- এই মুহূর্তে দে । শ
- নভেম্বর ২৭, ২০২৩
ভদ্র কন্ঠ সংগ্রহে বাধা মানসিক চাপ, হাসপাতালের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্ৰশ্ন । আদালতে নালিশ ইডির
কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহে কাজে ইডি ও আদালতের নির্দেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে এসএসকেএম, আদালতে এই তেমনই নালিশ জানাল ইডি। ইডি কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের কাজ করতে চাইলে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে জানান হয়, মানসিক চাপে রয়েছেন কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। সেই কারণেই তিনি গলার স্বরের নমুনা দিতে পারছেন না। এমনটাই দাবি এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এসএসকেএম-এর এই দাবি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ইডি। তারা জানিয়েছে, অকারণে এই প্রক্রিয়াটিতে দেরি করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নমুনা সংগ্রহ না করার জন্য যে যুক্তিগুলি দিচ্ছেন, তা ভিত্তিহীন। যে মেডিক্যাল বোর্ড ‘কালীঘাটের কাকু’কে দেখছে, তার নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। আদালতে ইডি এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের অভিযোগ, কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর স্বরের নমুনা নিতে বাধা দিয়ে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ আসলে ইডির কাজে এবং বিচারপ্রক্রিয়াতেই বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
এর আগে রাজ্যের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম-এর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে গ্রেফতার হওয়া রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় যখন এই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, সে সময়ে হাসপাতালের সিদ্ধান্ত এবং বক্তব্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। শেষ পর্যন্ত পার্থকে ভুবনেশ্বর এমসে নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়, দেখা যায় এসএসকেএম পার্থকে যতটা অসুস্থ বলছে সেটা বাস্তব নয়। কালীঘাটের কাকুর ক্ষেত্রেও একই সন্দেহ দানা বাঁধছে এসএসকেএম-এর বিরুদ্ধে ইডির।
ইডির তরফে এই মামলায় এসএসকেএমের পরিবর্তে ইএসআই হাসপাতালের পক্ষে সওয়াল করেছিল ইডি। সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত নির্দেশ দেয়, সুজকৃষ্ণের গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব কি না, তা মেডিক্যাল বোর্ড গড়ে খতিয়ে দেখবেন ইএসআই কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের ডিন মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের বিষয়টি তত্ত্বাবধান করবেন।
এ পরেই এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের জানায়, সুজয়কৃষ্ণের উপর মানসিক চাপ রয়েছে। গলার স্বরের নমুনা দিতে গেলে সেই চাপ আরও বৃদ্ধি পাবে। তার ফলে সুজয়কৃষ্ণের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। তাই নমুনা সংগ্রহে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া যাচ্ছে না। মানসিক চাপের সমস্যা মেটাতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গেও পরামর্শ করা হতে পারে। এদিকে এসএসকেএম হাসপাতালের এই যুক্তি মানতে চাইছে না ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা চাইছে এই প্রক্রিয়াটি দ্রুত শেষ করতে। কারণ, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, চলতি বছর অর্থাৎ, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার তদন্ত শেষ করতে হবে ইডিকে। কালীঘাটের কাকুর গলার স্বরের নমুনা না পেলে কী ভাবে সেই তদন্ত ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে, সেই প্রশ্ন উঠছে।
প্রসঙ্গত, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ইডি একটি বিশেষ অডিয়ো রেকর্ডিং পায়। সেই অডিওতে সুজয়ের গলার স্বর শোনা গিয়েছে বলে দাবি করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে সেই কণ্ঠস্বর যে কালীঘাটের কাকুর, সেটা প্রমাণসাপেক্ষ বলে দাবি করেছিল তদন্তকারী সংস্থা। সেই কারণেই সুজয়ের গলার স্বরের সঙ্গে ওই নমুনা মিলিয়ে দেখা হবে বলে ইডি সিদ্ধান্তই নিয়েছিল। সেই কাজটি কিছুতেই করে উঠতে পারছে না ইডি। এই মুহূর্তে নিয়োগ মামলায় ধৃত সুজয় ভদ্র এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও তাঁর কাছ থেকে গলার স্বরের নমুনা কিছুতেই সংগ্রহ করতে পারছে না কেন্দ্রীয় সংস্থা। তদন্তকারী আধিকারিক বার বার হাসপাতালে যাচ্ছেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে তদন্ত এগোচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে এসএসকেএম-এর বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছে ইডি।
❤ Support Us