- দে । শ
- জানুয়ারি ২৫, ২০২৩
গ্রন্থ আর ঐতিহ্যের জয়, মন্দার পরাজয়। বই পড়ার অভ্যাস জাগিয়ে রাখছে নীলকণ্ঠী মিশর
বাড়তি উৎসাহ সরকারের, স্বল্প সুদে পুস্তক কেনার ঋণ সরবরাহ ব্যাঙ্কের

ডেস্ক আরম্ভর একান্ত বিশ্লেষণ মিশরের উচ্চ আর মধ্যবিত্তরা সাধারণত কিস্তি ভিত্তিক ঋণের টাকায় গাড়ি, ওয়াশিং মেশিন, দামি আসবাব কিনতে আর ব্যবহার করতে অভ্যস্ত। সম্প্রতি, ক্রমবর্ধমান মন্দায়ও তাঁরা ঋণ নিয়ে বই কিনছেন। গল্প-উপন্যাস বা অন্যান্য বই পাঠ মিশরীয়দের বহুদিনের অভ্যাস। রুচি সম্পন্ন জাতি। ফরাসিদের সংস্পর্শে আসার পর তাঁদের সাহিত্যপ্রীতি প্রগাঢ়তর হয়ে ওঠে। সৃষ্টিশীল লেখায় ফরাসি প্রভাব জাগ্রত হয়। ব্রিটিশাধীন মিশরে(১৮৮২-১৯৫৬)ইংরাজি সাহিত্যের প্রতি তৈরি হয় নতুন অনুরাগ। ওসমান সাম্রাজ্যের পত্তনও মিশরীয়দের পাঠাভ্যাস বাড়িয়ে তোলে। বহু গুণী ছাত্রকে বিদেশে পড়তে পাঠাতেন খাদিব মুহম্মদ আলি। এরকম বিভিন্ন রাজশক্তি আর বিদেশের সান্নিধ্যে এসে মিশরে যে পাঠরুচি তৈরি হয়েছিল, তা আজও বহাল। টানাপোড়েন, অর্থ সংকট, কর্মহীনতা সত্ত্বেও এ রুচির বদল ঘটেনি। প্রাচীন সভ্যতার অন্যতম গর্ভগৃহ মিশরে পড়াশোনার ঐতিহ্যেও একই স্রোত বইছে। পশ্চিম এশিয়ার অন্যতম আধুনিক দেশ। শিক্ষার হার প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বেশি। দ্বিতীয়ত, মৌলবাদ কিংবা সন্ত্রাসবাদ তাকে কাবু করতে পারেনি। ইখওয়ানুল মুসলিমিনের মতো মৌলবাদী সংগঠনও মিশরবাসীদের আবহমান রুচিবোধকে বিভ্রান্ত করতে পারেনি।
সরকার সতর্ক। জাগ্রত তার ঐতিহ্য প্রীতি। যে কোনো খণ্ডিত চিন্তাকে রুখতে অঙ্গীকারবদ্ধ। এক্ষেত্রে বই পাঠের অভ্যাসকে আরও শানিত, বিস্তৃত করে তুলতে আগ্রহী স্বল্প সুদে পাঠকদের বই কেনার ঋণ দিচ্ছে। এ এক অভূতপূর্ব, মনোহর সুযোগ, এতে বইপাঠের অভ্যাস বেড়েছে। বাড়ছে বইকেনার প্রবণতা। গত বছর কায়রোর আন্তর্জাতিক বইমেলায় অন্তত তিন কোটি পাঠকের সমাগম হয়েছিল। পুস্তক বিক্রিতে রেকর্ড গড়ে নীল নদের তীরবর্তী দেশ। ‘সেফশালা’ প্রকাশনা সংস্থার স্বত্বাধিকারী আলবানি গত বছর বইমেলায় বলেছিলেন, বইও মিশরবাসীদের বিলাসবহুল পণ্যের অন্তর্ভূক্ত। কাগজের দাম চারগুণ বেড়েছে। তবু বইয়ের মুদ্রণ সংস্করণে হ্রাস নেই। পুস্তক পাঠের ঝোঁকও কমেনি। ব্যাঙ্ক ঋণ দিচ্ছে, সুদের হার ১.৫ শতাংশ। জনপ্রিয় লেখক দিনা আফিফি বলেছেন, আমার বইয়ের পৃষ্ঠা কমেছে। কমেনি পাঠক সংখ্যা।
❤ Support Us