- এই মুহূর্তে দে । শ
- ডিসেম্বর ৯, ২০২৪
আদিবাসী কিশোরী খুনের তদন্তে সন্দেশখালিতে ফরেন্সিক দল। এলো জাতীয় মহিলা কমিশন, আদিবাসী সংগঠন।
আদিবাসী কিশোরী খুনের তদন্তে সন্দেশখালিতে এলো ফরেন্সিক দল। রবিবার দুপুরে সন্দেশখালির ন্যাজাট থানার ঘোষপুর গ্রামে গিয়ে ৩ সদস্যের ফরন্সিক দল ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। নিহত কিশোরীর বাড়ির কাছেই যে পুকুর থেকে আদিবাসী কিশোরীর দেহ উদ্ধার হয়েছে , পুলিশ সেই পুকুর পাড় সংলগ্ন এলাকা দড়ি দিয়ে ঘিরে দিয়েছে। কিশোরীর পরিবারের তরফ থেকে খুনের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এলাকার বাসিন্দাদের পাশাপাশি পরিবাবের সদস্যদের দাবি খুনের আগে কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়ে থাকতে পারে । সূত্রের খবর, ময়নাতদন্তের সময় মৃত দেহে যে ভাবে পচন ছিল তাতে প্রাথমিক ভাবে বোঝা সম্ভব নয় ধর্ষণ বা গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল কিনা । বিষয়টি জানার জন্য আরো উন্নত পরীক্ষা নিরিক্ষার প্রয়োজন, সে কারনে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেতে সময় লাগবে। বিষয়টি নিয়ে বসিরহাটের পুলিশ সুপার হোসেন মেহেদি রহমান বলেন, ময়না তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত বলা সম্ভব নয় ধর্ষণ হয়েছে কিনা। তবে পরিবারের তরফ থেকে দায়ের করা খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে । প্রসঙ্গত,সন্দেশখালির ১ নম্বর ব্লকের ন্যাজাট থানার ঘোষপুর এলাকায় ৩ দিন নিখোঁজ থাকার পর হাত, পা বাঁধা, নাকে–মুখে ক্ষতচিহ্ন সহ আদিবাসী কিশোরীর দেহ উদ্ধার হয় পুকুরের জল থেকে। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। মৃত কিশোরীর পরিবারের তরফ থেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয় ন্যাজাট থানায়। তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
রবিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল পুকুর পাড় সংলগ্ন এলাকা দড়ি দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে রায়পুর এলাকায় অনামিকা জানা নামে এক মহিলা দাবি করেন, কিশোরী নিখোঁজ হওয়ার দিন তার কাছে গিয়ে জল চেয়ে খেয়েছিল । তিনি বলেন, ‘গত ৪ ডিসেম্বর বিকেলে মেয়েটি আমার কাছে এসে বলে কাকিমা একটু জল দেবেন । পরে কল থেকে জল খেয়ে একটা বাইকে উঠে চলে যায়।’
এদিন মৃত কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদের পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি বিরসা তিরকির নেতৃত্বে কয়েকজন সদস্য। হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদের সদস্যরা প্রথমে ঘটনাস্থলে যায় । পরে সেখান থেকে তারা মিছিল করে মৃত কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন । এদিন দুপুরে জাতীয় মহিলা কমিশনের ৩ জনের প্রতিনিধিদল সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের ঘোষপুরে মৃতার বাড়িতে যান। সেখানে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন। জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘মেয়েটি নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশকে জানানো হলেও তারা খুঁজে পাননি। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন তথ্য দিলেও তারা খুঁজে পাননি। তাহলে নিশ্চয়ই পুলিশের কোথাও গাফিলতি ছিল । এটা হতে পারে ধর্ষণ, গণধর্ষণ পরে খুন । ঘটনার ৫ দিন কেটে গেল পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।’ রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার । তিনি বলেন, ‘আমি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। আমি একজন মেয়ের মা, আমি চিন্তায় আছি।’ আদিবাসী কিশোরী খুনের ঘটনায় বিজেপি, সিপিএম রাজ্যে মেয়েদের নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে আসরে নেমেছে। বিজেপি সরাসরি এরই মধ্যে গণ ধর্ষণের তত্ত্ব খাড়া করে সরব হয়েছে। অন্যদিকে সিপিএম সোমবার ন্যাজাট থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছে। এদিকে তৃণমূলের কিশোরী খুনের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি করেছে। পাশাপাশি বিজেপি–সিপিএম এই ঘটনাকে যেভাবে রাজনৈতিক রঙ দিচ্ছে তারও নিন্দা করেছে।
❤ Support Us