- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- নভেম্বর ২৯, ২০২৩
২০২৪-এ মোদিকে ফের প্রধানমন্ত্রী করুন, ২০২৬-এ দুই তৃতীয়াংশ আসন দিয়ে বাংলায় বিজেপিকে ক্ষমতায় আনুন, সিএএ হবেই, ধমতলার বিজেপির সভামঞ্চ থেকে বাংলার মানুষের কাছে এই বার্তা দিলেন অমিত শাহ
২০২৪ এর লোকসভা ভোটের দামামা ধর্মতলার ভিক্টোরিয় হাউসের সামনে বিজেপির প্রতিবাদ সভা থেকে বাজিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। শুরুতেই তিনি বললেন, “২০২৪ এ নরেন্দ্র মোদিকে আবার প্রধানমন্ত্রী করবেন তো? ২০২৬ এ বাংলায় বিজেপির সরকার হবে তো?” এই সময় দর্শকাসন থেকে তখন যে সাড়া এলো তাতে খুব সন্তুষ্ট না হয়ে অমিত শাহ বললেন, “বাংলার আওয়াজ এটা নয়, আরও জোরে বলুন।”
অমিত শাহ বলেন, “এই ময়দান ঐতিহাসিক ময়দান। এই ময়দান থেকে সুরাওয়ার্দি ডাইরেক্ট অ্যাকসনের কল দিয়েছিলেন। ভারতীয় জনতা পার্টির জন্য এটা সৌভাগ্যশালী ময়দান। ২০১৪ সালে এই ময়দানে বক্তব্য রেখেছিলাম। তারপর দেশে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে।”
রাজ্যের দুর্নীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তৃণমূল সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে অমিত শাহ বলেন, “রবীন্দ্র সংগীত শুনে যে বাঙালির ঘুম ভাঙে সেই বাংলা আজ চাকরি,রেশন সহ নানান দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাকে বরবাদ করে দিয়েছেন। আমি বাংলার মানুষকে বলতে চাই, মোদিজি শৌচালয়, রান্নার গ্যাস, রেশন, করোনার সময় সাহায্য সব দিয়েছেন। কাশ্মীরকে ঠান্ডা করেছেন, ৩৭০ ধারার অবলুপ্তি ঘটিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদির আমলেই চন্দ্রযান সফল ভাবে উৎক্ষেপন হয়েছে।”
অমিত শাহ বলেন, “কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণে বাধা দিয়েছে। মোদিজি রাম মন্দির আগামী ২২ জানুয়ারি উদ্বোধন করবেন।”
তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মী খুনের বদলা ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের মাধ্যমে বিজেপি দেবে বলে এদিন মন্তব্য করেন অমিত শাহ।
দুর্নীতি ইস্যুতে মমতাকে নিশানা করে অমিত শাহ বলেন, “মমতা দিদি, হিম্মত থাকলে অনুব্রত, জ্যোতিপ্রিয় সহ পাঁচ জনকে দল থেকে সাসপেন্ত করুণ। ভারতের সম্মান, নিরাপত্তা তৃণমূল সাংসদ ক্ষুন্ন করেছেন সংসদে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন করে।” এই ভাবেই নাম না করে মহুয়া মৈত্রকেও বিঁধেছেন অমিত শাহ। দুনীতি জিইয়ে রাখার জন্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিএএ-র বিরোধীতা করছেন নলে অমিত শাহ অভিযোগ করে বলেন, “শুনে রাখুন, সিএএ দেশের আইন, কার্যকর হবেই।”
এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ করে অমিত শাহ বলেন, “আপনি যে ইউপিএ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন তারা বাংলাকে ২ লক্ষ কোটি টাকা দিয়েছিল। এনডিএ সরকার কতটাকা এই ১০ বছরে দিয়েছে সেটা হিসেব করুণ।” এর পর অমিত শাহ তথ্য দিয়ে বলেন, “বাংলার বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার ৮ লক্ষ কোটি টাকার বেশি অর্থ দিয়েছে।”
২০২৬ এর বিধানসভা নিবাচনে রাজ্যে বিজেপি সরকার তৈরি হবে বলে অমিত শাহ বলেন, “২০২৪ এর ভোটে মোদিজিকে ভোট দিন। বাংলার ভালো তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস করতে পারবে না। বাংলার ভালো করতে পারবে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদিই বাংলাকে সোনার বাংলা বানাতে পারবেন।”
সীমান্তে অনুপ্রবেশ রুখতে,দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে তাই ২০২৪ সালে নরেন্দ্র মোদিকে আবার প্রধানমন্ত্রী করুণ, এটা আমার আপনাদের কাছে অনুরোধ। আর এর পরে ২০২৬ এ বাংলার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে তুলে ছুঁড়ে ফেলে দিন। তাহলেই বাংলার উন্নতি সম্ভব।” অমিত চাহ দাবি করেন, “দুই তৃতীয়াংশ জনসমর্থন নিয়ে ২০২৬ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে বিজেপি।”
শুভেন্দু অধিকারী এদিন বলেন, “কাল বিধানসভা থেকে আমায় তারিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লোকসভা নির্বাচন থেকে সাসপেন্ড করবেন তো?”
এর পর শুভেন্দু বলেন, “এক মাসের বেশি সময় ধরে ৫ রাজ্যের নির্বাচনে প্রচার ও দলকে সংগঠিত করার কাজ করেছেন। প্রতিদিনই আপনারা আমাদের বক্তব্য শোনেন। আজ তিনি এসেছেন, যিনি পশ্চিমবাংলার মানুষকে সাহারা দেবেম সেই অমিত শাহজির মার্গ দর্শন আপনারা শুনবেন। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি আসবে, তৃণমূলকে যেতে হবে। চোরেদের রানী কে? মমতা চোর।” তবে গলা ভাঙা থাকায় শুভেন্দু অধিকারী এদিন তাঁর ভাষণ দৃপ্তকন্ঠে দিতে পারেননি।
শুভেন্দুর পর সুকান্ত মজুমদার ভাষণ দিতে উঠে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর ভাইপো, যিনি অমিত শাহজি আসবেন বলে ঘরে লুকিয়ে আছে। ২০২৪ এ আমরা করে দেব খেলা। ২০২৬ এ শেষ হয়ে যাবে তৃণমূলের মেলা। পুলিশ বাধা দিয়েছে, বিজেপি কোনও বাধা মানবে না। পুলিশ, তৃণমূল ডান্ডা বোঝে, ওদেরও ডান্ডা দেব। দিদিমনি বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাংলার হয়ে অভিযোগ জমা দেবেন, আমরাও প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জমা দেব, তাই অভিযোগ পত্র বাকসে নেওয়া হচ্ছে।”
❤ Support Us