- এই মুহূর্তে দে । শ
- ডিসেম্বর ৪, ২০২৩
জাতীয় সংগীত অবমাননা মামলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্থগিতাদেশ আদালতের
জাতীয় সংগীত অবমাননা মামলায় হাই কোর্টে বড় ধাক্কা রাজ্যের। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্থগিতাদেশ, ১১ বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ নয়, সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এই নির্দেশ দিয়েছেন। জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন। আচমকা জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া শুরু করা যায় না। বিজেপি বিধায়কদের করা মামলায় এমনটাই মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্ট। জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননার অভিযোগ তুলে ১১ জন বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল লালবাজারে। তাকে চ্যালেঞ্জ করেই উচ্চ আদালতে যান বিধায়কেরা। আদালত মৌখিক ভাবে প্রথমে জানিয়ে দেয়, কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না।
হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা বিষয়ক এই মামলাটির শুনানি চলাকালীন বিচারপতির মন্তব্য, “হঠাৎ করে জাতীয় সঙ্গীত শুরু করা যায় না। এখানে যদি এখন কেউ আদালতের মধ্যে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে শুরু করেন, তা হলে তো সব কাজ বন্ধ করে সবাইকে দাঁড়িয়ে পড়তে হবে। এমনটা করা যায় নাকি ! অবশ্যই জাতীয় সঙ্গীতের জন্য একটা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলা উচিত।” এর পর আদালত আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই মামলায় স্থগিতাদেশ দেয়।
এই ঘটনার সূত্রপাত গত বুধবার বিধানসভায়। বিধানসভায় বি আর আম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশে তৃণমূলের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নেতৃত্বে অম্বেডকর মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসেন শাসকদলের মন্ত্রী, বিধায়কেরা। ওই একই সময়ে তৃণমূলের বিক্ষোভস্থল থেকে মাত্র ৩০ মিটার দূরে বিধানসভার মূল প্রবেশদ্বারের সিঁড়িতে বসে পাল্টা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিজেপি বিধায়কেরা। সরকার-বিরোধী স্লোগান দিচ্ছিল বিজেপি, পাল্টা স্লোগান দিচ্ছিল তৃণমূল। এরই মধ্যে ৫টা বেজে যাওয়ার মুখে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখন আমরা জাতীয় সংগীত গাইব। অভিযোগ, তৃণমূল বিধায়কেরা যখন জাতীয় সঙ্গীত গাইছিল সেই সময় বিজেপি শিবির থেকে স্লোগান শোনা যাচ্ছিল। এর পরেই তৃণমূলের তরফে ১২ জন বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে বিধানসভার স্পিকারের কাছে একটি অভিযোগপত্র জমা পড়ে তৃণমূলের তিন বিধায়কের তরফে। ওই ১২ জনের তালিকায় বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের নামও ছিল। পরে সেই নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত ১১জন বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে।
এই ১১ জন বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র লালবাজারে পাঠিয়ে দেন স্পিকার। সেখান থেকে বিধায়কদের নোটিস পাঠিয়ে তলব করে কলকাতা পুলিশ। সোমবার লালবাজারে তাঁদের হাজিরা দেওয়ার কথা। তার আগে এফআইআরটিকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বিজেপি বিধায়কেরা।
শুনানিতে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এমন নয় যে, যখন তৃণমূল বিধায়ক, মন্ত্রীরা জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া শুরু করেন, তখন থেকে বিজেপি বিধায়কেরাও স্লোগান দিতে শুরু করেন। তাঁরা বিধানসভায় আগে থেকেই স্লোগান দিচ্ছিলেন। ফলে জাতীয় সঙ্গীতের জন্য নিয়ম মানা দরকার। এর পর শুনানি স্থগিত হয়ে যায়। তার পর দুপুর দুটোয় আবার শুনানি শুরু হয় এবং সেই শুনানিতে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জাতীয় সংগীত অবমাননার মামলায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।
❤ Support Us