- এই মুহূর্তে মা | ঠে-ম | য় | দা | নে
- ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪
১৯৯০ বিশ্বকাপ ফাইনালে মারাদোনাকে কাঁদানো ব্রেহমে আর নেই
১৯৯০ বিশ্বকাপ ফাইনাল। মুখোমুখি পশ্চিম জার্মানি ও আর্জেন্টিনা। ম্যাচ শেষ হতে তখন মিনিট ছয়েক বাকি। ফলাফল গোলশূন্য। স্টেফান রয়টারের পাস বক্সের মধ্যে ধরার জন্য ছুটেছিলেন রুডি ভয়েলার। আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার রবার্তো সেনসিনি ছুটে গিয়ে ট্যাকেল করেন। ভয়েলারের আগে বলের কাছে পৌঁছন সেনসিনি। তিনি স্লাইডিং ট্যাকেল করে বল ক্লিয়ার করতে যান। ভয়েলারের আগে সেনসিনি বলে পা লাগান। তারপর সেনসিনির ডান পা ভয়েলারের গায়ে লাগে। মেক্সিকান রেফারি এডগাডো মেনডেজ পেনাল্টির নির্দেশ দেন।
রেফারির কাছে ছুটে গিয়ে হাত জোড় করে কেঁদে ফেলেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক দিয়েগো মারাদোনা। দেশকে পরপর দু’বার বিশ্বকাপ জেতানোর স্বপ্নের যবনিকা ঘটতে চলেছে। কেঁদে ফেলাটাই স্বাভাবিক। রেফারি মেনডেজ মারাদোনার আবেদনে কর্ণপাত না করে তাঁকে হলুদ কার্ড দেখান, পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। পেনাল্টি থেকে গোল করে পশ্চিম জার্মানিকে বিশ্বকাপ জেতান আন্দ্রে ব্রেহমে। মারাদোনাকে কাঁদিয়ে জার্মানিকে বিশ্বকাপ জেতানো সেই আন্দ্রে ব্রেহমে আর নেই।
৬৩ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়এ মারা গেলেন জার্মানির প্রাক্তন এই ডিফেন্ডার। ব্রেহমের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে তাঁর প্রাক্তন ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ। ক্লাবের পক্ষ থেকে এক শোকবার্তায় বলা হয়েছে, ‘আন্দ্রে ব্রেহমের মৃত্যুতে বায়ার্ন মিউনিখ গভীরভাবে শোকাহত। দুর্দান্ত ফুটবলার, অসাধারণ মানুষ এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ব্রেহমে সব সময় আমাদের হৃদয়ে থাকবে।’
জার্মানির হয়ে ৮৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ব্রেহমে। মূলত রক্ষণভাগের ফুটবলার হলেও বিভিন্ন পজিশনে খেলার ব্যাপারে দক্ষ ছিলেন। রক্ষণ ও মাঝমাঠ মিলিয়ে ১০টি পজিশনে খেলেছেন। দেশের হয়ে ৮টি গোল করেছেন। আর এই ৮ গোলের মধ্যে ৫টিই বিশ্বকাপে। ব্রেহমেকে বড় ম্যাচের পারফরমার হিসেবে মনে রেখেছে ফুটবল ভক্তরা। দুই পায়ে এতটাই দক্ষ ছিলেন যে, ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার পর্যন্ত একসময় বলেছিলেন, ‘আমি আন্দ্রেকে ২০ বছর ধরে চিনি। কিন্তু এখনওস ঠিক জানি না, সে বাঁ পা, না ডান পায়ের ফুটবলার।’
১৯৬০ সালে হামবুর্গে জন্ম আন্দ্রে ব্রেহমের। ১৯৭৮ সালে স্থানীয় এইচএসভি বার্মবেক–উলেনহোর্স্ট ক্লাবে ফুটবলজীবন শুরু করেন। বায়ার্ন মিউনিখ, ইন্টার মিলান এবং কাইজারস্লাটার্ন মিলিয়ে ২০ বছরেরও বেশি পেশাদার ফুটবলজীবন। বায়ার্নকে বুন্দেশলিগা জেতানোর পাশাপাশি ইন্টারের হয়ে সিরি ‘আ’–ও জেতেন। ১৯৯৮ সালে কাইজারস্লাটার্নকে জার্মানির শীর্ষ লিগ জিতিয়েই ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছিলেন।
জার্মানির হয়ে তিনবার ইউরো (১৯৮৪, ১৯৮৮ ও ১৯৯২) ও তিনবার (১৯৮৬, ১৯৯০ ও ১৯৯৪) বিশ্বকাপ খেলেছেন আন্দ্রে ব্রেহমে। ১৯৮৪ ও ১৯৯২ ইউরোর সেরা দলেও জায়গা পেয়েছিলেন। ১৯৯০ বিশ্বকাপে অলস্টার দলেও ছিলেন। ১৯৯৪ বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে বুলগেরিয়ার কাছে হেরে জার্মানি বিদায় নেওয়ার পর জাতীয় দল থেকে অবসর নেন ব্রেহমে। তারপরও ক্লাব ফুটবল খেলে গেছেন। অবসর নেওয়ার পর কোচিংয়ে এসেছিলেন ব্রেহমে। ২০০০ সালে কাইজারস্লাটার্নের কোচের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০০২ সালে তাঁকে ছাঁটাই করা হয়েছিল। আরও দু’একটা দলে কোচিং করিয়েছিলেন। কিন্তু সাফল্য পাননি। ২০০৬ সালেই শেষ হয় ব্রেহমের কোচিং জীবন।
❤ Support Us