- এই মুহূর্তে মা | ঠে-ম | য় | দা | নে
- জানুয়ারি ৬, ২০২৪
মারা গেলেন ব্রাজিলের কিংবদন্তী ফুটবলার ও কোচ মারিও জাগালো
অনেক কিংবদন্তী ফুটবলার উঠে এসেছেন ব্রাজিল থেকে। কিন্তু তাঁর মতো কৃতিত্ব আর কেউ অর্জন করতে পারেননি। ফুটবলার ও কোচ হিসেবে ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন। সেই মারিও জাগালো আর নেই। শুক্রবার মারা গেছেন ফুটবলের এই কিংবদন্তী। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। ফুটবল ইতিহাসে তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন।
মারিও জাগালোর অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এক বিবৃতিতে তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হয়। সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অনেক দুঃখের সঙ্গে আমরা চারবার বিশ্বকাপজয়ী মারিও হোর্হে লোবো জাগালোর মৃত্যুর খবর জানাচ্ছি।’ মারিও জাগালোকে ডাকা হত ‘ওল্ড উল্ফ’ নামে। কোচ হিসেবে তার দুর্দান্ত ট্যাকটিকস, টেকনিক্যাল জ্ঞান ও ডাগ আউটে ব্যক্তিত্বময় উপস্থিতির জন্য ফুটবলারদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘দা প্রফেসর’ নামে।
১৯৮৫ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পান মারিও জাগালো। ওই বিশ্বকাপজয়ী দলে পেলেও ছিলেন। ২০২২ সালে পেলের মৃত্যুর পর মারিও জাগালোই ছিলেন ৫৮ বিশ্বকাপজয়ী দলের একমাত্র জীবিত সদস্য। তাঁর মৃত্যর সঙ্গে সঙ্গে ১৯৫৮ বিশ্বকাপ জেতা সব সদস্যই পরলোকে পাড়ি দিলেন। বিশ্বের একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে তিনি চার–চারবার বিশ্বকাপ জিতেছেন।
১৯৫৮, ১৯৬২ সালে মারিও জাগালো ছিলেন বিশ্বকাপ জেতা ব্রাজিল দলের সদস্য। ১৯৭০ সালে পেলে, জর্জিনহো, রিভেলিনো, টোস্টাওদের নিয়ে দেশকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন। আর ১৯৯৪ সালে বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিলের সহকারী কোচ ছিলেন। সেই অর্থে তিনি জয় করেছিলেন ৪ বিশ্বকাপ। বিশ্বে তিনিই প্রথম ব্যক্তি তিনি খেলোয়াড় এবং কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন। পরে তাঁর কৃতিত্ব স্পর্শ করেন জার্মানির ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার এবং ফ্রান্সের দিদিয়ের দেশঁ।
এছাড়াও ১৯৭৪ বিশ্বকাপে জাগালোর কোচিংয়ে চতুর্থ হয় ব্রাজিল। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে দলকে রানার্স করেছিলেন। ২০০২ কোরিয়া–জাপান বিশ্বকাপে পরামর্শদাতা ছিলেন। ২০০৬ বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন ব্রাজিলের টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট। ফুটবল ও কোচিংজীবনে অনেক সম্মান পেয়েছেন জাগালো। ১৯৯২ সালে ফিফার সর্বোচ্চ সম্মান ‘ফিফা অর্ডার অব মেরিট’ সম্মান পান তিনি। ২০১৩ সালে ওয়ার্ল্ড সকার ম্যাগাজিন তাঁকে সর্বকালের নবম সেরা কোচ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
পঞ্চাশের দশকে অপেশাদার ফুটবল থেকে উঠে এসেছিলেন মারিও জাগালো। লেফট উইংয়ে খেলতেন। তবে তাঁর রক্ষণাত্মক দক্ষতাও ছিল নজর কাড়ার মতো। ব্রাজিলের আক্রমণভাগে সৌন্দর্য এনে দিয়এছিলেন জাগালো। বোটাফোগো ও ফ্লামেঙ্গোর হয়ে মোট পাঁচবার রিও ডি জেনিরো স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন। ২৬ বছর বয়সে ১৯৫৮ বিশ্বকাপ শুরুর কিছুদিন আগে জাতীয় দলে অভিষেক হয়। তবে এরপর থেকেই জাতীয় দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছিলেন। দেশের হয়ে খেলেছেন ৩৭টি ম্যাচ।
১৯৫৮ বিশ্বকাপে সুইডেনের বিরুদ্ধে ফাইনাল ৫–২ ব্যবধানে জিতেছিল ব্রাজিল। ফাইনালে ব্রাজিলের হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন জাগালো। পেলেকেও একটি গোলও করিয়েছিলেন। ১৯৬২ বিশ্বকাপে সবকটা ম্যাচে পুরো সময়ই মাঠে ছিলেন। ১৯৬৫ সালে অবসর নেওয়ার পর বোটাফোগো কোচের দায়িত্ব নেন। বোটাফোগোকে দুবার স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপ জেতান। ১৯৭০ বিশ্বকাপ জয়ের পর ফ্লামেঙ্গো ও ফ্লুমিনিন্সে কোচ হিসেবে একাধিক শিরোপা জেতেন জাগালো।
❤ Support Us