- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- অক্টোবর ২৬, ২০২৩
ইউনেস্কো হেরিটেজ বিশ্বভারতীর নামফলকে শুক্রবারের মধ্যেই ফেরাতে হবে রবীন্দ্রনাথের নাম, হুুশিয়ারি মমতার
শান্তিনিকেতন ইউনেস্কোর তরফে হেরিটেজ তকমা পাওয়ার পর সেখানে যে ফলক নাম ফলক বসানো হয়েছে তাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম থাকলেও নেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়টি উল্লেখ করে বিজেপিকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “পুজোর মধ্যে দেখলাম শান্তিনিকেতন ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পাওয়ার পর শান্তিনিকেতনে যে নাম ফলক বসানো হয়েছে তাতে রবীন্দ্রনাথের নাম নেই। পুজোর সময় দেখে আমি এই নিয়ে কিছু বলিনি। কালকের মধ্যে যদি এই নাম ফলকে রবীন্দ্রনাথের নাম না আসে তাহলে আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার থেকে রবীন্দ্রনাথের ছবি গলায় ঝুলিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে শান্তিনিকেতনের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু হবে। রবীন্দ্রনাথ বিশ্বভারতী ও শান্তিনিকেতনের স্রষ্টা। কেন তাঁর নাম এই নাম ফলকে থাকবে না”, এই প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির বিরুদ্ধে ইতিহাস বদলে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন,”এটা একটা তুঘলকি রাজত্ব চলছে। রবীন্দ্রনাথ, নেহরু, আম্বেদকর,রাজেন্দ্রপ্রসাদের নাম বিজেপি মুছে দিতে চাইছে। আগে, তারা (বিজেপি) বলত মমতাজি রাজ্যে দুর্গাপূজা করতে দেন না। এখন যেহেতু দুর্গা পূজা ইউনেস্কোর হেরিটেজ ট্যাগ পেয়েছে, বিজেপি সভাপতি রাজ্যে এসেছেন এবং একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, টিএমসিকে শেষ করা দরকার। আমি সবাইকে দুর্গাপূজায় বাংলায় আসার আমন্ত্রণ জানাই।”
প্রসঙ্গত , রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত শান্তিনিকেতন ২০২৩-এর সেপ্টেম্বর মাসে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকাভুক্ত হয়েছে। এই স্বীকৃতিকে তুলে ধরার জন্য বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ফলক লাগিয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নতুন এই ফলক নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। কারণ যার জন্য এই শান্তিনিকেতন আজ বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে সেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামটিই এই ফলকে স্থান পায়নি।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিনিকেতনকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে উল্লেখ করে তিনটি ফলক স্থাপন করেছে। শ্বেত পাথরের ওই ফলকে বিশ্বভারতীর আচার্য হিসেবে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম রয়েছে। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
শান্তিনিকেতনকে বিশ্ববাসী রবীন্দ্রনাথের নামেই চেনে। ইউনেস্কো বলেছে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত শিল্প ও সংস্কৃতির অনন্য পীঠস্থান শান্তিনিকেতনকে সম্মান করার লক্ষ্যেই এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
এই বিষয়টি নিয়ে আগেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রপৌত্র সুপ্রিয় ঠাকুর বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, “আমি এই মুহূর্তে শান্তিনিকেতনে নেই কিন্তু খবরটা শুনেছি। বর্তমান কর্তৃপক্ষ বিশ্বভারতী থেকে ঠাকুরের নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। এ ধরনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কিছু প্রতিবাদ হওয়া উচিত। যারা এটা করেছে তাদের শিক্ষা দেওয়া উচিত।”
এবার এই বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করে কর্মসূচি ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
❤ Support Us