Advertisement
  • দে । শ
  • এপ্রিল ৩, ২০২৪

অসুস্থ বলেই কি ভোটে লড়তে নারাজ শেখ আব্দুল্লাহ? অভিষেকের আগেই ক্ষমতার চূড়ান্ত হস্তান্তর ! চাপে মেহবুবা মুফতি

বাহার উদ্দিন
অসুস্থ বলেই কি ভোটে লড়তে নারাজ শেখ আব্দুল্লাহ? অভিষেকের আগেই ক্ষমতার চূড়ান্ত হস্তান্তর ! চাপে মেহবুবা মুফতি

এবার, লোকসভা ভোটে লড়বেন না ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রশ্নহীন নেতা, সাংসদ আর জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শেখ ফারুক আব্দুল্লাহ। বয়স হয়েছে। শরীরও ঠিক নয়। ফারুকের ছেলে ও অটল মন্ত্রিসভার সদস্য ওমর আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন, প্রবীন নেতা ভোটে লড়াই করার মতো সুস্থ নেই । সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, জম্মু-কাশ্মীরের বারমুলা, শ্রীনগর, উদমপুর, জন্ম কিংবা অনন্ত নাগ এর কোনো আসন থেকেই তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। তাঁর ছেলে ওমর আব্দুল্লাহ লড়বেন।প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, ন্যাশেনাল কনফারেন্সের সক্রিয় প্রধান।

ফারুক আব্দুল্লার রাজনীতির সূচনা ষাটের দশকে।গণভোটের দাবিতে আন্দোলন করতেন, একসময় জে.কে. এল এফ-র আমানউল্লাহ খানের অনুগামী ছিলেন। পরে ফিরে আসনে প্রধান স্রোতের রাজনীতিতে। ইন্দিরা-আব্দুল্লা চুক্তির পর পেছনের রাজনীতি নিয়ে ভাবেননি। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসলেন কাশ্মীর রাজনীতির কিংবদন্তি শেখ আব্দুল্লাহ। জীবদ্দশায় তাঁর উত্তরাধিকারী নির্বাচিত করে যান ফারুককে। শেখ আব্দুল্লার মৃত্যুর পর বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে মুখ্যমন্ত্রীত্ব অর্জন করেন। ইন্দিরা তখন জীবিত। ইন্দিরার বিরুদ্ধে জ্যোতি বসু, ফারুক আব্দুল্লাহ, এনটি রামা রাও, রামকৃষ্ণ হেগড়ে প্রমুখের নেতৃত্বে গড়ে ওঠে বিরোধী জোট। জগমোহনের কৌশলে গদিচ্যুত হন ফারুক। কিন্তু নির্বাচনে ক্ষমতায় ফিরে আসেন, বিপুল জনসমর্থন নিয়ে। ইতিমধ্যে সন্ত্রাসবাদ মাথা চাড়া দেয়। নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লাহ আবার ক্ষমতাচ্যুত হন।ফারুক মোট ৩বার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন, সাংসদ চারবার। কেন্দ্রে জোট রাজনীতির উত্থান, কংগ্লেসের পুনরভ্যুত্থান এবং বিজেপির ক্ষমতা দখলের পরেও কখনো ফারুক তাঁর প্রাসঙ্গিকতা হারাননি । সম্ভবত এই প্ৰথম তাঁকে রাজনীতির বাইরে সম্ভবত অবসর যাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে হবে। এটা কি সম্ভব? যে পরিবারের হাতে ন্যাশেনাল কনফারেন্সের জন্ম, সামন্তবাদী রাজার বিরুদ্ধে গণ আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন যে কাশ্মরি শের তার জনচিত্তজয়ী, বিলাস প্রিয় এবং চির রোমান্টিককে জীবদ্দশায় রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক করে রাখা কি সম্ভব?

উপমহাদেশের দুজন দীর্ঘাঙ্গী আর লোকপ্রিয় নেতাকে বিশ্ব চেনে, দুজনেরই পদবি শেখ, দুজনই মুক্তিকামী জনতার আত্মনিয়ন্ত্রবোধের জ্বলন্ত প্রতীক। একজন শেখ মুজিবর রহমান অন্যজন শেখ মহম্মদ আব্দুল্লাহ।তাঁদের একজনকে বাদ দিয়ে যেমন কাশ্মীরে প্রজাআন্দোলন এবং ভারতভুক্তি অসম্ভব, তেমনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সুদৃঢ় অঙ্গীকার ছাড়া বাংলাদেশের অভ্যুত্থান হত না, অবিভক্ত আর বিভক্ত ভারতের দুই উপখন্ডে কালজয়ী দুই নেতার নির্মাণকে অবশ্যম্ভাবী করে দেয় ইতিহাসের অপরিহার্য নির্দেশ। শেখ আব্দুল্লাহ এরকম নির্দেশেরই অবিভাজ্য বংশধর।পাকিস্তানের দাবির সামনে মাথা নোয়ানি, আবার দিল্লির চাপ আর বৈষম্যনীতিকে বরদাস্ত করেননি। তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী আর চারবারের সাংসদকে বিশ্ব ভুলবে না, কাশ্মীরের যে-কোনো সঙ্কটের সামনে এসে খাড়া হবে তাঁর সেকুলার মুখচ্ছবি। কাশ্মীরের চার আসন নিয়ে জোটের জট এখনো বন্ধনমুক্ত নয়। মেহবুবার পিডিএফের জেদও অব্যাহত। অন্য এক সম্ভাবনাময় শরিকও বলে যাচ্ছে, লাইনে আছি বাবা। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে আর রাজ্যের পূর্ণ মর্যাদা ফিরিয়ে আনার একাগ্র দাবিতে লোকসভা ভোটে সর্বসত্তা প্রয়োগ করবে কাশ্মীরি জনরায়, মর্যাদায় যা হবে, হতে পারে গণভোটের সমতুল্য।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!