- এই মুহূর্তে দে । শ
- নভেম্বর ১৪, ২০২৩
রাহুল গান্ধির বর্ণ শুমারির দাবির সমালোচনায় অখিলেশ, বললেন, “কংগ্রেস বর্ণ শুমারি করতে দেয়নি, এখন এক্স-রে নয় এমআরআই,সিটি স্ক্যান করার সময়, এক্স-রে করার সময় কংগ্রেস সেটা করেনি”
সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবের সাথে বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটে ফাটল এখন আরও প্রকট হয়ে উঠেছে বর্ণ শুমারির প্রশ্নে। অখিলেশের প্রশ্ন, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন কেন বর্ণ শুমারি করা হয়নি ?
খুব স্বাভাবিক ভাবেই অখিলেশ যাদবের এই মন্তব্য আগামী ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করতে চাওয়া মেগা বিরোধী ইন্ডিয়া মঞ্চের অংশ দুটি দলের মধ্যে পার্থক্য প্রকট করে তুলছে।
পূর্ববর্তী সরকারগুলি তাদের ত্রুটিপূর্ণ নীতির কারণে বর্ণ শুমারির কাজ করেনি বলে মধ্যপ্রদেশের সাতনায় নির্বাচনী সভায় মন্তব্য করেন অখিলেশ যাদব। বর্ণ শুমারির দাবিতে “এক্স-রে”-র সঙ্গে তুলনা টেনে মন্তব্যের জন্য কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধিকে কটাক্ষ করেন অখিলেশ।
প্রসঙ্গত, সোমবার মধ্যপ্রদেশের একটি সমাবেশে রাহুল গান্ধি বর্ণ শুমারির জন্য তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং এই কাজটিকে একটি সামাজিক “এক্স-রে” প্রক্রিয়া বলে অভিহিত করে বলেন, এই বর্ণ শুমারি দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রকৃত বিবরণ দেবে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে অখিলেশ যাদব বলেন, “কংগ্রেসের বর্ণ শুমারি করার দাবি একটি “অলৌকিক ঘটনা”। আখিলিসঃ যাদব বলেন, “রাহুল গান্ধি ও তাঁর দল কংগ্রেস যখন দেশের ক্ষমতায় ছিল তখন কেন বর্ণ শুমারি করেনি? তখন এক্স-রে করলে কাজ হতো, এখন সমস্যা অনেক বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের ৫ % মানুষের হাতে সব সম্পদ রয়েছে। তাই এখন এক্স-রে নয় এমআরআই করার দরকার। এক্স-রে যখন করার দরকার ছিল তখন মুলায়ম সিং যাদব, শরদ যাদব, লালু প্রাসাদ যাদব লোকসভায় বর্ণ শুমারি করার কথা বলেছিল, কংগ্রেস তখন সেটা করেনি। এখন কংগ্রেস বর্ণ শুমারির কথা এই কারণেই বলছে কারণ পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের ভোট, ট্রাডিশনাল ভোট ওদের কাছ থেকে সরে গেছে। ভোট টানতে এসব বলছে। সমাজবাদী পার্টিই পারে এই সমস্যা সমস্যান করতে। স্বাধীনতার পর থেকে কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল, কেন যখন এক্স-রে দরকার তখন তা না করে যখন অসুখ ছড়িয়েছে, যখন এমআরআই, সিটি স্ক্যান করার দরকার তখন এক্স-রে করতে বলছে? একমাত্র সমাজবাদী দল ক্ষমতায় এলেই প্রথমে তারা বর্ণ শুমারি করবে।”
অখিলেশ যাদব ইদানীং কংগ্রেসে উপর তাঁর বন্দুকের নিশানা পরীক্ষা করছেন। তাঁর দাবি, ১৭ নভেম্বর মধ্যপ্রদেশের নির্বাচনের জন্য আসন ভাগাভাগি নিয়ে তাদের সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরে দেশের সবচেয়ে পুরানো দলটি সমাজবাদী দলের সঙ্গে জোট করতে চায়নি।
এর আগে গত সপ্তাহে, অখিলেশ যাদব বলেছিলেন যে কংগ্রেস অতীতে মন্ডল কমিশনের সুপারিশগুলি বাস্তবায়ন করেনি এবং বর্ণ শুমারির বিরোধিতা করেছিল। অন্য একটি উদাহরণে, তিনি মধ্যপ্রদেশে একটি সমাবেশে বলেছিলেন যে কংগ্রেস বা বিজেপি কেউই রাজ্যে ক্ষমতায় থাকাকালীন গরিব ও কৃষকদের জন্য কিছুই করেনি।
জাতীয়স্তরে ইন্ডিয়া মঞ্চ বিজেপির বিরোধিতা করলেও যে রাজ্যে ইন্ডিয়া জোটের শরিকদের নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক লড়াই জারি আছে সেখানে তারা নিজেদের মধ্যে এই রাজনৈতিক কাঁদা ছোড়াছুড়ি যে করবে সেটাই স্বাভাবিক। সে দিক থেকে মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি বিধানসভা নির্বাচনে পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নেমে যে পরস্পরকে গালমন্দ করবে সেটাই স্বাভাবিক। তবে এর ফলে পুরো সুবিধাটুকু যদি বিজেপি নিজেদের দিকে টেনে নেয়, তাহলে ইন্ডিয়া জোটের সার্থকতা থাকবে কি? কারণ ২৯২৩-এর লোকসভা নির্বাচনেও কিন্তু ইন্ডিয়া জোটের শরিকরা কেরল, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ সহ অনেক রাজ্যেই ইন্ডিয়া জোট শরিকদের নিজেদের মধ্যে নির্বাচনী লড়াই হবে। তখন কিন্তু ভোট কাটাকুটিতে বিজেপি সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে যেতে পারে, সেটা বোধহয় ইন্ডিয়া জোটের নেতাদের ভেবে পরবর্তী পদক্ষেপ করা উচিত। না হলে পুরোটাই ভস্মে ঘি ঢালা হয়ে যাবে।
তবে এই লড়াই শুধু বর্ণ শুমারিতেই থিম থাকেনি। সমাজবাদী পার্টির অফিসের বাইরে অখিলেশ যাদবকে দেশের “ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী” হিসেবে দাবি করে একটি পোস্টার লাগানোর পরে সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেসের মধ্যে একটি পোস্টার যুদ্ধও শুরু হয়ে যায়। এর পরেই , লখনউতে কংগ্রেস অফিসের বাইরে রাহুল গান্ধিকে ‘২০২৪-এর প্রধানমন্ত্রী’ হিসাবে তুলে ধরে অনুরূপ একটি পোস্টার লাগানো হয়।
যদিও এই বিবাদের পরেও অখিলেশ যাদব , রাহুল গান্ধি সবাই বলছেন, “আমরা এখনও ইন্ডিয়া মঞ্চে আছি।”
❤ Support Us