Advertisement
  • দে । শ
  • জুন ৫, ২০২৩

প্রথমে রুজিরা তার পর মলয় ঘটককে সোমবার ইডির নোটিশ, চক্রান্তের সম্ভাবনা দেখছে তৃণমূল

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
প্রথমে রুজিরা তার পর মলয় ঘটককে সোমবার ইডির নোটিশ, চক্রান্তের সম্ভাবনা দেখছে তৃণমূল

কয়লাকাণ্ডে ফের রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে ইডির নোটিশ। মলয় ঘটককে ১৯ জুন দিল্লির ইডির সদর দফতরে হাজিরা দিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে।  এদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজির বন্দ্যোপাধ্যায়কে আগামী ৮ জুন সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কয়লা দুর্নীতিকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ডেকে পাঠায় ইডি। করমণ্ডলের এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা, এতো মানুষের প্রাণহানির পরে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে ও এই বিষয় থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ইডিকে ব্যবহার করছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,”রুজিরার মা অসুস্থ, তাই ওর মেক দেখতে যাচ্ছিল। তাঁকেও আটকে দিচ্ছে। এতো বড় রেল দুর্ঘটনা ঘটল, তার পরেও তাদের এসব বন্ধ হচ্ছে না।”

সোমবার প্রথমে বিমান বন্দরে দুবাই যাওয়ার পথে রুজিরাকে বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন  দফতর আটকে। এর পরেই ইডির তরফে রুজিরাকে ইডির তরফে নোটিস ফর অ্যাপিয়ারেন্স দেওয়া হয়েছে। এর ফলে রুজিরাকে  সশরীরে হাজিরা দিতে হবে  ইডির দফতরে। বিমান বন্দরে রুজিরাকে বিদেশ যেতে না দেওয়ার কারণ তাঁর নাম ইডির লুক আউট সার্কুলার রয়েছে। তাই রুজিরা বন্দ্যোপাধ্য়ায় যখন এদিন সকালে দমদম বিমানবন্দরে পৌঁছন বিদেশ যাত্রার উদ্দেশে, তখন তাঁকে আটকানো হয়। এরপর যখন রুজিরা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট বা অভিবাসন দফতরের কাছে ইমিগ্রেশন ক্লিয়ার করতে যান, তখনই তাঁর পাসপোর্ট ডিটেইলস মিলিয়ে দেখা হয়। সূত্রের খবর, ইডির লুক আউট সার্কুলারের সঙ্গে রুজিরার পাসপোর্ট ডিটেইলস মিলে যাওয়ার পরই অভিবাসন দফতরের তরফে যোগাযোগ করা হয় ইডির সঙ্গে। ইডির কাছে জানতে চাওয়া হয়, এই অবস্থায় তাদের কী করণীয়। ইডির তরফে রুজিরার বিদেশ যাত্রায় অসম্মতির কথা জানিয়ে দেওয়া হয় বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন কর্মীদের। তারপরই সন্তানদের নিয়ে বিদেশ যাত্রায় আটকে দেওয়া  হয় রুজিরা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে। অন্যদিকে ইডির তরফে ৮ জুন রুজিরাকে সশরীরে হাজিরার নোটিস পাঠানো হয় ইডির তরফে।

সোমবারের ঘটনাক্রমে দেখা যাচ্ছে,  প্রথমে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতা বিমানবন্দরে আটকায় অভিবাসন দফতর। তারপর তাঁকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (‌ইডি)‌ তলব করে। আগামী ৮ জুন রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করা হয়েছে সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দফতরে। আবার ঠিক তার পরেই কয়লা পাচার মামলায় রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে হাজিরার নোটিশ পাঠায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। আগামী ১৯ জুন নয়াদিল্লির ইডি সদর দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে আইনমন্ত্রীকে। এই পর পর ইডির তলব নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে শাসক-বিরোধী  তরজা শুরু হয়েছে। হঠাৎ এমন তলবে অভিসন্ধি দেখতে পাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। অন্যদিকে বিরোধীরা বলছেন, কোনও দোষ না করলে ইডির ডাকে হাজিরা দিতে ভয় কিসের?

তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “অভিষেকের নব জোয়ার যাত্রার এই বিরাট সাফল্য বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম  সহ্য করতে পারছে না। তাই নব জোয়ার যাত্রা বানচাল করার চেষ্টায় এসব করা হচ্ছে।” তৃণমূলের অভিযোগ, দেশজুড়ে যখন করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে তখন বিজেপি সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে ইডিকে ব্যবহার করে তৃণমূলকে চাপে রাখতে চাইছে। এই কয়লা পাচার মামলা দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। এর আগে কয়লা পাচার মামলার তদন্তে সিবিআই বিরাট অভিযান চালিয়েছিল। তাঁরা রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের আসানসোলের বাড়ি এবং পৈতৃক বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন। তখন কিন্তু আইনমন্ত্রীর বাড়ি থেকে খালি হাতেই ফিরতে হয় তদন্তকারীদের। তারপরও নানা সময় তলব করা হয়েছিল মলয় ঘটককে। তবে সেই ডাকে সাড়া দেননি মলয় ঘটক। এমনকী রাজভবনের মন্ত্রী কোয়ার্টারের যে খানে মলয় ঘটক থাকেন সেখানেও হানা দিয়েছিল সিবিআই। এবার তাঁকে নয়াদিল্লিতে তলব করল ইডি।

ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, মলয় ঘটককে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আগে সুপ্রিম কোর্ট তদন্তকারী সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছিল, রাজ্যের আইনমন্ত্রীকে তলব করার অন্তত ১৫ দিন আগে নোটিশ পাঠাতে হবে। এখন দেখা যাচ্ছে, সেই মতোই হাতে সময় নিয়েই তাঁকে ডাকা হয়েছে। তবে ইডি’‌র পক্ষ থেকে দু’টি মেল পাঠানোর পর মলয় ঘটক তাঁদের জানান, ১৯ জুন তাঁর হাজিরা দিতে কোনও অসুবিধা নেই। তারপরই মলয় ঘটককে ১৯ জুনই নয়াদিল্লিতে ডেকে পাঠানো হল বলে সূত্রের খবর।

প্রসঙ্গত গত সপ্তাহে ইডি’‌র ডিরেক্টর সঞ্জয় মিশ্র কলকাতায় এসেছেন। কলকাতার ইডি অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। ঠিক তার পরই রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মলয় ঘটককে ইডির এই নোটিশ পাঠানো যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজ্য রাজনৈতিক মহল।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!