- দে । শ
- জুন ৫, ২০২৪
বসিরহাটে সিপিএম চারে। আইএসএফ তিন নম্বরে।নিশ্চুপ বিজেপি। তৃণমূল শিবিরে উদ্দীপনা তুঙ্গে

একসময় বাম আন্দোলনের অনেক ইতিহাসের সাক্ষী বসিরহাটে সিপিএম চতুর্থ স্থানে চলে গেল। তৃতীয় স্থানে উঠে এল আইএসএফ। গণনার শেষে হাজি নুরুল পেয়েছেন ৮ লাখ ১ হাজার, ৫৪২ ভোট। বিজেপির রেখা পাত্রর প্রাপ্ত ভোট ৪ লাখ ৬৮ হাজার,৫৯৩ ভোট। হাজি নুরুলের ব্যবধান দাঁড়ায় ৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৪৯ ভোট। হাজি নুরুল মাঝে ১০ বছর পর আবার সংসদে যাবেন। ২০০৯ সালে বামেদের শক্ত ঘাঁটি বসিরহাট কেন্দ্র থেকেই ৬০ হাজার ৩৭৯ ভোটে জিতে সাংসদ হন হাজি নুরুল। এবারে তাঁর ব্যবধান প্রায় ৪ গুণ বাড়িয়েছেন তিনি। এজন্য দলের সর্বস্তরের নেতা কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন। অন্যদিকে ১ লাখ ২৩ হাজার ৪৩২ ভোট পেয়ে আইএসএফ প্রার্থী আখতার রহমান বিশ্বাস তৃতীয় স্থানে। চতুর্থ স্থানে সিপিএমের নিরাপদ সরদার পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৬১১ ভোট। তৃণমূলের এই জয় প্রত্যাশিত ছিল। প্রথম থেকেই তৃণমূলের নেতা কর্মীরা ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। যদিও বসিরহাট ও টাকি পুর এলাকায় তৃণমূলের ফল খুবই হতাশাব্যাঞ্জক। বসিরহাট পুরসভার ২৩ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০ ওয়ার্ডে বিজেপি অনেক ভোটে এগিয়। ৩ টি ওয়ার্ডে তৃণমূল এগিয়ে। টাকিতেও অধিকাংশ ওয়ার্ডে তৃণমূল পিছিয়ে বিজেপির থেকে। পুরসভাগুলিতে এমন ফল কেন তা পর্যালোচনায় বসছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব।
অন্যদেকে সন্দেশখালি বিধাসভা কেন্দ্রে বিজেপির থেকে ৮৩৮৭ ভেটে পিছিয়ে থেকেও সামগ্রিক ভাবে দলের জয় নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভেসেছে সন্দেশখালি। বিপুল ব্যবধানে তৃণমূলের হাজি নুরুল ইসলামের জয়ের পর একদিকে তৃণমূল সমর্থক কর্মীদের উদ্দীপনা তুঙ্গে। তেমনি চুপসে গেছে বিরোধীরা। বিরোধীদের অনেকেই তৃণমূলের আবির খেলায় শামিল। পাশাপাশি বিধায়কের উদ্যোগে সন্দেশখালি বিধানসভা তৃণমূল কংগ্রেস টোটো, অটোয় মাইক বেঁধে হাজি নুরুল ইসলামের জয়ে সন্দেশখালির মানুষকে শুভেচ্ছা অভিনন্দন জানাচ্ছে। প্রচারে মাইকে আবেদন রাখা হচ্ছে,‘তৃণমূলের এই জয়ে সন্দেশখালির মানুষ কোন অশান্তি, গন্ডগোলে জড়াবেন না। কেউ কোথাও কোন হিংসা ছড়াবেন না। সন্দেশখালির শান্তি বজায় রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের।’ বিধায়ক সুকুমার মাহাতোর ফোন নম্বর দিয়ে ঘোষণা করা হচ্ছে, ‘কোন সমস্যা হলে বিধায়ককে ফোন করুন। নিজেরা গন্ডোগোলে জড়াবেন না।’ এই ধরনের আবেদন নিয়ে মাইক পাড়ায় পাড়ায় বুথে বুথে ঘুরছে।
সন্দেশখালির দুর্গামন্ডপ পঞ্চায়েতের ২০২ নম্বর বুথ এলাকায় বিশাল মিছিল বেরয়। ব্যান্ডপার্টির আর গানের তালে তালে নারী পুরুষ সকলেই গোটা গ্রাম ঘোরে। পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মেঘনাদ মন্ডল, ২ বুথ সভাপতি বিজয় সর্দার, মনোরঞ্জন বারিক, পঞ্চায়েত সদস্য রাজু সর্দার, বুথ কমিটির সদস্য বিপ্লব সেনগুপ্ত প্রমুখ মিছিলে নেতৃত্ব দেন। মহিলা তৃণমূলে আজ থেকেই জনসংযোগে নেমে পড়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অষ্টমী সর্দার বলেন, ‘হাজি নুরুল ইসলামের জয়ের পরই সন্দেশখালির সব ‘প্রতিবাদ’ থেমে গেছে। অনেকেই নিজেদের ভুল স্বীকার করে আমাদের সঙ্গে চলে এসেছেন। সবাই মিলে একসঙ্গে আবির মেখেছেন।’ তিনি বলেন, ‘এখন আর রেষারেষির সময় নয়। সন্দেশখালির মানুষ শান্তি চায়। শান্তির জন্য ক্ষমা, ভালোবাসার ওপর তো কিছু নেই।’ ফল ঘোষণার পরে বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের দেখা মিলছে না। সন্দেশখালিতেও তিনি পা রাখেন নি। এমনকী বসিরহাটে যে আবাসনে রেখা থাকতেন সেটি তালা বন্ধ। ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না রেখাকে। সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, ‘অনেক বিজেপি নেতা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। ৫ মাস পরে আজ প্রথম সন্দেশখালিতে কোন বিজেপি নেতা কর্মীর দাপাদাপি নেই, মিডিয়ার আনাগোনা নেই।’ সন্দেশখালির মানুষ অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছে।
❤ Support Us