- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- নভেম্বর ৭, ২০২৪
জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা পুনরুদ্ধারের প্রস্তাব পাস। তুমুল বিরোধিতা বিজেপি বিধায়কদের
তুমুল হৈ–হট্টগোল ও বিজেপি বিধায়কদের বিশৃঙ্খলার মাঝেই রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা পুনরুদ্ধারের জন্য একটা প্রস্তাব পাস করল জম্মু ও কাশ্মীর সরকার। বুধবার বিধানসভায় এই প্রস্তাব পাস হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের উপমুখ্যমন্ত্রী সুরিন্দর চৌধুরী প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। বিজেপি বিধায়কদের প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রস্তাবটি পাস হয়। এই প্রস্তাবে ২০১৯ সালে বাতিল হওয়া জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে ভারত সরকারকে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘এই বিধানসভা বিশেষ মর্যাদা এবং সাংবিধানিক গ্যারান্টির গুরুত্বকে পুনরায় নিশ্চিত করে, যা জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের পরিচয়, সংস্কৃতি এবং অধিকারকে সুরক্ষিত করে এবং তাদের একতরফা অপসারণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। এই প্রস্তাবটি বিশেষ মর্যাদা পুনরুদ্ধারের জন্য যে কোনও প্রক্রিয়া অবশ্যই জাতীয় ঐক্য এবং জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের বৈধ আকাঙ্ক্ষা উভয়কেই রক্ষা করবে।’
২০১৯ সালের আগস্টে কেন্দ্রীয় সরকার সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করেছে, যা এই অঞ্চলকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে এবং আগের রাজ্যকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করেছে। একটা হল বিধানসভাসহ জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য, অন্যটি বিধানসভা ছাড়া লাদাখ। এই নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছিল ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট ৩৭০ ধারা বাতিলকে বহাল রাখে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে ৩৭০ ধারা এবং অঞ্চলের স্বায়ত্তশাসনের বিষয়গুলি প্রাধান্য পেয়েছিল। ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতৃত্বাধীন জোট এবং অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলি এই অঞ্চলের স্বায়ত্তশালন পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছিল। অন্যদিকে, বিজেপি এটা প্রত্যাহারকে স্বাগত জানিয়েছে৷ নির্বাচনে ধরাশায়ী হয় কংগ্রেস। ৯০টি আসনের মধ্যে ন্যাশনাল কনফারেন্স ৪২টি, সহযোগী কংগ্রেস, ৬টি সিপিআইএম, সিপিআইএম(এল) ও আপ ১টি করে আসনে জয়ী হয়। নির্দলরা জেতে ৫টি আসনে। অন্যদিকে, বিজেপি পায় ২৮টি আসন।
এদিন প্রস্তাব পেশ হওয়ার পরেই প্রতিবাদ জানাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। তাঁরা প্রস্তাবের অনুলিপি ছিঁড়ে, হাউসের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং স্পিকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। এর ফলে বিধানসভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় ও কার্যকলাপ বন্ধ হয়ে যায়। এই বিশৃঙ্খলার মধ্যেই স্পিকার আবদুল রহিম রাথার বলেন, বিজেপি যদি এই বিষয়ে আলোচনার অনুমতি না দেয় তবে তিনি ভোটের প্রস্তাব রাখবেন। হট্টগোল চলতে থাকলে স্পিকার ধ্বনিভোটে প্রস্তাবটি রাখেন এবং বিজেপির বিরোধিতার মধ্যে এটি পাস হয়। প্রস্তাবটি পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজেপি সদস্যরা বিধানসভার ওয়ালে নেমে আসেন। স্পিকার ১৫ মিনিটের জন্য সভা মুলতবি ঘোষণা করেন।
পুনরায় বিভানসভার কাজ শুরু হলে বিজেপি বিধায়করা স্পিকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করেন। স্পিকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন। বিজেপি বিধায়করা অভিযোগ করেন, স্পিকার মন্ত্রীদের বৈঠক ডেকে নিজেই রেজুলেশনের খসড়া তৈরি করেছেন। স্পিকার অবশ্য এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।হট্টগোল চলতে থাকলে আবার এক ঘণ্টার জন্য অধিবেশন মুলতবি করেন। হাউস আবার জড়ো হলে বিশৃঙ্খলা চলতে থাকে। এরপর স্পিকার বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন।
❤ Support Us