Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • অক্টোবর ২০, ২০২৩

ভারত-কানাডা কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের মধ্যেই এবার কানাডা ভারত থেকে ৪১ জন কূটনীতিককে প্রত্যাহার করে নিল

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
ভারত-কানাডা কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের মধ্যেই এবার কানাডা ভারত থেকে ৪১ জন কূটনীতিককে প্রত্যাহার করে নিল

ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সমর্কের ক্রমশই অবনতি হচ্ছে। খালিস্তানি জঙ্গি খুনের ঘটনার পর থেকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর ভারতের বিরুদ্ধে বক্রোক্তির পর থেকে উভয় দেশের এই সম্পর্কের অবনমন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার কানাডা জানিয়েছে যে তারা ভারত থেকে ৪১ জন কূটনীতিককে প্রত্যাহার করেছে। এই ঘটনার পিছনে কানাডা যে যুক্তি খাড়া করেছে তাতে তারা বলেছে, কানাডার মাটিতে একজন খালিস্তানি সন্ত্রাসীকে হত্যার বিষয়ে তিক্ত বিরোধের ফলস্বরূপ তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কানাডার বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রী মেলানি জোলি বলেছেন, ভারত শুক্রবারের মধ্যে কানাডার ২১ জন কূটনীতিক এবং তাদের পরিবার ব্যতীত সকলের জন্য “অনৈতিকভাবে” কূটনৈতিক অনাক্রম্যতা প্রত্যাহার করার পরিকল্পনা করেছে, অটোয়াকে অন্যদের প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছে ভারত।

জোলির বক্তব্য, “আমরা ভারত থেকে আমাদের দেশের নিরাপদ প্রস্থানের সুবিধা দিয়েছি। এর মানে আমাদের কূটনীতিক এবং তাদের পরিবার এখন ভারত ছেড়ে চলে গেছেন।”

গত মাসে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো প্রকাশ্যে খালিস্তানি সন্ত্রাসী হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার সঙ্গে ভারতীয় গোয়েন্দাদের যুক্ত করে সংসদে বিবৃতি দেওয়ার পর থেকে ভারত ও কানাডার মধ্যে সম্পর্ক ভাঙতে শুরু করেছে। তবে জাস্টিন ট্রুডোর অভিযোগ ভারত প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছে।

নিজ্জার, ভারত থেকে আলাদা একটি পৃথক শিখ রাষ্ট্রের পক্ষে ছিলেন, তাঁকে সন্ত্রাসবাদ এবং হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ভারতী সরকারের  ওয়ান্টেড তালিকায় ছিলেন তিনি।

জোলি বুধবার বলেন, “৪১ জন কূটনীতিকের কূটনৈতিক অনাক্রম্যতা প্রত্যাহার করা কেবল নজিরবিহীন নয়, আন্তর্জাতিক আইনেরও পরিপন্থী,”  কিন্তু কানাডা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এমন পরিকল্পনা করেনি, পরিস্থিতি আরও খারাপ না হয়, তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”  তিনি আরও বলেন, “কানাডা আন্তর্জাতিক আইন রক্ষায় যত্নবান থাকবে, যা সমস্ত জাতির জন্য প্রযোজ্য এবং ভারতের সঙ্গেও সম্পর্ক বজায় রাখবে।” তবে ৪১ জন কুটনোটিককে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার স্বপক্ষে জোলির যুক্তি, “এখন আমাদের দেশে কূটনীতিকদের প্রয়োজন এবং আমাদের একে অপরের সঙ্গে কথা বলা দরকার।”

কানাডা তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য ভারতকে আহ্বান জানিয়েছে কিন্তু নয়াদিল্লি অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং কানাডিয়ানদের জন্য ভিসা পরিষেবা বন্ধ করার মতো পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে। এই ঘটনায় একজন ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কারও করেছে অটোয়া।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর গত মাসে নিউইয়র্কে বলেছিলেন যে ভারত কানাডার দ্বারা উপস্থাপিত যে কোনও প্রমাণ পরীক্ষা করতে চায়। শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এস জয়শঙ্কর বলেন, “আমরা আসলে কানাডিয়ানদের সংগঠিত অপরাধের নেতৃত্ব সম্পর্কে প্রচুর তথ্য দিয়েছি এবং বারবার জানিয়েছি যে এই অপরাধ কানাডার বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।”

জয়শঙ্কর বলেছেন, “আমাদের এমন একটি পরিস্থিতিতে ফেলা হয়েছে যেখানে প্রকৃতপক্ষে আমাদের কূটনীতিকদেরই হুমকি দেওয়া হয়েছে, আমাদের কনস্যুলেটে হামলা করা হয়েছে এবং প্রায়শই মন্তব্য করা হয়েছে এই সন্ত্রাসী খুনের ঘটনায় আমাদের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ রয়েছে।”

ভারত সরকার এই হত্যাকাণ্ডের জন্য কানাডার অভিযোগকে “অযৌক্তিক” বলে অভিহিত করেছে এবং কানাডায় “ভারত-বিরোধী কার্যকলাপের বৃদ্ধির কারণে” কানাডার কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলে ভারতীয়দের  যাতায়াত না করার জন্য পরামর্শ দিয়েছে। ভারতও সাময়িকভাবে কানাডায় ভিসা আবেদন প্রক্রিয়াকরণ বন্ধ করে দিয়েছে।

নিজ্জার ১৯৯৭ সালে কানাডায় অভিবাসন করেছিলেন এবং ২০১৫ সালে কানাডিয়ান নাগরিক হয়েছিলেন। গত  জুন মাসে ভ্যাঙ্কুভারের কাছে একটি শিখ মন্দিরের পার্কিং লটে দুই মুখোশধারী আততায়ীর গুলিতে নিজ্জার নিহত হন।

কানাডায় প্রায় ৭ লক্ষ ৭০ হাজারের মতো শিখ বসবাস করেন, যারা কানাডার জনসংখ্যার প্রায় দুই শতাংশ। এদেরই একটি অংশ পৃথক খালিস্তানের রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান জানিয়েছে। শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন মূলত ভারতের মধ্যেই শেষ হয়েছে, ১৯৮০-র দশকে নিরাপত্তা বাহিনী পাঞ্জাব রাজ্যে একটি বিদ্রোহ দমন করতে মারাত্মক শক্তি ব্যবহার করেছিল।


  • Tags:
❤ Support Us
Advertisement
2024 Lakshman Seth
Advertisement
2024 Debasish
Advertisement
error: Content is protected !!