- এই মুহূর্তে দে । শ
- ডিসেম্বর ১২, ২০২৩
আইনি খরচ যোগতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়কেই, রাজ্যপালের নয়া নির্দেশে উষ্মা শিক্ষামন্ত্রীর
আবার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শিক্ষাক্ষেত্রে বেআইনি হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠল। সম্প্রতি রাজভবনের সচিবালয়ের একটি নির্দেশ নিয়েই এই অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। গত ১৭ অক্টোবর রাজভবনের সচিবালয় থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। দাবি, ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টে এসএলপি বা স্পেশাল লিভ পিটিশন, মামলা লড়ার কাজে নিযুক্ত আইনজীবীদের খরচ বহন করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকেই। আর সেই খরচ সংক্রান্ত কাজের ক্ষেত্রে তদারক হবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ! রাজভবনের সচিবালয়ের এই নির্দেশ প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে।
রাজ্যের প্রাক্তন উপাচার্যদের সংগঠন এডুকেশনিস্টস ফোরাম-এর বক্তব্য, কোন আইনি অধিকারের বলে রাজ্যপাল তথা আচার্য এমন নির্দেশ জারি করতে পারেন ! ওই সংগঠনের সদস্যদের আরও অভিযোগ, রাজভবনের এই নির্দেশিকা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের অবমাননা শুধু নয়, বেআইনি এবং অনৈতিক।
রাজ্য-রাজ্যপাল তিক্ত সম্পর্কের আবহেই এই বিষয়টি সামনে এসেছে, আর এই নির্দেশিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বিকাশ ভবনে ব্রাত্য বসু এই প্রসঙ্গে বলেন, “মাছের তেলে মাছ ভাজা ! সুপ্রিম কোর্টের গোচরে আনব বিষয়টি। রাজ্য সরকারের প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা তুলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা লড়ার নির্দেশ আচার্য দিতে পারেন কিনা, সেটা নিয়ে আমরা যথাযোগ্য পদক্ষেপ করব। উনি তো বলবেন ভালো হচ্ছে, উনি সুপ্রিম কোর্টকে অগ্রাহ্য করতে চাইছেন হয়ত!”
এদিকে ছাত্র, শিক্ষকদের একটা অংশ রাজভবনের এই নির্দেশিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এবিষয়ে সরব হয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র। তাঁর দাবি, ”কোনও অধিকার নেই রাজভবনের তরফে এমন বিজ্ঞপ্তি জারির। রাজ্যের টাকা রাজ্যের বিরুদ্ধে মামলা লড়তে খরচ করবে, এটা কীভাবে সম্ভব আমাদের জানা নেই। এই আচার্য তাঁর পছন্দের উপাচার্যদের মাধ্যমে এমন কাজ করছেন। এক কথায় আইনজীবীদের খরচ নেওয়া মানে তোলা তোলার শামিল বলে মনে হয়। এর তীব্র প্রতিবাদ করছি।” যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জুটা-র সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের দাবি, ”ইতিমধ্য়েই যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয় থেকে ৬০ হাজার টাকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি কাজ। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য এমন করতে পারেন না। এর কোনও নথি নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে মামলা না হলে কীসের জন্য টাকা দেবে! চরম বেআইনি কাজ এটি। এই কাজের বিরুদ্ধে আমরা চিঠি দিচ্ছি উপাচার্যকে। আচার্যের দপ্তরের নির্দেশও বেআইনি।”
গত ১৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যদের উদ্দেশে রাজ্যপালের বিশেষ সচিবের স্বাক্ষর করা একটি চিঠিতে জানানো হয়েছে, আচার্য অর্থাৎ রাজ্যপালের নির্দেশ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টে মামলা লড়ায় নিযুক্ত আইনজীবীদের পারিশ্রমিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ভাগাভাগি করে নিতে হবে এবং তাদের মধ্যে সমন্বয়ের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে আর্থিক লেনদেনের ভার নিতে হবে।
❤ Support Us