- এই মুহূর্তে দে । শ
- ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে ক্রাউডফান্ডিং শুরু করল কংগ্রেস, অনুদানের ন্যূনতম পরিমাণ ১৩৮ টাকা, বিজেপির কটাক্ষ, গান্ধিদের জন্য ঘুরিয়ে অর্থ সংগ্রহ
মহাত্মা গান্ধির পথ অবলম্বন করে কংগ্রেস তাদের দলের ১৩৮ বছর পূর্তিতে দেশের জনসাধারণের কাছ থেকে দলের জন্য অনুদান নেওয়ার কথা চালু করল। কংগ্রেসের এই আর্থিক অনুদান সংগ্রহের কর্মসূচিকে ঘুরিয়ে গান্ধি পরিবারের জন্য টাকা তোলা বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপি বলছে, কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ধীরাজ সাহুর বাড়ি থেকে আয়কর হানায় ৩৫১ কোটি টাকার বেশি উদ্ধার হওয়ার ঘটনা থেকে দেশবাসীর নজর ঘোরাতে কংগ্রেস এই চাতুরির আশ্রয় নিয়েছে।
আপনি যখন ধনী ব্যক্তিদের উপর নির্ভর করেন, তখন আপনাকে তাদের নীতি অনুসরণ করতে হয়। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে আগামী বছরের সাধারণ নির্বাচনের আগে তহবিল সংগ্রহের জন্য দলের “ডোনেট ফর দেশ” প্রচারের সূচনাকালে এই কথা বলেছেন।
মল্লিকার্জুন খাড়গে সোমবার এই অনুষ্ঠানের সূচনাকালে বলেন, “কংগ্রেস এই প্রথম দেশের জন্য মানুষের কাছে অনুদান চাইছে। আপনি যদি শুধুমাত্র ধনী ব্যক্তিদের উপর নির্ভর করে কাজ করেন, তাহলে আপনাকে তাদের নীতি অনুসরণ করতে হবে। মহাত্মা গান্ধিও স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় জনগণের কাছ থেকে অনুদান নিয়েছিলেন।”
কংগ্রেস এক্স-হ্যান্ডেল-এ একটি পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে “দেশের জন্য দান” কর্মসূচি “প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার, বৈষম্য দূর করা এবং বিত্তশালীদের পক্ষপাতী সরকারের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বিরোধী কর্মসূচি হিসাবে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি।”
কংগ্রেসের ১৩৮ বছর পূর্ণ হওয়ায় এই প্রচার শুরু হচ্ছে। কংগ্রেসের ওয়েবসাইটে পেমেন্ট লিঙ্ক দাতাদেরকে ১৩৮ টাকা বা ₹ ১,৩৮০ টাকা বা ১৩,৮০০ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তবে দাতা চাইলে একটি ভিন্ন পরিমাণ আর্থিক দানও কংগ্রেসের তহবিলে করতে পারেন।
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কেসি ভেনুগোপাল এই অনুষ্ঠানের সূচনাপর্বে যোগ দিয়েছিলেন, গতকাল তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছিলেন যে ক্রাউডফান্ডিং উদ্যোগটি ১৯২০-‘২১ সালে চালু হওয়া মহাত্মা গান্ধির ঐতিহাসিক “তিলক স্বরাজ তহবিল” দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল।
সমস্ত রাজ্য কংগ্রেস প্রধানদের প্রচারের বিষয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে বলা হয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর কংগ্রেস দলের প্রতিষ্ঠা দিবস পর্যন্ত এই ক্রাউডফান্ডিং ড্রাইভটি প্রাথমিকভাবে অনলাইনে থাকবে, তার পরে কংগ্রেস স্বেচ্ছাসেবকরা কমপক্ষে ১৩৮ টাকা অনুদানের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছবে।
কংগ্রেস গত লোকসভা নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে কংগ্রেস আউটরিচ-কাম-ক্রাউডফান্ডিং প্রচার শুরু করেছিল, কিন্তু এটি খুব বেশি গতি পায়নি।
কংগ্রেস সূত্র উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে কংগ্রেস নগদ অর্থের সংকটে পড়েছে এবং বিজেপির সচলও ভালো নির্বাচনী সংগঠনকে মোকাবেলায় এই লড়াই করছে। সূত্র বলেছে যে বিজেপি নির্বাচনী বন্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করছে কারণ এই প্রকল্পটি শাসক দলের পক্ষে তৈরি করা হয়েছে।
বিজেপি কংগ্রেসের এই ক্রাউডফান্ডিং প্রচারকে উপহাস করে বলেছে যারা ৬০ বছর ধরে ভারতকে লুট করেছে তারা এখন তহবিল খুঁজতে বেরিয়েছে। বিজেপির কটাক্ষ কংগ্রেস সাংসদ ধীরাজ সাহুর বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ উদ্ধারের বিষয় থেকে মানুষের মনোযোগ সরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে কংগ্রেসের এটা একটা চাল।
বিজেপি নেতা অমিত মালব্য এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “মহাত্মা গান্ধির ঐতিহাসিক তিলক স্বরাজ তহবিল থেকে অনুপ্রাণিত এই ক্রাউডসোর্সিং নিয়ে কংগ্রেসের উচ্চবাচ্যের দ্বারা প্রতারিত হবেন না। তারা মহাত্মা এবং তিলক উভয়কেই কলঙ্কিত করবে। তাদের অতীত ইতিহাস অনুসারে, জনসাধারণের অর্থ ছিনিয়ে নিতে এবং গান্ধিদের সমৃদ্ধ করতে এটি আরেকটি প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই না।”
অমিত মালব্য কটাক্ষ করে বলেছেন, “রাজ বংশের জন্য দান করবেন না। সমস্ত কষ্টার্জিত অর্থ মানুষ যদি দান করে তবে তা গান্ধিদের কাছে যাবে, তারা ভাল জীবন উপভোগ করতে থাকবে। আরও খারাপ, এই পদক্ষেপটি কিছুই হ্রাস করতে পারবে না, তবে এটা অর্থ চাওয়ার আরেকটি নোংরা উপায়।”
ধীরাজ সাহুর পরিবারের মালিকানাধীন ওড়িশা ভিত্তিক ডিস্টিলারি ফার্মের বিরুদ্ধে আয়কর বিভাগের অভিযান এবং সংযুক্ত সংস্থাগুলি থেকে ৩৫১ কোটিরও বেশি নগদ উদ্ধার হয়েছে, এই ঘটনা কংগ্রেসের প্রতি আক্রমণ বানাতে বিজেপির একটি হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। তবে এই ঘটনার পরেই কংগ্রেস তাদের রাজ্যসভার সাংসদের থেকে দলকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে, ধীরাজ সাহু দাবি করেছেন, যে তাঁর ব্যবসার সাথে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।
❤ Support Us