- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- ডিসেম্বর ৯, ২০২৪
পড়শির অশান্তি ঘিরে সাম্প্রদায়িক উসকানি নয়, বিধানসভায় বললেন মুখ্যমন্ত্রী
ভারত ও বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সংবাদমাধ্যম এবং রাজনৈতিক নেতাদের শান্ত থাকতে এবং উস্কানিমূলক মন্তব্য বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করেছেন। আজ, সোমবার বিধানসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি সকলের কাছে এই আবেদন করেন।
বিধানসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর নৃশংসতা নিয়ে সকলেই উদ্বিগ্ন। হিন্দু, মুসলিম, শিখ বা খ্রিস্টানরা দাঙ্গা শুরু করে না। অসামাজিক উপাদান থেকে দাঙ্গা শুরু হয়। আমাদের এমন কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়, যা বাংলায় খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করে। আমি খুশি যে এখানে হিন্দু এবং মুসলিম সকলেই প্রতিবাদ করছে। বাংলাদেশে নৃশংসতা আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ প্রকৃতিকে তুলে ধরেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সংখ্যালঘু নেতারা সমাবেশ করতে চেয়েছিলেন। আমি তাদের নিষেধ করেছি। অনেকে এটাকে সুযোগ হিসাবে ব্যবহার করবে। তারা আরেকটি দাঙ্গা শুরু করবে। আমরা দাঙ্গা চাই না, আমরা শান্তি চাই। হিন্দু, মুসলিম এবং শিখ ও খ্রিস্টানদের শরীরে একই রক্ত প্রবাহিত।’
মমতা ব্যানার্জি গণমাধ্যমের একটা অংশকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে তাদের কভারেজের ক্ষেত্রে সংযম দেখানোর আবেদন জানিয়েছেন। তিনি সেই সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এটি উত্তরপ্রদেশ বা রাজস্থান নয় যে আমরা আপনাদের নিষিদ্ধ করব বা গ্রেফতার করব। তবে আমি আপনাদের অনুরোধ করছি। অনেক ভুয়ো ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটি রাজনৈতিক দল আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করছে। উভয় সম্প্রদায়কেই এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। যারা এটা নিয়ে রাজনীতি করার কথা ভাবছেন, তাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে এটা আপনার রাজ্য এবং সেখানে আপনার বন্ধুদেরও ক্ষতি করবে।’
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা, বাংলাদেশ থেকে অনেকেই সীমান্ত রাজ্যে ঢুকতে পারে। এই ব্যাপারে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রকের দিকে তাকিয়ে। মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘অনেকেই সীমান্ত পেরিয়ে এই রাজ্যে ঢুকছে। বিষয়টা বিএসএফ দেখছে। আমরা এই বিষয়ে মন্তব্য করব না। যাদের টাকা আছে তারা প্লেনে বা ট্রেনে আসছে, কিন্তু গরীবরা পারে না। আমরা সীমান্ত সামলাতে পারি না। এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখবে।’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন নেতা সম্প্রতি ভারতের নিন্দা করেছেন এবং বলেছেন যে তারা বাংলা, বিহার এবং ওড়িশাকে দাবি করবে। আরেকটি ভাইরাল ভিডিওতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুই প্রবীণ সৈনিককে বলতে শোনা গেছে যে, প্রতিবেশী দেশের সৈন্যরা কয়েক দিনের মধ্যে বাংলা দখল করতে পারে। মমতা ব্যানার্জি এইসব উস্কানিমূলক মন্তব্যেরও জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা বাঙালিদের জাতীয়তা, মমতা ও স্নেহের অনুভূতি দেখাই। আপনি বাংলা, বিহার এবং ওড়িশা দখল করবেন, এবং আমরা ললিপপ পাব? এমনটিও ভাববেন না।’ বাংলার রাজনৈতিক দৃশ্যপটের পটভূমিতে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
❤ Support Us