- প্রচ্ছদ রচনা
- অক্টোবর ২২, ২০২২
টেট আন্দোলন ভাঙা নিয়ে উত্তাল কলকাতা, সমালোচনা বিশিষ্টদের, রাজপথে নাগরিক মঞ্চের সভা ও মিছিল

বৃহস্পতিবার রাতে সল্টলেকের করুণাময়ীতে চাকরির দাবিতে অবস্থানরত টেট প্রার্থীদের ওপর পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদে পথে বাংলার বিদ্বজ্জনদের ।মিছিলে শামিল হয়েছেন শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, চলচ্চিত্র জগতের বহু বিশিষ্ট। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বিধাননগরে অনশনরত টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের ওপরে পুলিশের বলপ্রয়োগের প্রতিবাদে শনিবার বিকেল চারটে নাগাদ নাগরিক মিছিল ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে থেকে শুরু হয়।
মিছিলে অংশ নিয়েছেন সঙ্গীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র, অভিনেতা বাদশা মৈত্র, অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র, আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়, পরিচালক অনীক দত্ত, বিদ্যুৎ ঘোষ, কবি মন্দাক্রান্তা সেন প্রমূখ। গানে, কবিতায়, স্লোগানে মিছিলে পা মিলিয়েছেন সাধারণ মানুষও। গানের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন মিছিলে অংশগ্রহণকারী সাধারণ মানুষ।নাগরিক মিছিলকে সমর্থন জানিয়ে মিছিলের শেষে পা মিলিয়েছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। সেই সঙ্গে মিছিলে উপস্থিত রয়েছেন বামফ্রন্টের শরিক দলের নেতৃত্ব।
অভিনেতা বাদশা মৈত্র বলেন, গোটা রাজ্যজুড়ে যে দুর্নীতি চলছে সেটা দিনের আলোর মতো পরিস্কার। যাঁরা অন্যায় করল, বিষয়টি জটিল করল, তাঁরাই পুলিশ পাঠিয়ে যাঁরা নায্য প্রার্থী তাঁদের তুলে দিচ্ছে রাস্তা থেকে। এটা তো হতে পারে না। এটা তো হতে পারে না । যাঁদের টাকা দিয়ে চাকরি দেওয়া হল তাঁরা যে স্কুলে পড়াবে সে স্কুলে কারা পড়তে যাবে? যদিও শহর জুড়ে প্রতিবাদ আর মিছিল নিয়ে বেসামাল তৃণমূল নিজেদের মুখ রক্ষায়, দলের সাংসদ সৌগত রায়, বলেছেন, এটা বামেদের মিছিল । এদের গুরুত্ব নেই। এদের তো বিধানসভায় আসন নেই । সরকার যথাযথ প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিয়েছে ।
শুক্রবার সকাল থেকে বাম ছাত্র–যুব সংগঠনের সদস্যরা রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হন । কলকাতায় মিছিল বার করে এসএফআই, ডিওয়াইএফআই, বিজেপি ও কংগ্রেস। সল্টলেকে বিক্ষোভ দেখানোর সময় আটক করা হয় একাধিক এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই নেতাকে । এমনকি ডিওয়াইএফআই সভানেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জিকে টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় । মীনাক্ষী মুখার্জি, কলতান দাশগুপ্তদের আটক করার পর সন্ধ্যায় তাঁদের বিধাননগর উত্তর থানা থেকে মুক্তি দেওয়া হয় । তাঁদের থানায় নিয়ে যাওয়ার পর থেকে থানার ভিতরে এবং বাইরে বিক্ষোভ চলতে থাকে । গতকাল মিছিল নিয়ে রাজপথে নামে বিজেপিও । বিধায়িকা অগ্নিমিত্রা পালের নেতৃত্বে বিজেপি মিছিল বার করে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ থেকে । পরে রাজপথে নামে কংগ্রেসও । মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে মেয়ো রোডে মিছিল হয়। তিনি মেয়ো রোডে অবস্থানরত চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন।
অনশনরত টেট চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন বলপ্রয়োগ করে ভেঙে দেওয়ার ঘটনার সমালোচনা করেছিলেন রাজ্যের কিছু বিশিষ্টরা । গতকাল বিশিষ্টদের একাংশ একটি খোলা চিঠি লিখে ঘটনার নিন্দা করেছেন । চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘অনশনরত চাকরিপ্রার্থীদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য বিধাননগর পুলিশ বলপ্রয়োগ করে আন্দোলনকে ভাঙার চেষ্টা করেছে । এই ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে দেখেছি । এই ঘটনাকে আমরা ধিক্কার জানাই । পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে মনে করি ।’ রাজ্য সরকারকে উদ্দেশ্য করে লেখা ওই খোলা চিঠিতে সই করেছেন বিনায়ক সেন, অপর্ণা সেন, চিকিৎসক কুণাল সরকার, নাট্যব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী, সুমন মুখোপাধ্যায়, সুজন মুখোপাধ্যায়, বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য, রেশমী সেন, কৌশিক সেন, ঋদ্ধি সেন প্রমুখ ।
❤ Support Us