Advertisement
  • দে । শ
  • এপ্রিল ৯, ২০২২

কলকাতায়, বাংলাদেশের নতুন উপদূত আন্দালিব ইলিয়াস।

ব্যক্তিত্বে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস-এর দ্যূতি ।

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
কলকাতায়, বাংলাদেশের নতুন উপদূত আন্দালিব ইলিয়াস।

সম্প্রতি, কলকাতায়, বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য উপদূতের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন আন্দালিব ইলিয়াস। সুদক্ষ, সপ্রতিভ তরুণ কূটনীতিক। এই মুহূর্তে, এই মহানগরে এটাই তাঁর প্রধান পরিচয়। আন্দালিবের আরেক পরিচয়, বাংলা সাহিত্যের সর্বকালের অন্যতম সেরা আর বিদগ্ধ লেখক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস তাঁর বাবা। অতএব আশৈশব সংস্কৃতিক পরিবেশে লালিত আন্দালিবের ব্যক্তিপ্রতিভা। ঐতিহ্য আর বহুমাত্রিক, বহুত্ববাদী সংস্কৃতি মিশে আছে রক্তে। রবীন্দ্র সঙ্গীতের প্রতি অনিঃশেষ ভক্তি এবং কবিতা ও চিত্রশিল্পের প্রতি মুগ্ধতা— আন্দালিব ইলিয়াসের ব্যক্তিত্বে অন্যধরনের যে মাত্রা যুক্ত করেছে, তাঁর কূটনীতিক কিংবা দরদি ‘আমলা জীবনকে, ঋদ্ধ করেছে তা।

কথাসাহিত্যিক: আখতারুজ্জামান ইলিয়াস।

নাগরিক যাপনের জটিলতার ঊর্দ্ধে, আপাতদূষ্টিতে গম্ভীর, সতর্ক আর মিতভাষী। বাবা ইলিয়াসের প্রতিচ্ছায়া ছড়িয়ে আছে স্বভাবধর্মে। বাবার সূত্রেই ১৯৯৬ সালে কলকাতার সঙ্গে তাঁর আত্মীয়তার সূচনা। আমরা ভুলে থাকতে পারি না—ক্যান্সার আক্রান্ত ইলিয়াস শুয়ে আছেন দক্ষিণ কলকাতার এক নার্সিংহোমে, বাবাকে দেখভালের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন আন্দালিব, পা কেটে বাদ দেওয়া হল কালোত্তীর্ন লেখকের, পিতা-পুত্র দুজনেই নিঃসঙ্গ না হয়েও নিঃসঙ্গ, ইলিয়াসের গুণমুগ্ধ মহাশ্বেতা দেবী, শিবনারায়ণ রায় মাঝে মাঝে খোঁজ নিচ্ছেন, চেনা-অচেনা তরুণ লেখকরা যথাসম্ভব পাশে দাঁড়াচ্ছেন, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত বাবাকে নিয়ে ব্যস্ত, গম্ভীর আন্দালিব নিঃশব্দে পরিস্থিতির মোকাবিলা করছেন। সে-এক কঠিন অভিজ্ঞতা। ওই রক্তক্ষরণ, ওই চিহ্নহীন ঘা মুছে ফেলা অসম্ভব। সেই ক্ষতের সঙ্গী হয়েই আন্দালিব এবার বাংলাদেশের কলকাতা উপদূতাবাস-প্রধানের দায়িত্ব সামলাবেন। অন্য দুদিক থেকেও তিনি বঙ্গভাষী ও বঙ্গবাসীর নিকটাত্মীয়। কেননা, কলকাতা উপদূতাবাসেই পাকিস্তানি আমলে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা মাথা তুলেছিল। দ্বিতীয়ত, দুই দেশের মানচিত্র আলাদা হলেও, মনোচিত্রে, ভাষা আর সংস্কৃতিতে  দুই বঙ্গ অবিভাজ্য। সমগোত্রীয়।

কলকাতা উপদূতাবাসে যোগ দেওয়ার আগে ঢাকায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রকে, ডিজি-র দায়িত্ব সামলেছেন আন্দালিব। নিউইয়র্ক, ব্রাসেলস, জেনেভা, ফিলিপিনসে কূটনৈতিক কর্মে, পারস্পরিক সম্পর্কের নির্মাণে দক্ষতা তাঁর প্রমাণিত এবং প্রশ্নাতীত। এমন একজন অতিথির উপস্থিতিতে আরও পূর্ণ ও পুণ্যময় হয়ে উঠবে দুই বাংলার হৃদ্যতার চিরকাঙ্খিত সুন্দর। এটাই আমাদের পরম প্রত্যাশা ।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!