- এই মুহূর্তে দে । শ
- জুলাই ১৯, ২০২৪
বায়োডাইভার্সিটি হেরিটেজ সাইট-রূপে চিহ্নিত বাংলার দশ এলাকা

বন্যপ্রাণ রক্ষায় রাজ্যের দশটি এলাকাকে ‘বায়োডাইভার্সিটি হেরিটেজ সাইট’-রূপে ঘোষণা করল পশ্চিমবঙ্গ ‘বায়োডাইভার্সিটি বোর্ড’। উত্তর থেকে দক্ষিণ, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে একাধিক প্রাণীর দেখা মিলবে যেগুলি প্রবলভাবে বিপন্ন। সভ্যতার বিবর্তনের সঙ্গে পাল্লা না দিতে পেরে , জলবায়ুর পরিবর্তনের সঙ্গে এগুলি ক্রমশ বিলুপ্ত হওয়ার পথে। পাশাপাশি মানুষের লোভ ও উচ্চাশা তো আছেই। ফলে সেসব বিপন্নদের নির্ভয়ে প্রকৃতির বুকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বায়োডাইভার্সিটি বোর্ড এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
বায়োডাইভার্সিটি বোর্ডের দাবি , বন্যপ্রাণ বায়োডাইভার্সিটি হেরিটেজ সাইটের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। বন দপ্তরের পাশাপাশি রাজ্যের জীব বৈচিত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে সর্বক্ষণ সচেষ্ট রয়েছে তারা। ঘোষিত বায়োডাইভার্সিটি এলাকায় পর্যটকেরা গেলে প্রচুর বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। সেসব জায়গায় কোনও গাছ কাটা যাবেনা। বসবাস করা যাবেনা। চাষাবাদ করাও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। দার্জিলিং হিমালয়ের বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী হিমালয়ান সালাম্যান্ডার মুক্ত বিহঙ্গের মতো সাঁতার কাটবে কার্শিয়াং ব্লকের লাটপাঞ্চোরের নামথিং পোখরি জলাশয়ে। এটি এখন বায়োডাইভার্সিটি হেরিটেজ সাইটের । জুরাসিক যুগ থেকে শুরু করে মানব সভ্যতার বিবর্তনের সাক্ষী এই প্রাণীরা। তবে পরিবর্তনের সঙ্গে পাল্লা না দিতে পেরে নিজেরাই এখন হারিয়ে যাওয়ার মুখে।
বীরভূমের ইলামবাজারের কাঠের ফসিল পার্ক এই তালিকাভুক্ত হয়েছে। এখানে রয়েছে একটি জুরাসিক যুগের গাছের ফসিল। নদিয়ার কালীগঞ্জ ব্লকের অধীন ১১৫ একর এলাকায় ভাগীরথীর বুকে জেগে ওঠা চর বালীডাঙা জীববৈচিত্রের আধার বলে পরিচিত। ১০০ প্রজাতির মাইগ্রেটরি ও রেসিডেন্ট বার্ড , বিভিন্ন প্রজাতির গোসাপ, ভোঁদড়, কচ্ছপ, সাপ, মংগুজ়, ফিশিং ক্যাট, সিভেট ক্যাট, গোল্ডেন জ্যাকেল। প্রাণীগুলোর প্রায় সবই বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনে শিডিউল ওয়ানের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন জলজ প্রাণী, পোকা, প্রজাপতি, গাছ, ঘাস, শ্যাওলা। কালীগঞ্জ-এর বিডিও অঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘হেরিটেজ ঘোষণার পরেই এই দ্বীপে মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গাছ কাটা, মাটি কাটা, পশু শিকার যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে। আমরা চাই, এই দ্বীপ জীববৈচিত্রে আরও সমৃদ্ধ হোক। প্রাকৃতিক ভাবে দ্বীপটির গাছপালা ও বসবাসকারী প্রাণীগুলো যাতে বংশবিস্তার করতে পারে, সে চেষ্টা করা হচ্ছে।’
বায়োডাইভার্সিটি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিমাদ্রিশেখর দেবনাথ বলছেন, ‘জঙ্গলে বন দপ্তরের নিজস্ব আইন রয়েছে। সেই আইনে সুরক্ষিত থাকে বন্যপ্রাণ ও জীববৈচিত্র। তবে তার বাইরেও বহু এলাকা, জলাজমি রয়েছে, যেখানে জীববৈচিত্র ও প্রচুর সংখ্যায় বন্যপ্রাণ আছে। সেখানে বন দপ্তরের ভূমিকা নেই। অথচ ওই সব প্রজাতি খুবই বিপন্ন। তাদের রক্ষা করতেই বায়োডাইভার্সিটি অ্যাক্ট মেনে কাজ করছে বোর্ড।’
শহর কলকাতার রবীন্দ্র সরোবর এলাকাকেও বায়োডাইভার্সিটি হেরিটেজ সাইটরূপে ঘোষণা করতে চায় বোর্ড। তাদের বক্তব্য, এলাকাতেও বেশ কিছু স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি রয়েছে। তাঁদের প্রস্তাবে সরকার অনুমোদন দিলে আইন মেনে নির্দেশিকা জারি হবে।
❤ Support Us