Advertisement
  • Uncategorized দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • মে ২১, ২০২৪

‘সন্দেশখালি’ প্ল্যান কাজ করেনি, এবার অন্য চক্রান্ত বিজপির: মমতা

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
‘সন্দেশখালি’ প্ল্যান কাজ করেনি, এবার অন্য চক্রান্ত বিজপির: মমতা

সন্দেশখালির নিয়ে শুরুতেই আজ বসিরহাটে জনসভায় সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সন্দেশখালিরর ঘটনার পরে এই প্রথম বসিরহাটে এলেন মমতা। সভা করলেন সন্দেশখালি থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে বসিরহাট। বসিরহাট লোকসভার মধ্যেই পড়ে সন্দেশখালি। বিরোধীরা এতদিন বলে আসছিলেন সন্দেশখালিতে এত কান্ড ঘটে যাচ্ছে তবু মুখ্যমন্ত্রী সেখানে একবারও গেলেন না। সন্দেশখালিতে না গেলেও বসিরহাটে এদিন বক্তব্যের শুরুতেই সন্দেশখালি নিয়ে বলেন, ‘‌ বিজেপি ‘‌প্লান এ’‌ সন্দেশখালি। এই জিনিস গুলো বাইরে না আসলে মানুষ বুঝতেই পারতো আসলে বিজেপি চক্রান্তটা কী করে করেছিল।’‌ বসিরহাট ১ ব্লকের মেরুদন্ডি কর্মতীর্থ মাঠে বিশাল জনসভায় মমতা একথা বলেন। এদিনের মমতার নির্বাচনী জনসভা উপচে পড়েছিল। সন্দেশখালি থেকে প্রচুর মহিলা এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সভায় হাজির ছিলেন। মহিলাদের উপস্থিতি  এতটাই বেশি হয়েছিল যে মুখ্যমন্ত্রীর সভামঞ্চের সামনে ‘‌ডি জোন’‌ নিরাপত্তা বলয় বিশেষ ভাবে তাঁদের বসার ব্যবস্থা করতে হয়। তিনি বলেন বসিরহাটে নুরুল জিতলেই তিনি প্রথম সন্দেশখালি ভিজিট করবেন। এদিনের সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মত্রী সুজিত বসু, প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম, দলের সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান সরোজ ব্যানার্জি, বিধায়ক সুকুমার মাহাতো, সপ্তর্ষি ব্যানার্জি, দেবেশ মন্ডল, প্রাক্ত বিধায়ক এটিএম আবদুল্লা প্রমুখ। শুরুতেই মমতা বলেন, ‘‌আজ বসিরহাট লোকসভা নিয়ে বলতে এসে আমি প্রথমেই বলব সন্দেশখালির মা বোনেদের জন্য আমি নিজে যা ঘটেছে, এবং আমার মা বোনেদের অসম্মান করা হয়েছে আমি তার জন্য আমি আমার হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে আমি মর্মাহত, আমি দুঃখিত। মা বোনেদের নিয়ে অসম্মনের খেলা আর কেউ যেন না খেলে। এই জিনিস  গুলো বাইরে না আসলে মানুষ বুঝতেই পারতো আসলে বিজেপি চক্রান্তটা কী করে  করেছিল। আরও যে কোন জায়গায় করতে পারে। কদিন আগে শুনছি, রাজবংশী দের একটা মন্দিরে আঘাত হয়েছে। পরে জানা গেল যারা বিজেপিতে গেছে তারা এ জিনিস ঘটিয়েছে। তাদের ছবিগুলো আমরা পেয়েছি। মমতা বলেন, আপনাদের বলব ভোটের আগে বিজেপির ‘‌প্লান এ–‌‌ সন্দেশখালি’‌ বাতিল হয়ে গেছে। মা বোনেরাই বাতিল করে  দিয়েছেন।’‌ তিনি বলেন, ‘‌প্লান বি’‌ মন্দির মসজিদ নিয়ে দাঙ্গা লাগানো, হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা লাগানো। সেটা এখনও চলছে। মমতা দলের করমী সমর্থকদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, দাঙ্গা যাতে লাগাতে না পারে, এলাকা যাতে শান্ত থাকে সবার কাছে আবেদন জানিয়ে যাব।
মমতা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহাশয়, আপনি একজনকে ফোন করছেন। সব শিখিয়ে দেওয়া কথা। আর টিভিতে তা দেখানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আপনিক জনের খোঁজ নেন। আপনার আমলে ভারতবর্ষে মেয়েদের ওপর সবচেয়ে বেশি অত্যাচার হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। আমাদের এখানে একটা ঘটনা যদি ঘটে  আমরা ব্যবস্থা নেই। কারণ সে যেই হোক আমরা কাউকে ছেড়ে কথা বলি না।
এদিন মমতা পুরনো স্মৃতি হাতড়ে বলেন, টাকি সরকারি কলেজ খুব ঐতিহ্যমন্ডিত। আমি যখন ছাত্র রাজনীতি করতাম তখন আমি বক্তৃতা দিতে আসতাম। সেসময় ছাত্র ছাত্রীরা আমাকে ছানার মিস্টি খাওয়াত। টাকি বসিরহাটে এই জায়গায় ছানার মিস্টি বিখ্যাত। এই জন্য এখানে আমরা মিস্টি হাব তৈরি করে দিচ্ছি। কারণ এখানে মিস্টি হাব তৈরি হওয়া দরকার।

