- এই মুহূর্তে দে । শ
- জুন ৬, ২০২৪
সুনিশ্চিত করতে হবে নাগরিক নিরাপত্তা, ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজ্যকে কড়াবার্তা হাইকোর্টের
বৃহস্পতিবার বিজেপির পূর্ব বর্ধমান জেলা কার্যালয়ে হামলার ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল রাজনীতির অঙ্গন। বিজেপির অভিযোগের তীর তৃণমূলের দিকে। তৃণমূলের দাবি, এটা বিজেপির নিজেদের ঝামেলা

বৃহস্পতিবার বিজেপির পূর্ব বর্ধমান জেলা কার্যালয়ে হামলার ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল রাজনীতির অঙ্গন। বিজেপির অভিযোগের তীর তৃণমূলের দিকে। তৃণমূলের দাবি, এটা বিজেপির নিজেদের ঝামেলা। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের বাইক বাহিনী এদিন বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ আচমকা হামলা চালায় বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে। কয়েকটি মোটরবাইক ও দলের জেলা সভাপতির গাড়ি ভাঙচুর করার চেষ্টা হয়। তৃণমূলিদের ছোঁড়া ইঁটের আঘাতে কয়েকজন বিজেপি কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করলেন দলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা। তাঁর কথায়, ‘কেরোসিনের জার, আগ্নেয়াস্ত্র-সহ তৃণমূলের বাইক বাহিনী এদিন জেলা অফিসে ঢুকে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। সেই সময় সময় বিজেপির অনেক নেতা-কর্মী অফিসেই ছিলেন। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের জন্য পার্টি অফিসে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, হামলা হতেই বিজেপির পার্টি অফিস থেকে দলের নেতা-কর্মীরা বেরিয়ে এসে পাল্টা প্রতিরোধ করেন। তখন এলাকা ছেড়ে চলে যায় হামলাকারীরা। বিজেপির পাল্টা আক্রমণে কয়েকজন হামলাকারী জখম হয়েছে বলে সূত্রের খবর। ঘটনার খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপির পার্টি অফিসের সামনে হাজির হয়। ঘিরে ফেলে গোটা এলাকা। উত্তেজনা থাকায় এলাকায় পুলিশের টহল শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনা সম্পর্কে ‘বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব’কেই কাঠগড়ায় তুলেছেন তৃণমূলের আদিবাসী সেলের রাজ্য চেয়ারম্যান দেবু টুডু। তাঁর কথায়, ‘বর্ধমান থেকে বিজেপি মুছে গেছে। ওদের প্রার্থী দিলীপ ঘোষইতো হেরে গিয়ে নিজের দলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলেছেন। যাকে হামলা বলা হচ্ছে আসলে তা ওদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা। এরসঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। পুলিশ তদন্ত করলেই ব্যাপারটা জানতে পারবে।’ পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
ভোট মিটতেই রাজ্যের শাসকদলের বিরু্দ্ধে হামলার একাধিক অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসার চিরাচরিত ধারা মেনেই হচ্ছে এই হিংসা বলে অভিযোগ বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক কর্মীদের। ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের শুরুতেই, নির্ঘন্ট প্রকাশের সময়, নির্বাচন এবং নির্বাচন পরবর্তী সময়ে হিংসা রুখতে একাধিক কড়া পদক্ষেপের ঘোষণা করেছিলেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। সেই মতোই, ভোট পর্ব মিটলে রাজ্য এখনো চারশো কম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন আছে। শুধু বর্ধমান নয়, মালদা, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার ,দক্ষিণবঙ্গের একাধিক অঞ্চলে শুরু হয়েছে ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসা। শাসক দলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ বেশী, যদিও তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, ভোট পরবর্তী হিংসা নয়, ওগুলো সবই গোষ্ঠী কোন্দল ।
সপ্তম দফার ভোটের ঠিক আগে এবং পরে উত্তপ্ত হয়েছে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের ভাঙড়, মুর্শিদাবাদ, মালাদর বিভিন্ন জায়গায়। উদ্ধার হয়েছে বোমা, আগ্নেয়অস্ত্র। ভাঙড়ে অশান্তির জন্য অভিযোগ উঠেছে বিরোধী আইএসএফ এর দিকে। বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিশ ওখানে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে।
ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে ইতিমধ্যেই মামলা হয়েছে আদালতে।মামলাকারীদের আইনজীবী সুস্মিতা দত্ত সাহা এদিন আদালতে বলেন, ভোট পরবর্তী হিংসায় এখনো পর্যন্ত ১১জন রাজনৈতিক কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখে এবার কড়া পদক্ষেপ নিল কলকাতা হাইকোর্ট । মামলার শুনানিতে বিচারক কৌশিক চন্দের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বলা হয়, ‘বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা অপরিচিত শব্দ বন্ধ নয়। সরকার যদি রাজ্যবাসীর জীবন রক্ষায় ব্যর্থ হয়, তাহলে আদালত উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেবে।সব রাজ্যবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক, এটাই কাম্য।’
কলকাতা হাইকোর্টে বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, লোকসভা পরবর্তী সময়ে হিংসার ঘটনা ঘটলে, সরাসরি রাজ্যের ডিজিকে ইমেল মারফত অভিযোগ জানাতে পারবেন আক্রান্ত ব্যক্তি।অভিযোগ আইন গ্রাহ্য হলে, সরাসরি স্থানীয় থানাকে এফআইআর করার নির্দেশ দিতে হবে ডিজিকে । ভোট পরবর্তী হিংসায় কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ, তা লিখিত রিপোর্টে পেশ করতে হবে ডিজির কাছে। দায়ের হাওয়া এফআইআর এর কপি ওয়েবসাইটে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোর্টের তরফে। রাজ্য পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী যাতে অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত পদক্ষেপ করে তারও নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট।
❤ Support Us