Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • মে ৩০, ২০২৪

‘দেশকে স্বৈরাচারের হাত থেকে বাঁচানোর এটাই শেষ সুযোগ’ …শেষ দফা নির্বাচনের আগে দেশবাসীকে ‘খোলা চিঠি’ মনমোহন এর

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
‘দেশকে স্বৈরাচারের হাত থেকে বাঁচানোর এটাই শেষ সুযোগ’ …শেষ দফা নির্বাচনের আগে দেশবাসীকে ‘খোলা চিঠি’ মনমোহন এর

আগামী শনিবার শেষ দফা লোকসভা নির্বাচন। তার আগে পাঞ্জাবের সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি লিখলেন,ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং।  চিঠির মূল বার্তা কিছুটা এমন,  ‘ভারতের গণতন্ত্র এবং সংবিধানকে স্বৈরাচারী শাসনের হাত থেকে রক্ষা করার  এটাই শেষ সুযোগ।’
তিন পাতার লম্বা চিঠিতে  দু দশকের ভারতীয় অর্থনীতির দুরাবস্থা নিয়ে  পঞ্চনদীর তীরের বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে ৯১ বছরের প্রবীণ রাজনীতিবিদ বার্তা দিয়েছেন ।
১৯৯১ সালে , ভারতের অর্থনৈতিক উদারীকরণের যুগে তিনি সামলেছেন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব। পাশাপাশি সামলেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের কাজও। এই চিঠিতে ইউপিএ সরকারের সাথে এন ডি এ সরকারের অর্থনৈতিক শাসন কাঠামোর তুলনাও করেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তন অর্থনীতিবিদ।
তাঁর মতে,’ডিমনিটাইজেশন, ত্রুটিপূর্ণ জি এস টি ব্যবস্থা, এবং কোভিড মহামারীর সময়ের অব্যবস্থা ভারতীয় অর্থনীতিতে এক করুন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। জিডিপি বৃদ্ধির হাত  ছয় শতাংশে নেমে এসেছে।’ বিজেপি সরকারের অধীনে বার্ষিক জিডিপি বৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, যেখানে ইউপিএ সরকারের সময় তা ছিল প্রায় ৮ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুসারে ইউপিএ সরকারের অধীনে জিডিপি বৃদ্ধি ২০১০ সালে সর্বোচ্চ ৮.৫ শতাংশে পৌঁছেছিল এবং ২০০৮সালে (বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের সময়) সর্বনিম্ন ৩.১ শতাংশে  ছুঁয়েছিল। ১০ বছরে এটি সর্বোচ্চ  ৯.১ শতাংশে পৌঁছেছে (২০২১সালে) এবং মহামারী চলাকালীন ৫.৮এ নেমে এসেছে ।’

ঘটনাচক্রে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যঙ্ক তাদের ২০২৪/২০২৫ অর্থবর্ষের  বার্ষিক জি ডি পি বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়ার এক ঘণ্টার পরেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর এই চিঠিটি কংগ্রেস তাদের এক্স হ্যান্ডেলে প্রকাশ করেছে।

চিঠিতে কৃষক আন্দোলন নিয়েও মুখ খুলেছেন মনমোহন সিং । তাঁর মতে, চার বছর কেটে গেলেও কেন্দ্র এখনও কৃষক আন্দোলন নিয়ে যথেষ্ট চাপে আছে। এই চাপের কাছে  নতি স্বীকার করেই তিনটি বিতর্কিত কৃষি বিল তাঁরা ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পাঞ্জাবীদের অপমান করতে  ‘তিনি’ কোনও প্রচেষ্টাই বাকি রাখেননি।

ড. মনমোহন সিং লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি ২০২২ সালের মধ্যে আমাদের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ।(কিন্তু) গত ১০ বছরে  তিনি সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ । কৃষকদের জাতীয় গড় মাসিক আয় প্রতিদিন মাত্র ২৭ টাকা, যেখানে কৃষক প্রতি গড় ঋণ ২৭০০০ টাকা।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বিতর্কিত ‘অগ্নিপথ’  নিয়োগ প্রকল্পেরও সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন,  ‘কংগ্রেস নির্বাচনে জিতলে এই প্রকল্প বাতিল করা হবে।’

তাঁর মতে, ‘দেশের প্রতি শ্রদ্ধা, সাহসিকতা, সেবা মনোভাব এসব মাত্র চার বছরের জন্য থাকে। এতে তাদের ভণ্ড দেশাত্মবোধ সহজেই বোধগম্য হয়।’ নিজ রাজ্যের বাসিন্দাদের তিনি জেগে উঠতে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের পাঞ্জাবিদের কাছে ত্যাগের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই আমাদের দিকে উড়ে আসা কোনও কটূক্তি বরদাস্ত করব না।’

চিঠির একদম শেষে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মতে, প্রধানমন্ত্রী পদের অবমাননা করছেন নরেন্দ্র মোদি । তাঁর পূর্বসূরিরা কখনই কোনও বিশেষ জাতির প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেননি এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তৃতাও করেননি।
এবিষয়ে দেশবাসীকে সচেতন করে তিনি লেখেন, ‘সব কিছু দেখে একটি ব্যাপার বুঝছি যে, অমানবিকতা চরমে গিয়ে পৌঁছেছে। আমাদের প্রিয় দেশকে এই ভয়াবহ স্বৈরাচারের হাত থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব নিতে হবে আমাদের দেশবাসীকে। ‘
আগামী ১জুন শেষ দফা লোকসভা নির্বাচন। তারপর ৪ তারিখে ফল ঘোষণা। তার মধ্যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর এই চিঠি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে কি বার্তা দেয়, তাঁর নিজের দলকে কতটা উজ্জীবিত করবে তা বলবে সময় এবং পরিস্থিতি।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!