- এই মুহূর্তে দে । শ
- ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
আন্দোলনে জাতীয় সড়ক, রেল অবরোধ নয়। কুড়মি সমাজকে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

জাতিসত্তার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। বারবার সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে জনজীবন ব্যতিব্যস্ত করে দিয়েছে। দাবি আদায়ের জন্য আগামী ২০ ডিসেম্বর আবার আন্দোলনে নামতে চলেছে কুড়মি সমাজ। সড়ক ও রেল অবরোধের পরিকল্পনা রয়েছে। আন্দোলনে নামার আগেই কুড়মি সমাজকে সতর্ক করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছে, আন্দোলনে নামলেও জাতীয় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করা যাবে না।
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এক নির্দেশে জানিয়েছে, আন্দোলনে কুড়মি সমাজ জাতীয় সড়ক ও রেল অবরোধ করতে পারবে না। এই নির্দেশ অমান্য করে জাতীয় সড়ক ও রেল অবরোধ করলে রাজ্য সরকার উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবে।
আদিবাসী তকমার দাবিতে বছরের পর বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে কুড়মি সম্প্রদায়। কুড়মিদের দাবি তারা বহিরাগত নয়। শতকের পর শতক ধরে ছোটনাগপুর মালভূমির উচুঁ নিচু পাহাড়ি জল জঙ্গলেই তাঁদের বসবাস। মূলত ঝাড়খন্ড, বিহার, ওড়িশা ও এ রাজ্যের পশ্চিমের জেলাগুলিতে কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। এ রাজ্যের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার জনসংখ্যার একটা বড় অংশ কুড়মি সম্প্রদায়ের ।
কুড়মিদের নিজস্ব ধর্মাচরনের রেওয়াজ রয়েছে। আদি অনন্ত কাল ধরে তাঁরা প্রকৃতির উপাসক। পাহাড়, গাছ, মাটি,জল তাঁদের উপাস্য দেবতা। প্রতিটি গ্রামে একটি প্রাচীন গাছকে কেন্দ্র করে থাকা নিজস্ব গরাম থানে বছরের নির্দিষ্ট দিনে প্রকৃতির পুজো করেন কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন। কুড়মিদের নিজস্ব কুড়মালি ভাষাও রয়েছে। রয়েছে নিজস্ব নাচ ও গানের আঙ্গিক । এই সম্প্রদায়ের মূল উৎসব করম উৎসব। স্বাধীনতার পর গুরুত্ব হ্রাস পেলেও প্রতিটি গ্রামে কুড়মিদের নিজস্ব মোড়ল কেন্দ্রীক বিচার ও শাসন ব্যবস্থা রয়েছে।
অর্থনৈতিক ও শিক্ষার দিক থেকে পিছিয়ে থাকা এই সম্প্রদায়ের মানুষের দাবী দেশ স্বাধীনের আগে পর্যন্ত হওয়া জনগনায় তাঁদের আদিবাসী হিসাবে চিহ্নিত করে এসেছে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার। পরবর্তীতে অজানা কারনে ১৯৫০ সালে তাঁদের সেই তকমা ঘুচে যায়। পরবর্তীতে ১৯৫১ সাল থেকে প্রতি দশ বছর অন্তর জনগননায় কুড়মিরা সাধারণ জাতি হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। গত শতকের সত্তরের দশকে প্রথম কুড়মিরা আদিবাসী হিসাবে স্বীকৃতির দাবী তুলতে শুরু করে। পরবর্তীতে তাদের অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেনীভূক্ত করা হলেও আদিবাসী তকমা দেওয়া হয়নি।
কুড়মিদের ব্যাপারে রাজ্যের কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠায় কেন্দ্র। কিন্তু অভিযোগ রাজ্য সরকার এখনও সেই বিস্তারিত তথ্য কেন্দ্রের কাছে পাঠায়নি। আবার আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কুড়মি সমাজ।
❤ Support Us