- দে । শ
- মে ১, ২০২৪
বৃষ্টি নেই, বাড়ছে জল সঙ্কট। সবজি ফলনে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা কৃষকদের

দীর্ঘদিন বৃষ্টিবিহীন। ফলে ভূগর্ভের জলস্তর নেমে গিয়েছে অনেকটাই। তার উপর তীব্র রোদ-গরমে জমিতেও দেখা দিয়েছে অসংখ্য ফাটল। জলের অভাবে জমিতে থাকা বোরো ধান ও সবজি নষ্ট হতে বসেছে। ফলে প্রভূত ক্ষতির আশঙ্কায় মাথায় হাত পূর্বস্থলীর চাষীদের। কয়েকদিন ধরেই দিনের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গিয়েছে।
পূর্বস্থলী ২নং ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় মূলত সবজির চাষই বেশি হয়। বিভিন্ন মরশুমে সবজি ফলিয়ে তা যেমন খোলা বাজারে বিক্রি হয়, তেমনই ভিন জেলায় রপ্তানি করা হয়। সবজির উপর নির্ভর করেই চলে তাদের জীবন-জীবিকা। কালনা মহকুমার কালনার ২টি ও পূর্বস্থলীর ২টি ব্লকে রয়েছে আনাজের কয়েকটি পাইকারি বাজার। এইসব বাজারগুলি থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সবজি ব্যবসায়ীরা এসে লরি, ম্যাটাডর, পিকআপ ভ্যান বোঝাই করে আনাজপাতি নিয়ে যান। আড়তদাররা বলছেন, আনাজের জোগান তলানিতে। ফলে আড়তে পর্যাপ্ত আনাজ আসছে না।
কালনা ও পূর্বস্থলীর বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, বিস্তীর্ণ জমিতে পটল, ঢ়েঁড়শ, ঝিঙে, করলা, বরবটি, ফুলকপি, বাঁধাকপির মত বিভিন্ন সবজির চাষ করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে জলের অভাবে সবজি গাছগুলি নষ্ট হতে বসেছে। এতে বাজারে আনাজপাতির দরও ঊর্ধ্বমুখী। পূর্বস্থলীর হৃষি এলাকার কৃষক সুফল দাস, বলরাম দাসরা জানান, ‘গত দু-সপ্তাহ ধরে চাষের কাজে তীব্র জলসংকট দেখা দিয়েছে। জলস্তর কমে যাওয়ায় সাবমার্সিবল থেকে ঠিকঠাক জল উঠছে না। পর্যাপ্ত জল না পাওয়ায় গাছও শুকিয়ে যাচ্ছে। তাপপ্রবাহের কারণে গাছের বৃদ্ধি হচ্ছে না। সমস্যা হচ্ছে পরাগমিলনে। ফুল-ফল সব অকালে ঝরে যাচ্ছে। এইভাবে চললে খরচ করে লাগানো তামাম ফসল বরবাদ হয়ে যাবে।
জানা গেল, প্রখর তাপের কারণে সাবমার্সিবলে দিনের বেলায় জল উঠছে না। রাতের দিকে পৃথিবী একটু ঠাণ্ডা হলে জল তুলে জমিতে দিতে হচ্ছে। যেখানে একঘন্টা জল দিলেই হত, এখন সেখানে তিনঘন্টা ধরে জল দিয়েও পার পাওয়া যাচ্ছে না। এইসবের ফলে চাষের খরচও বেড়ে গিয়েছে। কালনা মহকুমার কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষের মতে, ‘এইসময় কালবৈশাখীর ঝড়জল হয়। সেই বৃষ্টি একদিকে যেমন আনাজপাতি চাষের কাজে লাগে, অন্যদিকে তেমনি পৃথিবীটা একটু ঠাণ্ডা হয়। এবারতো কালবৈশাখীও হল না।’ তবে কালবৈশাখী না হওয়ায় স্বস্তি বোরো চাষে। এখন বোরো ধান পাকতে শুরু করেছে। কাটাও শুরু হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় কালবৈশাখী মানে একেবারে পাকা ধানে ‘মই’। তাই বোরোর ফলন এবার ভালই হবে বলে মনে করছেন কৃষকরা।
❤ Support Us