Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • এপ্রিল ১, ২০২৩

তিলজলার পুনরাবৃত্তি গাজোলে।নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলাকে ঘিরে কেন্দ্র- রাজ্য সংঘাত। বচসায় প্রিয়ঙ্ক-সুদেষ্ণা

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
তিলজলার পুনরাবৃত্তি গাজোলে।নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলাকে ঘিরে  কেন্দ্র- রাজ্য সংঘাত। বচসায় প্রিয়ঙ্ক-সুদেষ্ণা

কেন্দ্র ও রাজ্যের কমিশনের সংঘাত শহর কলকাতার সীমা ছাড়িয়ে জেলায় ছড়িয়ে পড়ল। মালদহের গাজোলে নির্যাতিতা শিশুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তার বাড়ির বাইরে তপ্ত বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়লেন দুই শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রধান। শুধু তাই নয়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত হছেন ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী, মহিলা সমিতির সভানেত্রী ছন্দা চৌধুরী ও তাঁদেরর দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের সমর্থনে তাঁরা ধর্নায় বসেছেন এবং রাজ্য প্রতিনিধির বিরুদ্ধে বারবার শ্লোগান দিচ্ছিলেন। পিছিয়ে নেই তৃণমূল । খবর পেয়ে দ্রুত এলাকায় পৌঁছান শাসক দলের জেলা পরিষদের সদস্য সাগরিকা সরকার। দুই দলের বচসায় এলাকায় উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, সাগরিকা-সহ তৃণমূলের সদস্যেরা যখন ঘটনাস্থলে আসেন পৌঁছন তখন কেন্দ্রীয় শিশু সুরক্ষার দল নির্যাতিতার বাড়ির প্রবেশ করছিল। রাজ্যের শিশু সুরক্ষার কমিশনের প্রতিনিধিরা সে মুহুর্তে বেরিয়ে আসছিলেন। সেখানে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের দেখে সদলবলে ঝাঁপিয়ে পড়েন সাগরিকা। দু’পক্ষর মধ্যে শুরু হয় হাতাহাতি, ধস্তাধস্তি । কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিনা প্ররোচনায় প্রথমে গণ্ডগোল শুরু করার জন্য সাগরিকাকে তাড়া করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থল থেকে ভয়ে তিনি পালিয়ে যান। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

কয়েক দিন আগে মালদার গাজোলে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্কুলের মধ্যেই ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। সেই নিয়েই তদন্ত করতে শনিবার সকালে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের। কিন্তু তার প্রায় আধ ঘণ্টা আগেই সেখানে পৌঁছয় রাজ্যের প্রতিনিধি দল।

সংবাদ সংস্থার খবর, নির্যাতিতার বাড়ির সামনে পৌঁছে প্রিয়ঙ্ক সুদেষ্ণা এবং রাজ্য কমিশনের বাকিদের বেরিয়ে যেতে বলেন। তিনি জানান, নাবালিকা ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে তিনি আলাদা করে কথা বলবেন। ঘটনার ১০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর রাজ্যের দল কেন সেখানে এসেছেন, সে ব্যাপারে প্রশ্ন তোলেন প্রিয়ঙ্ক। তিনি বলেন, রাজ্যের দল যত ক্ষণ না বাইরে বেরোচ্ছেন তত ক্ষণ তিনি বাড়ির ভিতরে ঢুকবেন না। সুদেষ্ণা অবশ্য বলছন,শিশু নিপীড়নের ব্যাপারে রাজ্য এবং কেন্দ্রের কমিশনের একসঙ্গে কাজ করার কথা। কিন্তু কেন্দ্রীয় দলের সদস্যড়া বার বার বাধা দেওয়ায় তা ব্যাহত হচ্ছে।

প্রিয়ঙ্ক বলেন, শুক্রবারের পর শনিবারও রাজ্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় কমিশনের কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে, নির্যাতিতা এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। রজ্যের প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা চান না যে নিরেপেক্ষ ভাবে তদন্ত হোক। মাত্র কুড়ি কিলোমিটার দূরে শিশু কল্যাণ সমিতির অফিস কিন্তু ওঁরা ১০ দিন পর। তাঁদের সময় হল আসার। শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রধানের ধারণা, কোনো কিছু গোপন করা হচ্ছে। বাংলার কথা দিল্লি পর্যন্ত যাতে না পৌঁছয় তাই বাধা দেওয়া হচ্ছে। তিলজলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন সেখানেও একই জিনিস হয়েছে। আমাদের ঢুকতে না দেওয়া পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব।

সুদেষ্ণা রায় বলেছেন আমরা আমাদের কাজ ঠিকই করছি। তদন্তের রিপোর্ট পেয়ে সেই রিপোর্টের সত্যাসত্য সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে এসেছি। আমি ওঁদের বিরুদ্ধে কিছু বলছি না। কিন্তু যা করছেন সেটা ঠিক নয়। ো কাউকে বাধা দিইনি। রাজ্য-কেন্দ্র একসঙ্গে কাজ করার কথা। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিশনের চেয়ারম্যান অভব্য আচরণ করছেন। আমাকে ‘গেট আউট’ বলে বেরিয়ে যেতে বলছেন। কালকেও একই জিনিস হয়েছে। এটা চলতে পারে না।

নির্যাতিতা নাবালিকার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন সুদেষ্ণা। তিনি বলেন , অভিযুক্ত তিন জনকেই গ্রেফতার। এখন ওর অবস্থা আর প্রশ্ন করা উচিত হবে না। মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছে। সে কারণে আমি বাইরে বসে রয়েছি। বার বার এ রকম এক জন নির্যাতিতাকে ঘটনার বিবরণ করতে বলা কি ঠিক?পাশাপাশি বিজেপি বিধায়কের ঘটনাস্থলে থাকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সুদেষ্ণা। কিছু ক্ষণ পর নির্যাতিতার বাড়ি থেকে বাইরে বেরিয়ে যান তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা। কথা বলতে ভিতরে ঢোকেন কেন্দ্রীয় দল। সেই সময়ই মারামারি বাধে তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে।

শিশু সুরক্ষা নিয়ে বার বার কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সংঘাত দেখা দিচ্ছে। পক্সো আইন অনুযায়ী শিশুর যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্যের সহযোগিতা কাম্য কিন্তু তিলজলা হোক বা গাজোল– কোনো ক্ষেত্রেই মতৈক্যে আসতে পারছেন  না দুই কমিশনের আধিকারিকরা। সঙ্গে জঅড়িয়ে যাচ্ছে দলীয় রাজনীতির কোন্দল। প্রত্যেকেই বিস্মৃত হচ্ছেন নির্যাতিতা নাবালিকা বা তাঁর পরিবারকে নিয়ে কোনো সংকীর্ণ রাজনীতি কাম্য নয়। কিন্তু ভোটমুখী বঙ্গে কে  কাকে জমি ছাড়ে ? তাই শিশু নিরাপত্তাও দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!