Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • মে ২২, ২০২৩

মণিপুরে আবার অশান্তি। ইম্ফলের বাজারে আগুন, নতুন করে জারি কার্ফু। মোতায়েন সেনা

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
মণিপুরে আবার অশান্তি। ইম্ফলের বাজারে আগুন, নতুন করে জারি কার্ফু। মোতায়েন সেনা

সামান্য কিছু দিনের ভঙ্গুর শান্তির পর সোমবার ফের নতুন করে সংঘর্ষ ও অশান্তি শুরু হল মণিপুরে। পুলিশ সূত্রে খবর, রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলের নিউ চেকন এলাকার মেইতি এবং কুকি সম্প্রদায়ের একটি অংশ ফের সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। যার ফলে সেনা তলব ও নতুন করে কার্ফু জারি করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রথমে হাতাহাতি শুরু হয়। তার পরেই লাঠি এবং অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে শুরু হয় উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ, যা বড় আকার নেয় । এই সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন। বাজারের বেশ কিছু দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।

সম্প্রতি মণিপুর হাই কোর্ট মেইতিদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিজেপি শাসিত মণিপুর রাজ্যে। নতুন করে সংঘর্ষের ফলে ইম্ফলে কার্ফু আগে যেমন  বিকাল ৪টা ইম্ফলে শিথিল করা হয়েছিল, তা আবার দুপুর ১ টা থেকে পুনরায়  জারি করা হয়েছে।

একাধিক ইস্যুতে মণিপুর প্রায় এক মাস ধরে জাতিগত সংঘর্ষের সাক্ষী রয়েছে। চলতি মাসের ৩ তারিখ থেকে  জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’  বা এটিএসইউএম-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত শুরু হয় মণিপুরে। আদি বাসিন্দা মেইতি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি,জো, সহ কয়েকটি জনজাতি সম্প্রদায়ের সংঘর্ষের জেরে মণিপুরে সরকারি হিসাবে ৭০ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত হয়েছেন বহু মানুষ। গোষ্ঠীহিংসার জেরে ঘরছাড়া হয়েছেন হাজারে হাজারে মানুষ!

সংরক্ষিত বনভূমি থেকে কুকি গ্রামবাসীদের উচ্ছেদ নিয়ে উত্তেজনার আগে সংঘর্ষ হয়েছিল, যার ফলে ছোট ছোট আন্দোলনের ধারাবাহাইক ভাবে চলছিল। যদিও মেইতিরা  রাজ্যের জনসংখ্যার ৬৪ শতাংশ নিয়ে গঠিত, তারা রাজ্যের ১০ শতাংশ এলাকা দখল করে আছে কারণ যারা উপজাতি নয় তাদের বিজ্ঞাপিত পাহাড়ী এলাকায় জমি কেনার অনুমতি নেই। এসটি ক্যাটাগরিতে তাদের অন্তর্ভুক্তি তাদের পাহাড়ে জমি কিনতে করতে সক্ষম করবে, এটাই আদিবাসীদের অসন্তোষের মূল কারণ।

কুকিরা অভিযোগ করেছে যে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্যের বিজেপি সরকার পাহাড়ে তাদের বাড়িঘর ও বনাঞ্চল থেকে সরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে কাজ শুরু করেছে। কুকিদের অভিযোগ, সরকারের মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা আদতে তাদের উচ্ছেদর জন্যই  করা হয়েছিল, এটা তাদের উচ্ছেদের  নামে একটি চালাকি ছাড়া কিছুই নয়।

আবার সংঘর্ষ শুরুর ফলে সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনী রাজ্যে শিবির স্থাপন করেছে, নিয়মিত টহল দিচ্ছে  এবং সাধারণ মানুষদের  সাহায্য করছে। প্রসঙ্গত এর আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সহিংসতার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন এবং উভয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সাথে দেখা করেছেন। তার পরেও এই সংঘর্ষ নতুন করে শুরু হওয়ায় আবার অশান্তির কালো মেঘ ঘনাচ্ছে মণিপুরের আকাশে।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!