Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • মে ২৭, ২০২৩

রাজ্যের আমলা নিয়োগে বাধ্যতামূলক বাংলা পরীক্ষার নির্দেশ প্রত্যাহারের আবেদন কীসের স্বার্থে ? কেন্দ্রের চিঠি নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন

রাজ্যের আমলা নিয়োগে বাধ্যতামূলক বাংলা পরীক্ষার নির্দেশ প্রত্যাহারের আবেদন কীসের স্বার্থে ? কেন্দ্রের চিঠি নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন

অন্যান্য ভাষাভিত্তিক রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি পরীক্ষার্থীরা তাঁদের নিজেদের মাতৃভাষায় যাতে চাকরির পরীক্ষা দিতে পারে তার জন্য বিশেষভাবে উদ্যোগী রাজ্য সরকার। গত বছরেই প্রথম কলেজ সার্ভিস কমিশনের অধ্যাপক নিয়োগের পরীক্ষা সেট এর প্রশ্ন বাংলায় করা হয়। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে  ২০২৪ থেকে ডব্লিউবিসিএসে ৩০০ নম্বরের বাধ্যতামূলক বাংলার পরীক্ষা চালু করার সিদ্ধান্ত  গ্রহণ করে নবান্ন । গত এপ্রিল মাসে এনিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এখন এ পদক্ষেপ নিয়েই শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক। সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত নতুন আকারে বৃদ্ধি পাওয়ার।

সম্প্রতি কেন্দ্রের সংখ্যালঘু ভাষা দফতরের পক্ষ থেকে একটি চিঠি রাজ্যেকে পাঠানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে , ভাষাগত ভাবে প্রান্তিক জনসমাজের অংশের মানুষের ক্ষোভ প্রশমনে যেন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ ব্যাপারের তাঁদের ক্ষোভের আঁচ অবশ্য কদিন আগেই পাওয়া গিয়েছিল। যখন নবান্ন থেকে ঘোষণা করা হয় ডব্লিউবিসিএসের পরীক্ষায় ৩০০ নম্বরের বাংলা বাধ্যতামূলকভাবে দিতে হবে, তখন অনেকে তার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। জনজাতিদের মতে, এমন সিদ্ধান্তে তাঁদের ভাষা ও সংস্কৃতির অধিকার বিপন্ন হবে। যা সংবিধান বিরুদ্ধ। তাঁরা বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। তাতে কোনো কাজ না হওইয়ার রাজ্যের সংখ্যালঘু কমিশন কেন্দ্রীয় সরকারকে তাঁদের সমস্যার কথা জানায়। তাঁদের বক্তব্য শোনার পরই পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে পত্র প্রেরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করে কেন্দ্র।

 

ডব্লিউবিসিএস রাজ্যের শীর্ষ প্রশাসনিক আমলা  নিয়োগের পরীক্ষা।  বহু ক্ষেত্রেই আমলাদের গ্রামাঞ্চলে যেতে হয়। সেক্ষেত্রে জনসংযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । স্থানীয় ভাষায় দক্ষতা না থাকলে এক্ষেত্রে অসুবিধায় পড়তে হয়।  একথা মাথায় রেখেই , ভারতে অন্যান্য রাজ্য তাঁদের মূল ভাষাকে গুরুত্ব দিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে । পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘদিন  ধরে তা ছিল না। সম্প্রতি নবান্ন যে  সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, তা নিয়ে  সরব হয়েছে বিভিন্ন সংখ্যালঘু সংগঠন। যা রাজ্যের বাংলাভাষী  পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে  মনে করে বাংলা পক্ষের মত বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠন। তাঁদের প্রশ্ন,  অন্যান্য রাজ্যে সেখানকার প্রধান ভাষায় পরীক্ষা দেওয়া গেলে বাংলার ক্ষেত্রে বিপরীত চিত্র দেখা যায় কেন ?  বিষয়টি ফেলে দেওয়ার নয়।কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন পরীক্ষায়  ইংরাজি ও হিন্দি বাধ্যতামূলকভাবে জানতে হয়, গুজরাট , কর্নাটক, মহারাষ্ট্র ও  তামিলনাড়ুর ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট রাজ্যের প্রধান ভাষায় পরীক্ষা দেওয়া বাধ্যতামূলক । সেসব ক্ষেত্রে  ভাষাগতভাবে প্রান্তিক অংশের ওপর দমন-পীড়নের প্রশ্ন ওঠে না। তাই  কেন্দ্রের চিঠি প্রেরণের অভিপ্রায় সন্দেহের বাইরে রাখা যায় না। এটা কী ভাষাগত আধিপত্য স্থাপনের নতুন কোনো পরিকল্পনা?


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!