- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- নভেম্বর ১, ২০২৩
গগনচুম্বী দুর্নীতি করে কেউ যেন দুর্নীতি নিয়ে কথা বলতে না আসেন, নবান্ন থেকে বিরোধীদের হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর
জ্যের বকেয়া আদায়ের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা ১৬ নভেম্বর
রাজ্যের ১০০দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে পয়লা নভেম্বরের মধ্যে যদি কেন্দ্র বকেয়া ৭০০০ কোটি টাকা মিটিয়ে না দেয়, তাহলে ভাইফোঁটার পরের দিন ১৬ নভেম্বর, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক থেকে বড় রকমের আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়ে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী এদিন নবান্ন থেকে রেশন দুর্নীতি ইস্যুতে ৩৪ বছরের বাম সরকারকে সমালোচনা করে বলেন, “৩৪ বছরের বাম সরকারকে সরিয়ে আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছি তখন দেখি ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড। আমাদের সেটা ঠিক করতে ৭/৮ বছর সময় লেগেছে। আমরাই ১০০% ডিজিটাল রেশন কার্ড করে কেন্দ্রের প্রশংসা পেয়েছি। এখন সবাই রেশন পাচ্ছে, করোনার সময় কেউ না খেয়ে থাকেননি। আমরা চাষিদের কাছ থেকে চাল কিনে রেশনে বিনা পয়সায় দিই।’ মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ” সিপিএমের লোক সব জায়গায় রয়েছে। আমরা কিছু বলেছি? আমি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না।” শুভেন্দু অধিকারীর নামোল্লেখ না করে মমতা বলেন, “কারও কারও ৬০/৭০/৮০ টা ট্রলার আছে, পেট্রল পাম্প, বাড়ি আছে। হলদিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটির কোন জমি কত দামে বিক্রি হয়েছে কার কাছে জানতে গেছি? দিঘা শঙ্করপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি কোথায় কত হোটেল করার অনুমতি কাকে দিয়েছে জানতে গেছি? বাম আমলে কটা চিট ফান্ড মালিককে ধরেছে? আমি তো ২০১২ তে সারদা কর্তাকে কাশ্মীর থেকে ধরেছি। ৫০০ কোটি টাকার তহবিল বানিয়ে কাউকে কাউকে টাকা ফেরত দেওয়ার শুরুতেই তদন্ত সিবিআই নিয়ে নিল, কেউ তারপর টাকা পেয়েছে? আমি বলেছিলাম বদলা নয়, বদল চাই। তাই আমি কিছু বলিনি কিন্তু লেবু বেশি কচলালে তেঁতো হয়ে যায়। কেঁচো খুঁড়তে গেলে কিন্তু সাপ বেরিয়ে বেরোবে। দিল্লির পার্টির যাঁরা বাংলায় আছেন তাদের কজন সাধু তাঁর লিস্ট বার করুক।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “১০০ দিনের কাজ করে প্রান্তিক মানুষরা ৭০০০ কোটি টাকা পায়, সেই টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না। আবাস যোজনার ১১ লক্ষ বাড়ির তালিকা তৈরি করে টাকা দিচ্ছে না। রাজ্যের কিন্তু এখানে ৪০% টাকা দিতে হয়, আমরা সেই বাড়ি বানিয়ে দিয়েছি। রাস্তাও হয়েছে রাজ্যের উদ্যোগে, একই ভাবে, কেন্দ্র টাকা দেয়নি। জিএসটি নিয়ে যায় রাজ্য থেকে, তার কত টাকা রাজ্যকে দেয়? এখান থেকে ইনকাম ট্যাক্স নিয়ে যায়। রেইড করে টাকা, সোনা তুলে নিয়ে যায়, সিজার লিস্ট বানায় না?” প্রশ্ন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
দুর্গাপুজোর প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “ব্রিটিশ কাউন্সিল তাদের সমীক্ষায় বলেছে এবারের দুর্গাপুজোয় ৭২ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। আমি মনে করি ৮০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। আমি ক্লাবকে টাকা দিয়েছি বলে আমার সমালোচনা হয়েছে। গতবার তো মামলাই করেছিল। আমি বলি ৩০০ কোটি টাকা খরচ করে যদি ৭২ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয় তাতে সমস্যা কোথায়? লেনদেনটা তো রাজ্যেই হয়েছে। সব টাকা রাজ্য না পেলেও রাজ্যের লোকশিল্পী, অন্য পেশার মানুষরাই পেয়েছেন।”
এর পর মমতা বলেন, “যাঁরা গগনচুম্বী দুর্নীতি নিয়ে বসে আছে তাঁরা আবার দুর্নীতির কথা বলছে। আমি কিছু বলি না দেখে। কার কটা ফ্লাট, কে আইকোরের টাকায় বিদেশ গেছে জানি না? এখন ক্ষমতায় আছো, আর তিন মাস বাদে ভোট , আমরা লড়তে প্রস্তুত, বাংলা লড়তে প্রস্তুত, ইন্ডিয়া লড়তে প্রস্তুত। বলছে সব মন্ত্রীকে গ্রেফতার করবে, সরকার ফেলে দেবে। আমরা তিন বার জিতে সরকারে এসেছি। আবারও আসবো। সব ইচ্ছেমতো চলছে, কেউ এসব দেখেও দেখতে পাচ্ছে না। এই তো তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক থেকে মেল এসেছে, সব কেবল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু ওদের দেখতে হবে। এসব ভোটের আগের চক্রান্ত। আমরা লড়তে প্রস্তুত, লড়বো।”
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে আরও ৪/৫টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হবে। এর মধ্যে কিছু সরকার করবে কিছু হবে যৌথ উদ্যোগে। বিদ্যুতের দরকার। এদিকে কেন্দ্র বলছে কয়লা নেই। কয়লা আমদানি করতে বলছে। দেউচাপাচামিতে উৎপাদন হতে দেরি আছে তবে রাজ্যের কয়লা নিয়ে ভাবনা নামেই বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন।
❤ Support Us