মকাইবাড়ি বাগানে চা শ্রমিকের পোশাকে মমতা। মাথায় ঝুড়ি ঝুলিয়ে তুললেন চা পাতা

মানুষের সঙ্গে মেলামেশায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমকক্ষ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বাংলায় এখনও পর্যন্ত কারও নাম করা যায় না। সেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার চা পাতা তুললেন মকাইবাড়ি চা বাগানে। মুখ্যমন্ত্রীকে এদিন চেনা রূপের থেকে সম্পূর্ণ অন্য রূপে দেখা গেল। চা বাগানের শ্রমিকরা ঠিক যেভাবে মাথা ঝুড়ি বেঁধে সেই ঝুড়ি পিঠে ঝুলিয়ে চা তোলেন, সেইভাবেই বাগান থেকে চা পাতা তুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এই সময় সম্পূর্ণ অন্য মুডে দেখা গেল তাঁকে। চা শ্রমিকদের সঙ্গে নাচলেন, গান গাইলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজনীতির লোকেরা বলেন, জনসংযোগই রাজনীতির শেষ কথা। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগই অন্য রাজনৈতিক নেতাদের তুলনায় এক কথায় অসীম। সাধারণ মানুষের সঙ্গে একেবারে মিলে-মিশে তিনি যেভাবে জনসংযোগ করেন , তা কিন্তু রাজ্যের বাকি রাজনীতিকদের মধ্যে খুব একটা দেখা যায় না। তাই বলা যায় জনসংযোগের নিরিখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য রাজনীতিকদের থেকে বেশ কয়েকগুণ এগিয়ে।

পাহাড় হোক বা জঙ্গল, বোলপুর হোক বা কালিম্পং, লণ্ডল কিংবা স্পেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখনই কোথাও যান, সেখানকার মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ ঠিক গড়ে তোলেন বাংলায় মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দলের ট্যাগলাইন “মা-মাটি-মানুষ” মমতা নিজেও জনসংযোগ করতে গিয়ে এই ট্যাগলাইন অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন, বলা যায় একেবারে তৃণমূল স্তরে নেমে তিনি জনসংযোগ করতে পারেন এবং করেন। তিনি যেখানেই যান সেখানকার শিল্প-সংস্কৃতি কিংবা কর্মসংস্কৃতি বা রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেকে একাত্ম করে তোলেন। বৃহস্পতিবার মকাইবাড়ি চা বাগানে সে অবস্থাতেই দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

এদিন চা পাতা তোলার পাশাপাশি বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পাহাড় এবং সমতলের মধ্যে ঐক্যের বাঁধন তৈরি হয়েছে। আমি মনে করি সকলে একসঙ্গে আমরা কাজ করব। আমি কিন্তু মুখে বলি না। আমি রক্তের সম্পর্ক দিয়ে করে দেখাই। আমি খুব খুশি।”

এদিন চা পাতা তোলার পাশাপাশি চায়ের পেয়ালাতেও চুমুকও দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “চা বাগান ভাল থাকুক, চা শ্রমিকরা ভাল থাকুক।” মমতাকে সামনে পেয়ে চা বাগানের শ্রমিকরা তাঁদের নিজস্ব ভাষায় গানও গান শোনান সবুজে ঘেরা চা বাগানের মাঝে দাঁড়িয়ে। আর তাতে তাল মেলাতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। এটাই আসল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকৃতি। তিনি নিজেও বলেন, ঘেরাটোপের মধ্যে থাকার চাইতে খোলামেলা পরিবেশে বরাবরই তিনি স্বচ্ছন্দ।