেব দাখিল করা হয়েছে, তাতেও ওই রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলে বিপুল পরিমাণ টাকার উৎস অজ্ঞাত হিসেবেই দেখানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলির বার্ষিক অডিট রিপোর্টেও অজ্ঞাত উৎস গোপন করা হয়েছে।
তহবিলে যে বিপুল পরিমাণ টাকা অজ্ঞাত উৎস থেকে জমা পড়েছে, সেসম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে দাবি করা হয়েছে, দলীয় কুপন বিক্রি করে, ত্রাণ তহবিল গড়ে, অনুদান গ্রহণ কিংবা দলীয় সমাবেশ থেকে সংগৃহীত টাকায় ওই বিপুল পরিমাণ অর্থের তহবিল গড়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, যদি কোনও রাজনৈতিক দল কোনও সংস্থা কিংবা ব্যক্তির কাছ থেকে ২০ হাজার টাকার কমে অনুদান সংগ্রহ করেন, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কিংবা সংগঠনের নামপ্রকাশ না করলেও চলে। এর জেরে সাতটি জাতীয় রাজনৈতিক দলের তহবিলে জমা পড়া অর্থের ৬৬ শতাংশের উৎস জানা যাচ্ছে না।
এডিআর-এর রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০২১-২০২২ সালে অজ্ঞাত উৎস থেকে বিজেপির দলীয় তহবিলে ১ হাজার ১৬১ কোটি টাকা জমা পড়েছে। অন্য জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলি অজ্ঞাত উৎস থেকে জমা পড়া টাকায় যে বিপুল পরিমাণ অর্থের তহবিল গড়েছে, এর ৫৩.৪৫% জমা পড়েছে বিজেপির দলীয় তহবিলে।
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসে অজ্ঞাত উৎস থেকে দলীয় তহবিলে জমা পড়েছে ৫২৮ কোটি টাকা। যা অন্য জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলের অজ্ঞাত উৎসের সঙ্গে তুলনায় এর পরিমাণ ২৪.৩১% । প্রসঙ্গত, অডিট রিপোর্ট অনুসারে, ইলেকক্টোরাল বন্ডের মারফত অনুদান ছাড়া দলীয় তহবিলে ৩৮ লক্ষ টাকা তহবিলে জমা পড়েছে বলে জানায় তৃণমূল। এদিকে অনুদানের যে ঘোষিত হিসেব ৪৩ লক্ষ টাকা। ২০২১-২০২২ সালে তৃণমূলের দাখিল করা ওই খতিয়ানে অসঙ্গতি মিলেছে বলে এডিআর-এর দাবি।
এডিআর-এর সম্প্রতি প্রকাশিত ওই রিপোর্টে্ জানানো হয়েছে, ২০০৪-২০০৫ এবং ২০২১-২০২২ সালে দলীয় কুপন বিক্রি করে কংগ্রেস ও এনসিপি একত্রে আয় করেছে ৪ হাজার ৩৯৮ কোটির বেশি টাকা।
সিপিআই জানিয়েছে, দল নির্বাচনী তহবিল, সদস্য চাঁদা, লেভিবাবদ তহবিল গড়ে তুলেছে। এডিআর-এর রিপোর্ট অনুসারে, সাতটি দলের জ্ঞাত উৎস থেকে আয়ের তহবিলে সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ ৭৮০ কোটির বেশি। জাতীয় দলগুলির তহবিলে সঞ্চিত মোট অর্থের ২৩.৭৪ শতাংশ এই হিসেবে জমা পড়েছে। প্রসঙ্গত, ২০০৪-২০০৫ এবং ২০২১-২০২২ সালের সময়সীমায় ভারতের জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলি অজ্ঞাত উৎস থেকে সংগ্রহ করেছে ১৭ হাজার ২৪৯ কোটির বেশি টাকা।
এডিআর জানিয়েছে, তহবিল সংক্রান্ত সমীক্ষার অন্তর্গত করা হয়েছিল বহুজন সমাজ পার্টিকেও। তবে বিএসপি জানিয়েছে, তারা অজ্ঞাত উৎস থেকে অনুদানবাবদ কোনও অর্থ সংগ্রহ করেনি।
❤ Support Us