- এই মুহূর্তে বি। দে । শ
- আগস্ট ৫, ২০২৪
উত্তাল বাংলাদেশ, জারি অনির্দিষ্ট কালের কার্ফু
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’–এর ডাকা অসহযোগ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রবিবার উত্তাল হয়ে উঠল বাংলাদেশ। সরকারি হিসেব অনুসারে সারা দেশে সংঘর্ষ, হামলা, গুলি চালানো ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশ–সহ অন্তত ৯৮ জন নিহত হয়েছেন। সংবাদসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, পুলিশ ও চিকিৎসকদের মতে মোট মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ৩০০। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কার্ফু জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার। একইসঙ্গে আজ থেকে তিনদিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। এই মাঝে আজ ‘মার্চ টু ঢাকা’ অভিযানের যাক দিয়েছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’।
হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’–এর ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে রবিবার রাজধানী ঢাকাসহ গোটা দেশে ব্যাপক সংঘর্ষ, ভাঙচুর, গুলি চালানো ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। কর্মসূচির প্রথম দিন সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভের জন্য জমায়েত হতে থাকে আন্দোলনকারীরা। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। অন্তত ৫০টি জেলায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বেশিরভাগ জায়গায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা। লাঠিসোঁটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীদের প্রতিরোধে রাস্তায় নামেন।
অসহযোগ আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শাসক দল আওয়ামী লীগ। এরপর শনিবার রাত থেকেই মাঠে নামার প্রস্তুতি নেন দলের নেতা–কর্মীরা। রবিবার সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে অবস্থান শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় নামেন আন্দোলনকারীরা। হাজার হাজার মানুষ মিছিলে সামিল হয়। তাঁদের আটকাতে গেলে বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষ শুরু হয়।
রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী, উত্তরা–আজমপুর, ধানমন্ডি, শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাব, জিগাতলা, কারওয়ান বাজার, মিরপুর, গুলিস্তান, লক্ষ্মীবাজার, বাবুবাজার, রায়সাহেব বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সকাল থেকেই শাহবাগ মোড় বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সন্ধ্যার পর পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষে ১১ জনের মৃত্যু হয়। বিভিন্ন জেলা শহরেও তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নরসিংদীর মাধবদীতে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য করে গুলি ছুড়লে আওয়ামী লীগের ৬ জন নেতা–কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সিরাজগঞ্জে এক ওসিসহ ১৩ জন পুলিশকর্মীকে হত্যা করা হয়। সরাকরি হিসেব অনুসারে গোটা দেশে ৯৮ জন নিহত হয়েছেন। একর মধ্যে ৪৩ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে।
এদিকে, ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচীতে অংশ নেওয়ার জন্য রবিবার রাত থেকেই ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী। রাতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজে আশ্রয় নেন। আজ সকাল ৯টা নাগাদ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষার্থী ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়। পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। গোটা দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভারত সরকার দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে।
❤ Support Us