- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- নভেম্বর ১৪, ২০২৩
চাকরি নেই, তাও বিশ্বভারতীতে রয়েছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, অবাক করা নীরবতায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ !
গত ৮ নভেম্বর বিশ্বভারতী বিশ্ববিভ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর চাকরির মেয়াদ শেষ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি এখন প্রাক্তন। তবে সেটা বোঝার উপায় নেই। কারণ বিতর্কিত এই প্রাক্তন উপাচার্য এখনও সরকারি বাসভবন ছাড়েননি। শুধু তাই নয়, তিনি সমস্ত রকমের সরকারি সুবিধাও ব্যবহার করে চলেছেন। নিজেকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম দায়িত্বশীল, নিয়মরক্ষক বলে দাবি করা বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর এই কাজে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, যে বিতর্কে জড়িয়েছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী স্বয়ং।
প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এখনও রয়েছেন “পূর্বিতা”য়। ব্যবহার করছেন উপাচার্যের সমস্ত সুযোগ সুবিধা। আর এই নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রাক্তন উপাচার্যের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নিয়মিত বৈঠক এবং দেখা করতে যাওয়ায় শান্তিনিকেতনের শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে এই প্রসঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন করে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। সব বিষয়ে যিনি অন্যের ত্রুটি চিহ্নিত করে, অন্যদের সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন সেই বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও চুপ।
তবে সবসময় যিনি সবার খুঁত ধরেছেন এবার তাঁর ত্রুটিতে সোমবার প্রাক্তন উপাচার্যের এমন আচরণের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বোলপুর শান্তিনিকেতনের সাধারণ মানুষের একাংশ। ভাতৃদ্বিতীয়ার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন থেকে শুরু করে সবকিছুই স্বাভাবিক হওয়ার কথা রয়েছে। বিদ্যুৎবাবুর এহেন আচরণে ফের শান্তিনিকেতনে অশান্তির ঘ্রাণ পাচ্ছেন সকলেই। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী ও অধ্যাপকদের একাংশের দাবি, প্রাক্তন উপাচার্য পায়ে পা লাগিয়ে মেয়াদ শেষ হবার পরও বিবাদ লাগানোর চেষ্টা করছেন, কয়েকজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক তাতে মদত দিচ্ছেন। প্রাক্তন উপাচার্য তাঁদের সঙ্গেই পূর্বিতায় বৈঠক করছেন, তাঁরাও সেখানে প্রাক্তনের সঙ্গে দেখা করছেন নিয়মিত। অধ্যাপক সংগঠন অবশ্য পূর্বেই প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ কেন সরকারি বাংলোয় রয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বর্তমান উপাচার্যকে ইমেলে অভিযোগ করেছেন।
এই প্রসঙ্গে অধ্যাপক সংগঠনের দাবি, “বিশ্বভারতীর ১০ জনের অধিক নিরাপত্তারক্ষী থেকে সমস্ত ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রাক্তন উপাচার্য এখনও পাচ্ছেন, এটা সম্পূর্ণ নজিরবিহীন এবং বেআইনি দখলদারি।’’ সম্প্রতি পাঁচটি মামলায় উপাচার্যকে তলব করে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। সেই নোটিসের পরিপ্রেক্ষিতেই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত নির্দেশ দেন গ্রেপ্তারির মত কোনও কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবে না পুলিশ। শুধু এক একটি মামলার জন্য এক ঘণ্টা করে প্রাক্তন উপাচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে পুলিশ। ১৪ নভেম্বরের পরিবর্তে ২০ এবং ২২ নভেম্বর বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতে পারবে পুলিশ এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশি জেরার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসভবনে আরও বেশ কিছুদিন প্রাক্তন উপাচার্য থাকবেন বলেই শোনা যাচ্ছে। তবে এই সুবিধা তিনি যে পেতে পারেন না সেই দাবি উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং শান্তিনিকেতনের সাধারণ মানুষের মধ্যে।
❤ Support Us