মমতা বলেন, অনেক প্রত্যন্ত এলাকা সন্দেশখালি। পুরো দ্বীপাঞ্চল।  আর দক্ষিন ২৪ পরগনার জেলাটাও খুব বড়। একটিকে পুরো বনভূমি আর জলা ভূমিতে ভর্তি। সুন্দরবন হল ইউনেস্কোর ওয়ার্লড হেরিটেজ সাইট। আমরা ঠিক করেছি সুন্দরবন নিয়ে একটা মাস্টার প্লান তৈরি করছি। তাতে আপনাদের জেলা নতুন জেলা করছি।  বসিরহাটের এলাকা নিয়ে একটা জেলা হবে। মমতা বলেন, বসিরহাট যতবার বন্যা হয়েছে , দুর্যোগ এসেছে আমি আপনাদের কাছে ছুটে এসেছি। আগামী দিনে এই সব জায়গাগুলোকে পাকাপোক্ত করতে হবে। প্রকৃতি আমাদের হাতে থাকে না। বাংলায় এত ঝড় জল হয় তার কারণ বাংলা নদীমাতৃক দেশ। তার জন্য আমাদের অনেক খরচ হয়। আমরা ১৫ কোটি ম্যানগ্রোভ লাগিয়েছি। যাতে সমূদ্র পাড় শক্তিশালী হয়। তিনি বলেন, ছাত্র ছাত্রীরা ক্লাস টুয়েল্‌ভে স্মার্ট ফোন দেয়া হয়। আগামী বছর এটা এগারো ক্লাস থেকে দেবো। যাতে তারা এগারো , বারো ক্লাসে পড়ার কাজে লাগাতে পারে।  তিনি বলেন, আমরা আসতে আসতে বাড়ি করে দেব। ১০০ দিনের কাজ না হলে গরিব মানুষের সংসসার চলবে কী করে। ১০০ দিনের কাজের টাকা ইতিমধ্যে ৬৯ লক্ষ পরিবারকে  দিয়েছি। কর্মশ্রী প্রকল্পে জব কার্ডে ৫০ দিনর কাজের টাকা আমরা দিয়ে দেব। এর জন্য কেন্দ্রের পায়ে পড়তে হবে না। আগামী দেড় বছরের মধ্যে সবার বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেব।
মমতা বলেন, এই এলাকায় অনেক মাছের ভেড়ি আছে। স্বাধীনতার পর থেকে এই মাছের ভেড়ি নিয়ে কেউ কিছু করেনি। আমরা একটা পলিসি তৈরি করছি। যার ভেড়ি যে চাষ করবে। তা না হলে স্বনির্ভর গোষ্ঠী চাষ করবে। তার জন্য একটা রাজস্ব সরকারকে দিতে হবে। তাতে যার জমি সুরক্ষিত থাকবে।
মমতা বলেন, গরিব লোককে টাকা দেয় না। কেউ খেতে না পেলে টাকা দেয় না। মা বোনেদের হাতে টাকা দেয় না। চক্রান্ত করতে গেলে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে। ভোট কিনতে কোটি কেটি টাকা খরচ করে। আর বড় বড় বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। ওদের গ্যারান্টি নো গ্যারান্টি।
মমতা বলেন , এবার বিজেপি জিতবে না। যেটা আমি আপনি বুঝি না সেটা দেশ বোঝে। দেশ বোঝে বলেই আমাদের কাছে খবর আসছে বিজেপি হারছে। ওরা দেশ থেকে যাচ্ছে। ওদের কাজ হচ্ছে মিথ্যে বলা। সব থেকে বড় ডাকাত বিজেপি দল। একটা গরিব মানুষের কাজ করেনি। দেশটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। এনআরসি করে নাগরিকত্ব কেড়ে নিচ্ছে। তিনি বলেন, এনআরসি নিয়ে অসমে আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। আমি বাংলা এনআরসি করতে দেব না। ক্যা মানুষকে তাড়ানোর একটা ছলনা।
মমতা বলেন,১০ দিন পর আর তোমরা ক্ষমতায় থাকবে না। সারা ভারতে যে ‘‌ইন্ডিয়া’‌ জোট তৈরি করে দিয়েছিলাম। সেই ‘‌ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় নিয়ে এসে  এনআরসি বাতিল করাব, ক্যা বাতিল করাব, ইউমিফর্ম সিভিল কোড বাতিল করাব, ১০০ দিনের কাজ চালু করাব। আমাদের কাজ তো আমরা করব। দিল্লির কাজ দিল্লিকে দিয়ে করাব।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!