- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- এপ্রিল ৪, ২০২৪
সংবিধান মানে না বিজেপি। একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে ওরা, কুচবিহারের সভা থেকে বললেন মমতা

কেন্দ্রের সরকার কোনও আইন মানে না, সংবিধানকে গুরুত্ব দেয় না । এক দেশ এক ভোট করে একদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে বিজেপি, কোচবিহারের মাথাভাঙার সভা থেকে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়েও আবারও সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ।
এদিন মাথাভাঙার সভা থেকে তিনি বলেন, লোকসভা নির্বাচনের জন্য আদর্শ আচরণ বিধি লাগু হয়েছে সারা দেশে, অথচ চার মধ্যেই কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে একের পর এক বিরোধী নেতাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, আয়কর, ইডির হানা চলছে । গেরুয়া দলের হয়েই কেন্দ্রীয় এজেন্সি কাজ করছে, তাহলে নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষতা কোথায় বজায় থাকছে । বিজেপি কেন্দ্র ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলার ওপর অত্যাচার চলছে । সাল থেকে ৬ লক্ষ্ ৫০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে এই রাজ্য থেকে অথচ বাংলার প্রাপ্য একলক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে ।
বৃহস্পতিবারই কোচবিহার লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । তাঁর এই সফর ঘিরেও কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়, তিনি কারোর নাম না করেই বলেন, ‘ আজ এখানে একটা মিটিং করতে আসবে, এসে তারা কুমিরের অশ্রু ঝড়াবেন, অথচ রাজ্যের মানুষদের অধিকারে টাকা দেবেন না । মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাবেন শুধু । তিন বছর ধরে ১০০ দিনের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার । জবকার্ড হোল্ডাররা কাজের টাকা পাচ্ছেন না। আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছেন । অথচ প্রত্যেক সরকারি প্রকল্পেই বাংলা দেশের মধ্যে প্ৰথম ছিল । কদিন আগেই ঝড়ে এখানকার বহু মানুষের বাড়ি ঘরের ক্ষতি হয়েছে । পাকা বাড়ি থাকলে তা হত না । কেন্দ্র সেই টাকা আটকে রেখেছে । এখন বলছে নতুন করে আবেদন করো । আমরা কারো দয়া চাই না, প্রাপ্য টাকা না দিলে আমরাই রাজ্যে ১১ লক্ষ বাড়ি গড়ে দেব। এখন নির্বাচনী বিধি লাঘু আছে, তা বলে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ির টাকা কেন আটকে রাখা হবে, এরসঙ্গে তো কোনো দলের সম্পর্ক নেই, এটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত । এই প্রশ্ন তোলায় বিজেপি আমার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক বিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলছে, অথচ সেই কেন্দ্র সরকরাই ১০০ দিনের মজুরি বাড়ানোর ঘোষণা করছে, তখন কি বিধি ভঙ্গ হচ্ছে না ?’
এদিনে দলীয় প্রচার সভা থেকে তিনি আরও বলেন, ‘রাজ্যের তৃণমূল সরকার কথা দিয়েছিল ১০০ দিনের প্রাপ্য টাকা রাজ্যের খাত থেকেই দেওয়া হবে, এক কোটি মানুষের একাউন্টে সেই টাকা আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি । আমরা লক্ষীরভান্ডারের টাকা বাড়িয়ে দিয়েছি । কেন্দ্র ২০১৫ সালে নোটিফিকেশন জাড়ি করে ব্যক্তিগত চা চাষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে । ১০ লক্ষ মানুষের রুজি বন্ধ হয়ে গেছে, এটা আমরা মানব না । ‘ এরপর নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্ৰশ্ন তোলেন তিনি । সভায় বলেন, রাজ্য সরকারের অফিসারদের অনত্র সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু কেন্দ্রীয় এজেন্সির কতজনকে বদলি করা হয়েছে, পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠলে তাদের তো শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না । নয়া নাগরিকত্ব আইন লাগু করার প্রশ্নে তিনি বলেন, কেন্দ্র এখন বলছে পুরহিতরা লিখে দিলেই তা নাগরিকত্বের অন্যতম প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে, তিনি কী করে জানবেন কার কোথায় জন্ম । এটাও একধরনের মিথ্যা প্রচার । আসলে সিএএ এর লেজ হচ্ছে এনআরসি, যারাই অ্যাপ্লাই করবেন তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়ে আসামের মতো তাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর এ এক কেন্দ্রীয় চক্রান্ত । পুরহিতদের যদি সম্মান দিতেই হতো তাহলে নাগরিক আইন সংক্রান্ত এম্পাওয়ার গ্রুপে কেন জনগণণার অধিকারিকদের রাখা হলো, অথচ সেখানে পুরহিতদের কথা বলা হল না । ‘
এইসভা থেকে তিনি বলেন, হায়দ্রাবাদের মিমের মতো এরাজ্যেও একটা দল বিজেপিকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দিতে চাইছে । কিন্তু বাংলার সম্প্রীতি সবচেয়ে বড়ো শক্তি । কেউ বিভাজন করে বাড়তি সুবিধা আদায় করতে পারবেনা বাংলায় । পাশাপাশি এদিন মঞ্চ থেকেই তিনি বলেন, ভোটের আগে বাড়ি বাড়ি বিএসএফ নিয়ে গিয়ে ভয় দেখালেই, থানায় ডায়রি করবেন, সোজা আমাকে লিখে পাঠাবেন, উত্তরবঙ্গে আমার সেক্রেটেরিয়ট আছে, সেখানে অবিযোগ জানাবেন ।
❤ Support Us