- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৪
কাজে ফিরুন জুনিয়র চিকিৎসকরা, বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
আর জি করের ঘটনার ঘটার দিন থেকে বারংবার কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিম কোর্ট থেকে সাধারণ মানুষ। এমনকী ঘটনা স্থলের প্রমাণ লোপাটের মতো অভিযোগও উঠেছে কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে।এঅবস্থায় গতকাল রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে জরুরীভিত্তিক প্রশাসনিক বৈঠক ডাকার নির্দেশ দেন। রাজ্যপাল এ কথাও যোগ করেন, পুলিশ কনিশনারের পদত্যাগের দাবি, যা এই গণ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে উঠে আসছে তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, বোস বলেন, সরকারকে সংবিধান ও আইন মেনে কাজ করতে হবে। সরকারকে গণদাবির কথা বিবেচনায় আনতে হবে।
এরপরই নবান্নে আজ দুপুর তিনটে থেকে এই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে বিভিন্ন দফতরের সচিব, মন্ত্রী এবং বিশেষ সচিবসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও পুলিশ কমিশনাররাও অংশ নেন।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরের কাজের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট নেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে বৈঠকে আলোচনা হয়। নির্বাচন মরসুম এবং বর্ষার কারণে বহু প্রকল্পের কাজ ধীরে এগোচ্ছে। সেই প্রকল্পগুলির কাজ দ্রুত শেষ করার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
এর আগে গত শনিবার মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ একটি কড়া বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন। সেখানে সরকারি কর্মীদের গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না বলে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়। তার সঙ্গে বিভিন্ন পরিষেবা প্রদান থেকে শুরু করে পরিকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, এবং পানীয় জলের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে গতি আনার নির্দেশ দেন।
প্রাথমিকভাবে, রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে বর্তমান পুলিশ কমিশনার প্রসঙ্গে ভাবনা-চিন্তা করার কথা বলেন, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, এখন এসব কিছু হবে না। তিনি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বার্তা দেন, “১ মাস হয়ে গেছে, এবার উৎসবে ফিরুন।”
তিনি এই পুজো প্রসঙ্গে বলেন, যে সব ক্লাব টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছে তাদের ক্ষমতা আছে নিজেদের করে নেওয়ার। অন্য বহু পুজো কমিটির আবেদন পড়ে আছে, তাদের দিয়ে দেওয়া হবে সেই টাকা।
পুজো কমিটিগুলো এবং পুলিশের উদ্দেশে বলেন, এমন কোনো থিম যাতে না হয়, যেখানে বিদেশি পর্যটকরা বাংলাকে ভুলভাবে চিনবেন। যেসব পুজো কমিটি সরকারি জনকল্যানমূলক প্রকল্পগুলোকে তুলে ধরবেন, তাদের ৭৫% বিদ্যুৎ ফ্রি করার সাথে সাথে আরো বহু সুযোগসুবিধা দেওয়া হবে।
আর জি করের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ডাক্তারদের সমস্ত দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। আরো বলেন, “আমি মনে করি সব হাসপাতালেই পুলিশের যতটা সম্ভব নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়াও নারায়ণস্বরূপ নিগমকে, আলো ও অন্যান্য কাজের জন্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা দিতে বলেছি। কেউ কেউ বলছেন, ওখানে (আরজি করে) কেন বিশ্রামের ঘর করতে গেল? এর জন্য আমাদের অন্য কোনও অভিপ্রায় ছিল না। যে হেতু মেয়েটিকে বিশ্রাম ঘরের অভাবে সেমিনার হলে থাকতে হল, তাই আমরা অভিপ্রায় ছিল যাতে ডাক্তারদের সেমিনার হলে না থাকতে হয়। তাই একটি বিশ্রাম ঘর ও সংলগ্ন শৌচালয় বানিয়ে দেওয়ার কথা হয়েছিল। কিন্তু কাজটি করতে দেওয়া হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “এটি নিয়ে নানান রকম তথ্য প্রমাণ লোপাটের কথা বলা হচ্ছে। আরে, আমরা প্রমাণ লোপাট করতে যাব কেন? কাকে বাঁচানোর জন্য? কেউ আমাদের বন্ধু নয়, কেউ আমাদের শত্রু নয়। অনেকে অনেক উল্টোপাল্টা কথা বলছেন। কিন্তু জেনে রাখুন, আমার সঙ্গে কারও কোনও যোগ নেই। আমিও কারও সঙ্গে জড়িত নই। আমি যখন কোনও পদে বসি, সেই পদকে সম্মান করতে আমি জানি। অনেক অসম্মান-অপমান করছেন মিথ্যা কথা বলে, কুৎসা রটিয়ে। আর করবেন না। সত্যিটা জেনে নিন।”
পাশাপাশি বেআইনি ভাবে জমি দখল রুখতে কড়া পদক্ষেপের দিয়েছেন তিনি , “এখনও যদি কোথাও জমি জবরদখল চলে, বেআইনি নির্মাণ চলে, পদক্ষেপ করতে হবে। যদি কেউ কোনও অন্যায় করেন, কাউকে যেন রেয়াত না করা হয়।” পূর্ত দফতরকে দ্রুত রাস্তা মেরামতের বার্তা দিয়েছেন তিনি। পুলিশকর্তাদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে কোনও বড় ট্রাক দিয়ে যাতে না যায়, সে দিকে নজর রাখতে হবে।
❤ Support Us