Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • মে ১৩, ২০২৪

কারো পুঁজি ৫০০০ কোটি, করোর সম্বল ৭ টাকা । ভোট ময়দানে সম্পদের আজব খতিয়ান

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
কারো পুঁজি ৫০০০ কোটি, করোর সম্বল ৭ টাকা । ভোট ময়দানে সম্পদের আজব খতিয়ান

দেশ জুড়ে চলছে সাত দফা নির্বাচনের চতুর্থ ফেজ। ৫৪৩জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে ধাপে ধাপে। নির্বাচন লড়তে গেলে নিয়ম মাফিক সম্পত্তির হলফনামা প্রকাশ করতে হয় নির্বাচন কমিশনের কাছে। সব কটি দফার মধ্যে  এখনও পর্যন্ত চতুর্থ দফায় ধনীতম অন্ধ্রের গুন্টুরের লোকসভা প্রার্থী চিকিৎসক ডঃ চন্দ্রশেখর পেম্মাসানি , যার মোট সম্পত্তির পরিমাণ শুনলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। তেলুগু দেশম পার্টির-র টিকিটে গুণ্টুর লোকসভা কেন্দ্রের এই প্রার্থীর  মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৫ হাজার ৭০৫ কোটি। এর মধ্যে অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ৫ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকার। দেশি এবং বিদেশি মিলিয়ে শতাধিক সংস্থায় বিনিয়োগ রয়েছে তাঁর। চন্দ্রশেখর পেম্মাসানির মোট ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৩৮ কোটি টাকা। বলা বাহুল্য, এটি দেশের সমস্ত প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। প্রসঙ্গত, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণে এখন পর্যন্ত তিনিই দেশের ধনীতম প্রার্থী।

দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তেলেঙ্গানা ছেভাল্লা কেন্দ্রের প্রার্থী কোন্ডা বিশ্বেশ্বর রেড্ডি। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৪ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা। অনাবাসী এই শিল্পপতি লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র ধনীতম প্রার্থী। এছাড়াও তৃতীয় দফা নির্বাচনে ছিলেন পল্লবী ডেম্পো। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ  ১৪০০ কোটি টাকা। ৪৯ বছর বয়সি এই প্রার্থীর স্বামী ডেম্পো গ্রুপের চেয়ারম্যান শ্রীনিবাস ডেম্পো। তাঁদের দুজনের  মিলিত সম্পত্তির পরিমাণ ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। পল্লবীই হলেন গোয়া থেকে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রথম কোনও মহিলা প্রার্থী।

তালিকায় তৃতীয় মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের পুত্র নকুল নাথ, যার মোট সম্পদের পরিমাণ ৭১৭ কোটি টাকা।চতুর্থ স্থানে রয়েছেন হাত শিবিরের ভেঙ্কটরমন গৌড়া, যার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৬২২ কোটি। পঞ্চম স্থানে রয়েছেন, কেন্দ্রীয় অসামরিক উড়ান পরিবহন মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। মোট ৪২৪ কোটির সম্পত্তি রয়েছে তাঁর। ষষ্ঠ  কংগ্রেসের ছত্রপতি সাহু শাহজি, যার সম্পত্তির পরিমাণ ৩৪২ কোটি । তিনি কোলাহপুরের প্রার্থী। নির্বাচন কমিশনের থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দেশে কোটিপতি প্রার্থী সংখ্যা কিছু কম নয়।

এবার আসবো , দেশের দরিদ্রতম প্রার্থীর সম্পত্তির পরিমানের খতিয়ানে, যা শুনলে অবিশ্বাস্য লাগতে পারে। মাত্র সাত টাকা সম্বল করে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন নির্দল প্রার্থী কাত্তা আনন্দবাবু।  এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দেশের দরিদ্রতম ব্যক্তি অন্ধ্রপ্রদেশের বাপাতলার  রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর এই সমাজকর্মীই। এছাড়াও আছেন মহারাষ্ট্রের মাভালের ভিমসেনার প্রার্থী সন্তোষ উবাল, যার সম্পত্তি নগদ ৮৩ টাকা। মহারাষ্ট্রের আরেকজন প্রার্থী বিকাশ রোহিদাস অবশ্য সামান্য এগিয়ে সন্তোষের থেকে। নির্দল এই প্রার্থীর সম্পত্তির পরিমাণ ৯০ টাকা। এর আগের দফায় মাত্র ১০০ টাকা সম্পত্তি নিয়ে দরিদ্রতম ছিলেন মহারাষ্ট্রের ইরফান আবু তালিব চাঁদ। দ্বিতীয় দফায় ছিলেন মহারাষ্ট্রের নান্দের কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী লক্ষ্ণণ নাগরাও পাটিল। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ মাত্র ৫০০ টাকা।প্রথম দফায় দরিদ্রতম প্রার্থী তামিলনাড়ুর থুথুকোডি  ছিএলন পোনরাজ কে। এই নির্দল প্রার্থীর সম্পত্তির পরিমাণ মোটে ৩২০ টাকা।

নির্বাচন আসবে – নির্বাচন যাবে। লোকসভা, বিধানসভা, পুরসভা, পঞ্চায়েত। দাখিল হবে প্রার্থীদের সম্পদের খতিয়ান। তা একসময় প্রকাশ্যেও আসবে।প্রতি পাঁচ বছরের ব্যবধানে সে সম্পদের পরিমাণ ক্রমশই বাড়বে। সাধারণ মানুষ শুনবে, তারপর সময়ের তাগিদে তা ভুলেও যাবে। ভারতের মত উন্নয়নশীল দেশে রাজনৈতিক নেতাদের দেওয়া অসাম্য, গরিবী হটানোর নীতি— চিরকাল থেকে যাবে সেই বিশ বাঁও জলে।  বেকারত্ব, দারিদ্র্য মাথাচাড়া দেবে। আর ‘শত শত সাম্রাজ্যের ভগ্নশেষ পরে’ ‘ওরা’ কাজ করে যাবে মাঠে ঘাটে, খেতে খামারে। আর ক্ষমতার লোভে লোভী একদল মানুষ গাইবে- ‘আমি ভোটের লাগিয়া ভিখারি সাজিনু/ ফিরিনু গো দ্বারে দ্বারে/ (আমি ভিখারি, না শিকারি গো)/ মোরে ‘হাঁ’ ছাড়া কেউ ‘না’ বলিল না/ ক্যানভাস করিনু দ্বারে।’ (দাদাঠাকুর)


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!